রাজনৈতিক হিংসায় উত্তপ্ত দিনহাটা, বিজেপির পথ অবরোধ ভেটাগুড়িতে

0
33

মনিরুল হক, কোচবিহারঃ

কোচবিহারের এক সামাজিক অবস্থা ক্রমশ উত্তপ্ত হচ্ছে। রাজনৈতিক হিংসায় ছড়িয়ে পড়েছে গোটা জেলা জুড়ে। পুজার মুখে ভয়ের পরিবেশের ব্যবসা লাটে উঠেছে। এরফলে চিন্তার ভাঁজ ব্যবসায়ীদের মধ্যে। সম্প্রতি সিতাই, শিতলখুচি, মাথাভাঙ্গা ও কোচবিহার ১নং ব্লকে বোমা গুলির লড়াই প্রতিদিনের ঘটনা হয়েছে। এবারে নতুন করে সেই তালিকায় সংযোজিত হল দিনহাটা মহকুমার ভেটাগুড়ি এলাকায়।

কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ নিশীথ প্রামানিকের খাস তালুতে ফের বিজেপি–তৃনমূল সংঘাতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পরিবেশ। পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় কালে তৃনমূলের যুব মাদারের লড়াই শুরু হয়েছে এই ভেটাগুটি থেকেই। নিশীথবাবু রাম-নাম জপতেই এ লড়াইয়ের অভিমুখের পরিবর্তন হয়েছে। লোকসভা নির্বাচনের সময় থেকে ভেটাগুড়ি এলাকা শান্ত থাকলেও এখন তা অগ্নিগর্ভ। অভিযোগ পালটা অভিযোগ দুই দলের মধ্যে রয়েছে।

Heated Dinhata in political violence
অবরোধ। নিজস্ব চিত্র

বৃহস্পতিবার ভেটাগুড়ি এলাকায় শান্তির দাবিতে পথ অবরোধ করে বিজেপি কর্মীরা। এরফলে কোচবিহার-দিনহাটা সড়ক পথে যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যহত হয়। বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, শান্ত ভেটাগুড়িকে অশান্ত করার পরিকল্পনা করেছে তৃনমূল। বেছে বেছে বিজেপি কর্মীদের আক্রমণ করাই শুধু নয়, গুলি বোমা দিয়ে পরিবেশকে অশান্ত করার প্রচেষ্টা তাঁদের।

বিজেপি ২৩ নং মণ্ডল সভাপতি গোপাল চন্দ্র অভিযোগ করে বলেন, “ভেটাগুড়ি এলাকার দলীয় নেতৃত্বেদের লক্ষ করে গতকাল রাতে পরিকল্পিত ভাবে আক্রমন চালায় তৃনমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। ওই ঘটনায় আমাদের কয়েকজন কর্মী আহত হয়। তাঁদের মধ্যে একজনকে কোচবিহার সরকারী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পাশাপাশি বেশ কিছু বিজেপি কর্মীদের বাড়ি ঘোর ভাঙচুর করা হয়।”

যদিও তৃনমূলের ব্লক স্তরের নেতা নুর আলম হোসেন বলেন, “ওই ঘটনার সাথে তৃনমূলের কোন যোগ নেই। বিজেপির আদি গোষ্ঠী দিলীপ ঘোষ ও নব্য গোষ্ঠী মুকুল রায়ের গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাত বাঁধে। এটা ওদের দলের অভ্যন্তরীন বিষয়।”
প্রসঙ্গত,লোকসভা নির্বাচনে জয়ে পর থেকেই অনেকটাই ভেটাগুড়ি এলাকায় কোন ঠাসা হয়ে পরেছে তৃনমূল। কিন্তু দিদিকে বলো কর্মসূচী মাধ্যেমে জনসংযোগ বাড়িয়ে নিজেদের হারান জমি পুনরুদ্ধারে নামে তৃনমূল। এই লক্ষে শুক্রবার বিকেলে একটি মিছিল সংগঠিত হওয়ার কথা। এই কর্মসূচীকে নিয়েই বেশ কিছুদিন থেকে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভেটাগুড়ি। আক্রমন পালটা আক্রমনও চলে। তৃনমূলের অভিযোগ, তাঁদের এই কর্মসূচীকে ভেস্তে দিতে বিজেপি মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু যত বাঁধাই আসুক তা উপেক্ষা করে ওই মিছিল হবেই বলে জানান স্থানীয় নেতৃত্বরা।

Heated Dinhata in political violence
নিজস্ব চিত্র

ঘটনা যাই হোক গোটা বিষয় নিয়ে চিন্তিত ব্যবসায়ী মহল। গত কয়েকদিন থেকে ঠিক ঠাক মত দোকান পাঠ খুলতে পারছে না ব্যবসায়ীরা। এদিন ভেটাগুড়ি বাজার ছিল সুনসান। সকাল থেকে বন্ধ থাকে দোকান পাঠ। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। তারা জানান, পূজার মুখে যদি এভাবে ব্যবসা বন্ধ রাখতে হয় তাহলে তাঁদের চলবে কিভাবে তা নিয়েও প্রশ্ন করেন তারা।
এবিষয়ে দিনহাটা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক রানা গোস্বামী বলেন, জেলাগত ভাবে আমরা পুলিশ সুপার ও জেলা শাসককে জানিয়ে ছিলাম পরবর্তীতে বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহন করে প্রশাসন। বিভিন্ন এলাকায় হয় শান্তি বৈঠক। কিন্তু পূজার মুখে রাজনৈতিক হিংসা ব্যবসার ক্ষতির অন্যতম কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদিকে রাজনৈতিক হিংসা নিয়ে উদ্বেগ প্রশাসনেরও। এদিনই উত্তরবঙ্গের পুলিশের উচ্চ আধিকারিকদের নিয়ে একটি জরুরী বৈঠক আহব্বান করা হয়েছে বলে জানা যায়।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here