মুনিরুল তারেক, বাংলাদেশঃ
করোনা পরিস্থিতির মাঝে পদত্যাগ করলেন বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) প্রফেসর মো. আবুল কালাম আজাদ। করোনাকালে চিকিৎসক-নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য মানহীন পিপিই-মাস্ক-গ্লাভস্ ক্রয়, অনুমোদনহীন হাসপাতালের সঙ্গে করোনা চিকিৎসার চুক্তিসহ বহু অনিয়মে অভিযুক্ত তিনি।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে গিয়ে সচিবের কাছে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘তিনি পদত্যাগ করেছেন। তবে আমাকে তিনি জানাননি। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গিয়ে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন’।
তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- নমুনা পরীক্ষা না করেই ভুয়া করোনা রিপোর্ট দেয়া জেকেজি হেলথকেয়ারের বিরুদ্ধে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ জেনেও ব্যবস্থা নেননি এবং অনুমোদনহীন রিজেন্ট হাসপাতালকে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে অধিদফতর থেকে অনুমোদন পাইয়ে দিয়েছেন। এসব অভিযোগের নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তাকে দু’দফা কারণ দর্শানোর নোটিশও পাঠিয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ঢাকায় পশুর হাটে ৭০ লাখ জাল টাকা, টার্গেট ছিল আরও ১ কোটি ছড়ানোর
জানা গেছে, বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক নিজে উদ্যোগী হয়ে আবুল কালাম আজাদকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেন। কিন্তু চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়ার পরই তার বিরুদ্ধে চরম দায়িত্বহীনতা, কর্তব্যে শৈথিল্য, পক্ষপাত এবং নানা দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। আর করোনা পরিস্থিতি শুরু হলে তার ব্যর্থতা প্রতিটি পদক্ষেপে প্রকাশ পায়। শুরু থেকেই মন্ত্রী এবং ডিজি’র পদত্যাগের দাবি উঠেছিল সর্বমহল থেকেই। এমনকি জাতীয় সংসদ অধিবেশনেও তাদের নিয়ে সমালোচনা হয়।
আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান ভারত সরকারের
উল্লেখ্য, অধ্যাপক ডা. দ্বীন মোহাম্মদ নুরুল হক অবসরে যাওয়ার পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পান অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পাওয়ার পর তার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে তাকে আবার দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়ার পরই তার বিরুদ্ধে চরম দায়িত্ব ও কর্তব্যে অবহেলা শৈথিল্য এবং পক্ষপাত এবং নানা রকম দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপিত হয়।
বিশেষ করে করোনা সংক্রমণের শুরুর পর থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সীমাহীন দায়িত্বহীনতা স্পষ্ট হতে থাকে। সারাদেশে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়তে থাকে। এর মধ্যেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পরিবর্তনের প্রক্রিয়া গ্রহণ করেছিল। কিন্তু একের পর এক ব্যর্থতা-দুর্নীতির অভিযোগ এবং নানা রকম অপকর্মের দায়ভার মাথায় নিয়ে শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584