উজ্জ্বল দত্ত, কলকাতাঃ
সোমবার মিছিল শেষে রাসবিহারি মোড়ের জনসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জ জানালেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী।
প্রসঙ্গত, সেদিনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামের সভায় বলেছেন, তিনি নন্দীগ্রাম থেকে বিধানসভা ভোটে লড়তে চান। এর পাল্টা হিসেবে বলেছেন, নন্দীগ্রামে মমতা বা তৃণমূলের যে কোনও প্রার্থীকে হাফ লাখ ভোটে পরাস্ত করতে না পারলে রাজনীতি ছেড়ে দেব।
এখানেই শেষ নয়, শুভেন্দু অধিকারী আরও বলেছেন,’ তৃণমূলকে গণতান্ত্রিক ভাবে ছুঁড়ে ফেলে দেব। উনি নন্দীগ্রামের জন্য কী করেছেন। ভোট এলেই উনি নন্দীগ্রামে যান। আজ সাতটি জেলা থেকে গাড়ি করে হায়দরাবাদ একটি দলের মত ত্রিশ হাজার লোক এনেছেন। আজ বিজেপির মিছিলের ওপর হামলা করেছে পিসি ভাইপোর প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি। ওরা মিছিলের ওপর পাথর ছুঁড়েছে।
তোলাবাজ ভাইপো আর পিসি পুলিশকে ক্রীতদাস বানিয়ে রেখেছে। এরপর গড়িয়াহাট থেকে হাজরার মিছিলে আর পুলিশের অনুমতি নেব না। খালি মিছিলের সময় আর তারিখ লিখে একটা চিঠি থানায় ফেলে আসব। আজ হাজরা মোড়ে সব মাইক পুলিশ খুলে নিয়েছে। শেষে বলে দিচ্ছি আপনাদের সঙ্গে নিয়ে সোনার বাংলা গড়ব। সেদিন আর বেশি দেরি নেই।”
দক্ষিণ কলকাতায় দিলীপ ঘোষ ও শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপির মিছিলে তুমুল উত্তেজনা। মিছিল লক্ষ্য করে ছোঁড়া হয় ইঁট। আক্রমণকারীদের দিকে পালটা এগিয়ে যান বিজেপি সমর্থকরাও। ফলে রীতিমতো রণক্ষেত্রের আকার ধারণ করে টালিগঞ্জ ফাঁড়ি এলাকা।
আরও পড়ুনঃ পদ্ম ফুটিয়ে ঘুমাতে যাওয়ার পাল্টা ‘নন্দীগ্রামে আমি দাঁড়াব-ই’
সোমবার টালিগঞ্জ থেকে রাসবিহারীর দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল গেরুয়া শিবিরের মিছিল। বিজেপির দাবি, সেখানে উপস্থিত তৃণমূল সমর্থকরা মিছিলের উদ্দেশে প্রথমে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করতে থাকেন। তারপর দেশপ্রাণ শাশমল রোডের কাছে হঠাৎই রাস্তার উলটো দিক থেকে মিছিল লক্ষ্য করে ইট ছোঁড়া হয়। যাঁরা ইট ছুঁড়ছিলেন, প্রত্যেকের হাতেই ছিল তৃণমূলের পতাকা। এবং ‘বিজেপি হটাও’ স্লোগানও ওঠে।
বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হলে সেই সময় অনেকেই মিছিল ছেড়ে বেরিয়ে যান। ইঁট বৃষ্টির ঘটনায় মেজাজ হারিয়ে মিছিল থেকে বেরিয়ে আক্রমণকারীদের দিকে এগিয়ে যান বিজেপি সমর্থকরাও। এরপরই ওই এলাকায় থাকা বেশ কিছু বাইক ভাঙচুর করা হয় বলে খবর। দেশপ্রাণ শাশমল রোড যখন রীতিমতো রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছে তখন আশপাশে দেখা যায়নি কোনও পুলিশকর্মীকে। কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।
আরও পড়ুনঃ ঘরের বৌ সামলাতে পারে না, লড়বে কী, সৌমিত্রকে কটাক্ষ যুব তৃণমূল নেতার
ঠিক এই কারণেই মিছিলের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে গেরুয়া শিবির। বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, আগে থেকে অনুমতি নেওয়ার পরও মিছিলের উপর আক্রমণ করে তা ভণ্ডুল করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করেছে তৃণমূল। পুলিশ নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ বলেও দাবি তাঁদের। ইট বৃষ্টিতে আহত হয়েছেন বিজেপি এক সমর্থকও।
উল্লেখ্য, এর আগে পুরুলিয়া এবং নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর মিছিলেও একইরকম ভাবে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছিল। তখনও পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। গণতান্ত্রিক দেশে এভাবে বিরোধীদের কণ্ঠ রোধ করার বারবার চেষ্টা করছে শাসকদল। কিন্তু এসব করে সাধারণ মানুষকে আর ভুল বোঝাতে পারবে না তৃণমূল বলেই হুঙ্কার পদ্মশিবিরের।
যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। তিনি বলেন, “দলের ছেলেরা পতাকা লাগাচ্ছিল। উলটো দিক থেকেই ইট ছুঁড়ে আসে। মসজিদের এসি ভেঙেছে ওরা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ভেঙেছে। অশান্তির বাতাবরণ তৈরি করতে চাইছে বিজেপি।”
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584