অত্যাচারিত নারীর আর্তনাদ দেশের সাথে উত্তরদিনাজপুরেও একইভাবে মূর্ছিত

0
127

পিয়া গুপ্তা ,উত্তর দিনাজপুরঃ

মানুষ আদিম সভ্যতা পেরিয়ে এখন ডিজিটাল দুনিয়ায়, আরও আধুনিক হওয়ার পথে পথগামী। সময়ের সঙ্গে সভ্যতা, ভদ্রতা, শিক্ষার বিকাশ হয়েছে।তবুও মহিলারা আজ পিছিয়ে ।আজ ও তারা পিছিয়ে সমাজের কাছে।আজ ও প্রতিনিয়ত ভারতে প্রতিদিন কোন না কোন মহিলা অত্যাচারিত ,লাঞ্ছিত ,বঞ্চনা স্বীকার ।পরিসংখ্যান দেখলে জানা যাবে ভারতে সবচেয়ে বেশী নারী নির্যাতনের ঘটনা পশ্চিমবঙ্গে।
এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী ভারতে,নারী নির্যাতনের দিক থেকে শীর্ষে আছে পশ্চিমবঙ্গ। আজ ও প্রতিদিন কোন না কোন মহিলা তার স্কুল ,কলেজ,কিংবা অফিস কিংবা বাড়ি সব জায়গায় আজ সে শারীরিক বা মানসিক নির্যাতনের
স্বীকার ।প্রত্যন্ত গ্রামে গঞ্জে নারীদের নির্যাতনের মাত্রা অনেক বেশী।সেখানে কোন মহিলা গ্রামগঞ্জের গণ্ডি পেরিয়ে অপরাধের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে না পারায় ।তাদের উপর অপরাধের মাত্রাও বেড়ে যায় ।
অপরাধের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করার ক্ষেত্রে, কিন্তু প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে বা গ্রাম-গঞ্জের মহিলাদের সেই ক্ষমতা থাকে না যে থানায় গিয়ে তাঁরা অভিযোগ দায়ের করতে পারবে” তাই ক্রমশ অত্যাচারে তাদের জীবন অবশেষে জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যায় ।

উত্তর দিনাজপুরের গ্রাম গঞ্জের আজ বহু মহিলা কখনো মানসিক নির্যাতনের শিকার কখনো বা শারীরিক নির্যাতনের স্বীকার।স্বামীর হাতে তো বটেই এমনকি পরিবারের বিভিন্ন সদস্যদের হাতে নারীকে অত্যাচারিত হতে হয়। নির্যাতন সইতে না পেরে অনেক নারীকে মৃত্যুর কোলেও ঢলে পড়তে হয।কখনো বা মেয়ে পক্ষ যৌতুক না দিতে পারলে বিয়ের পরে সেই নারীর জীবন নেমে আসে চরম দুর্দশা।
অনেক সময় যৌতুক দিতে অপারগতায় বহু নারীকে অকালে জীবন দিতে হয়েছে। যদিও যৌতুক নিরোধক অনেক আইন পাস হয়েছে তবুও অপরাধীরা ভয না পেয়ে ক্রমশই মহিলাদের উপর অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে।
সপ্তাহ খানেক আগেই উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের
বরুয়া গ্রামপঞ্চায়েতের মন্ডলপাড়া এলাকায়
পণের বাকি টাকা না পাওয়ায় স্ত্রীকে মোটরবাইক থেকে ফেলে দিয়ে শরীরের উপর দিয়ে মোটরবাইক চালিয়ে নিয়ে এবং ব্যাপক মারধর করে খুন করার অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। মৃতার নাম সারজানা খাতুন (২২)।  এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। মৃতার পরিবারের পক্ষ থেকে স্বামী সামিদুর রহমান শ্বশুর শ্বাশুড়ি ও দেওরের বিরুদ্ধে শারীরিক অত্যাচার ও খুন করার লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ মৃতদেহ ময়নাতদন্তের পাশাপাশি ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।তবে অভিযুক্তরা এখনো পলাতক তারা এখনো ধরা পড়েনি ।
এভাবে প্রতিবছরই আমাদের দেশে যৌতুকের কারণে শত শত নারী খুন হচ্ছে, হাজার হাজার নারী নির্যাতিত হচ্ছে।
এছাড়া পথে ঘাটে মহিলারা প্রতিদিন
যৌন হেনস্থা প্রকাশ্যে যৌন হয়রানির স্বীকার হচ্ছে ।কখনো কখনো অবৈধ সম্পর্কের জেরে খুন হতে হচ্ছে মহিলাদের।
পাঁচ দিন আগে উত্তর দিনাজপুর জেলার ইটাহারের বোরট গ্রামে
এক মহিলার  সাথে সম্পর্কের জেরে স্ত্রীকে বিষ খাইয়ে খুনের অভিযোগ উঠছিল স্বামীর বিরুদ্ধে। পুলিশসূত্রে জানা গিয়েছে মৃত ওই গৃহবধুর নাম সাথী মন্ডল। এই ঘটনায় সাথীর পরিবারের পক্ষ থেকে মৃতা গৃহবধূ সাথীর স্বামী বাপ্পা মন্ডলের নামে রায়গঞ্জ থানায়  লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এই ঘটনার ক্ষেত্রেও অভিযুক্ত এখনো পলাতক।যা মহিলারা এতটাই অসহায় যে
পুরুষের খারাপ আহ্বানে সাড়া না দিলেই তারা এ্যাসিড নিক্ষেপের স্বীকার হয়ে উঠছে। এতে করে একটি মেয়ের দৈহিক বিকৃতি সৃষ্টি হয়, যা তাকে সমাজে অপাংক্তেয় করে ফেলে।ঘটনা সোমবারের এক মহিলাকে এ্যাসিড মারার দায়ে এক বাক্তিকে দশ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ৪০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিলেন উত্তর দিনাজপুর  ইসলামপুর ফাস্ট ট্রাক ফাস্ট কোর্টের বিচারক হেমন্ত কুমার সিনহা।সেই সঙ্গে অত্যাচারি মহিলাকে ৪০ হাজারের টাকার মধ্যে ৩৬ হাজার টাকা দেবার ও নির্দেশ দিয়েছেন।আদালত সূত্রে জানাগেছে,২০১৩ সালে ৩০ ডিসেম্বর উত্তর দিনাজপুর জেলার করনদিঘি থানার বিকোর গ্রামের বাসিন্দা জয়মালা কে সরকারকে কুপ্রস্তাব দিয়েছিলেন ওই গ্রামের বাসিন্দা মিলন সরকার।মিলনবাবুর প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় জয়মালার বাড়িতে এসে এ্যাসিড ছুঁড়ে মারে।এ্যাসিডে জয়মালাদেবীর মুখ এবং বুক পুড়ে যায়।করনদিঘি থানায় লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ মিলনবাবুকে গ্রেপ্তার করেছিল।২০১৩ সালের এই ঘটনায় অভিযুক্তরা আজ পাঁচ বছর পর শাস্তি পেল।
এই ভাবেই কোথাও নারীদের চুপিসারে ধর্ষণ করা হচ্ছে কোথাও দলগত ভাবে তাকে গণধর্ষণ করা হচ্ছে কোথাও ধর্ষণ করে তাকে খুন করে ফেলা হচ্ছে এই ভাবেই তাদের জীবন গুলো আজ পুরুষদের লোভ লালসার স্বীকার ।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here