সৌমেন মিশ্র,পশ্চিম মেদিনীপুরঃ
পরীক্ষার খাতায় কড়া প্রশ্ন কিংবা জটিল অঙ্কের প্যাচে পড়লেই সেবারটায় উতরে দেওয়ার জন্য ডাক পড়ে বাগদেবী মা সরস্বতীর।ইচ্ছে ছিল সরস্বতী ঠাকুর নিজে হাতে বানিয়ে মায়ের আরাধনায় ব্রতী হওয়া।ঠাকুর বানিয়ে তার পুজো করা তো আর চাট্টিখানি কথা নয়।
কিন্তু বিদ্যালয়ের সহায়তায় তিন বছর আগেই সে ইচ্ছে পূরন করেছে দাসপুর সাগরপুরের বিকাশ মাইতি। বিকাশ এবার সাগরপুর স্যার আশুতোষ উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক দেবে।চার বছর ধরে সে ওই বিদ্যালয়ে সরস্বতী ঠাকুর নিজের হাতেই বানাচ্ছে।বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মানস মান্না প্রথম বছর একটু ইতঃস্তত করলেও বিকাশের আর্জি ফেলতে পারেননি,বিকাশকে বিদ্যালয়ের প্রতিমা বানাবার অনুমতি দেন।প্রথম বছরেই অষ্টম শ্রেনীতে পাঠরত বিকাশের নিজের হাতে গড়া সরস্বতী নজর কাড়ে সারা ঘাটাল মহকুমার।মানসবাবু বলেন,ভাবতে পারিনি বিকাশ এত নিপুনভাবে দক্ষ মৃৎশিল্পীর ন্যায় ঠাকুর বানাবে।তারপর থেকেই ওই বিদ্যালয়ে সরস্বতী পুজোয় ঠাকুর বানায় বিকাশ।
এবারও বিকাশ সাগরপুর স্যার আশুতোষ উচ্চবিদ্যালয়ের জন্য নিজের হাতে সরস্বতী ঠাকুর বানিয়েছে।বিকাশ বলে,আমি পড়ার ফাঁকে একটু একটু করে এবারেও আমার বিদ্যালয়ের সরস্বতী ঠাকুর বানিয়েছি।এবার মাধ্যমিক পরীক্ষা থাকায় প্রথমে স্যারেরা মানা করেছিলেন,কিন্তু যখন তাঁরা দেখলেন পড়াটা ঠিক রেখেই আমি ঠাকুরের কাজ করছি পরে আর মানা করেননি।
বিকাশ বলে,আমার হাতের তৈরি মা সরস্বতী যখন ব্রাহ্মণের মন্ত্রোচ্চারণে প্রাণ পায়,সহপাঠী বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের অঞ্জলিতে মায়ের আঁচল যখন ফুলে ফুলে ভোরে ওঠে,বিদ্যালয় প্রাঙ্গন যখন ধূপ ধূনার গন্ধে মাতোয়ারা হয়ে যায় আমি প্রতিবছর বিদ্যালয়ের এক প্রান্তে দাঁড়িতে তা উপভোগ করি।
আরও পড়ুনঃ বৃষ্টির ভ্রূকুটি উপেক্ষা করেই বাগদেবীর আরাধানা
এবারও বিকাশের হাতের তৈরি ঠাকুর পুজিত হবে বিদ্যালয়ে।বিকাশ সেই দাঁড়িয়ে থাকবে বিদ্যালয়ের কোনো এক প্রান্তে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584