বর্ধমানের দেবী কঙ্কালেশ্বরীর ইতিহাস

0
280

সুদীপ পাল,বর্ধমানঃ

দামোদরের প্রচন্ড বন্যার পর দেখা গেল একখণ্ড পাথর।সেই পাথরের ওপরেই ধোপারা দিনের পর দিন কাপড় কাচতেন।১৩২০ বঙ্গাব্দ থেকে প্রায় দু’বছর ধোপারা এই কাজের জন্যই সেই পাথরটিকে ব্যবহার করতেন।বর্ধমানের মহারাজ বিজয়চাঁদ বিষয়টি শুনলেন।মন্দির প্রাঙ্গনের জন্য তিনি এক একর চুয়ান্ন শতক জমিদান করলেন।অবশেষে সেই পাথরের ঠাঁই হলো বর্ধমানের রাজ পরিবারে।নাম হলো কঙ্কালেশ্বরী মূর্তি।

পাথরের তৈরি দেবী বিগ্রহ। নিজস্ব চিত্র

মূর্তিটি একটি বড় কালো রঙের ব্যাসাল্ট পাথরের ওপরে খোদিত।মনে করা হয় এই ধরণের মূর্তি আর্য্য পূর্ব যুগে নির্মিত হত। মূর্তিটিতে মানুষের কঙ্কাল, স্নায়ুতন্ত্র ইত্যাদি পরিষ্কার ভাবে খোদিত তাই নাম কঙ্কালেশ্বরী।তবে মূর্তি প্রতিষ্ঠা নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে, বাংলার ১৩২৩ সালে দামোদর নদীর তীরে পাওয়া যায় কঙ্কালেশ্বরী কালীর মূর্তি।কমলানন্দ পরিব্রাজক নামে এক সাধক স্বপ্নাদেশ পান। তিনিই দেবীমূর্তি সংগ্রহ করে কাঞ্চননগরের এই মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করেন।দেবীমূর্তি খোদিত হয়েছে গর্ভমন্দিরের আসনবেদিতে তিন ফুট চওড়া ও পাঁচ ফুট উচ্চতার একটি অখন্ড পাথরে।দেবীর বাঁদিকে চারটি ও ডানদিকে চারটি করে মোট আটটি হাত। প্রতিটি হাতে রয়েছে একটি অস্ত্র। উপর থেকে বাঁদিকের হাতে জয় পতাকা, একটি হাত চিবুকে দিয়ে বিষণ্ণতায় ভরা মুখমন্ডল,বাদ্য ঘন্টা ও চন্ডের কাটা মুন্ডের কেশ ধরা। উপর থেকে ডানদিকের হাতে যথাক্রমে রয়েছে অসি, খর্পর, ত্রিশূল ও খড়্গ। বিগ্রহের মাথার পেছনে চাঁদোয়ার মতো দুটি হাতির মাথা। কন্ঠে রুদ্রাক্ষ ও গলায় মুন্ডমালা। দেবী ত্রিনয়না ,মাথায় মুকুট,কানে সাপের ফণারকৃতি কুন্ডল। দেবীদেহ কঙ্কালময়। সেই দেহতে প্রস্ফুটিত হয়েছে অসংখ্য শিরা উপশিরা।

নাট মন্দির। নিজস্ব চিত্র

বর্ধমানের বাসিন্দা বাসুদেব মন্ডল বলেন, ‘আগে প্রতি অমাবস্যায় ছাগল বলি হত তবে এখন শুধুই পুজো হয়।বার্ষিক কালী পুজোতে ব্যাপক ভিড় করেন মানুষ।তবে দেবীর মাহাত্ম্য এবং প্রাচীনত্ব বিদ্যমান থাকায় সারাবছরই মন্দির জুড়ে মানুষের ভিড় চোখে পড়ে।’

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here