সুদীপ পাল,বর্ধমানঃ
২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি অবসর নিয়েছেন,তবুও স্কুল আসা বন্ধ হয়নি তাঁর।প্রতিদিনই নিয়ম করে এসে পারিশ্রমিক ছাড়া নবম দশম শ্রেণীর জীবন বিজ্ঞান পড়ান। শুধু তাই নয় এই যে নবম ও দশম শ্রেণীকে তিনি পড়াচ্ছেন সেই নবম দশম শ্রেণী চালু করার জন্য দীর্ঘদিন লড়াই করেছিলেন আউসগ্রামের প্রিয় দিদিমণি কল্পনা সালুই। জানা যায় গ্রামের স্কুলে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ানো হতো তারপর লেখাপড়ার জন্য অন্য স্কুলে ভর্তি হতে হতো। বিষয়টি অত্যন্ত ভাবিয়েছিল তাঁকে।তাই তিনি গ্রামের আশুতোষ বিদ্যালয়ের নবম এবং দশম শ্রেণী চালু করার জন্য উঠে পড়ে লাগলেন।বিদ্যালয়ের প্রায় ৩৫০ জন পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের প্রথম প্রজন্মের রয়েছে অনেকই।টিউশন পড়ার মতো আর্থিক সামর্থ্য তাদের নেই।সেখানেও এগিয়ে এলেন তিনি। বিদ্যালয় শুরুর নির্দিষ্ট সময়ের আগে কখনও বা স্কুল শেষ এরপর তিনি পড়ানো শুরু করেন।বিনা পারিশ্রমিকে টিউশন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পরেশনাথ মন্ডল বলেন,’অবসরের পরেও প্রায় সাড়ে চার বছর নিয়মিত স্কুলে ক্লাস নিচ্ছেন তিনি।
তাঁর জন্য বিজ্ঞানের শিক্ষকের অভাব পড়ুয়ারা কখনো বুঝতে পারেনি।কল্পনা দেবী নিয়মিত ছাত্র-ছাত্রীদের বাড়ি গিয়ে অভিভাবকদের বোঝান পড়াশুনো করার গুরুত্ব।নবম শ্রেণীর জন্য যখন পড়ানো শুরু করেছিলেন তিনি, পাশে পেয়েছিলেন আর এক শিক্ষককে।তাঁর নাম দেউলেশ্বর সামন্ত। স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি তন্ময় চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘কল্পনা দেবীর অবদানের কথা ভেবেই শিক্ষক দিবসের দিন অর্থাৎ আজ তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে।’ যদিও কল্পনা দেবীর বক্তব্য,’শিক্ষক না থাকলে পড়ুয়ারা সমস্যায় পড়বে।তাই ওদের কথা ভেবে এবং ওদের সঙ্গে সময় কাটাতে আমারও ভালো লাগে তাই নিয়মিত স্কুলে আসি।’ আজ শিক্ষক দিবসের দিন কল্পনা দেবীকে স্কুল থেকে সংবর্ধনা দিয়ে তাঁর এই লড়াইকে কুর্নিশ জানাচ্ছে সবাই।
আরও পড়ুনঃ বেতনের দাবীতে অনশনের পথে শালবনি ফডার শ্রমিকরা
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584