পুজোর আগে চাহিদা বাড়ছে টেরাকোটার গহনার

0
456

পিয়া গুপ্ত, উত্তর দিনাজপুরঃ

আর মাত্র কয়েক দিনের অপেক্ষা তারপরেই বাঙালি মেতে উঠবে দুর্গোৎসবের আনন্দে।বাঙ্গালীদের এ আনন্দ পরিপূর্ণ করতে ইতিমধ্যে সাজো সাজো রব কুমোরটুলিতে।শুধু প্রতিমা তৈরি নয় প্রতিমা তৈরির পাশাপাশি কুমোরটুলিতে জোরকদমে চলছে অলংকার তৈরীর কাজও।

increase the demand of jewellery | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে ও সাজে গয়নার প্রাধান্য হাজার বছর আগে ছিল।তবে বর্তমানে যুগ পাল্টেছে পরিবর্তন এসেছে যুগের সঙ্গে মিলিয়ে এর রং, নকশা ও উপাদানের।তাই সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে মানুষের রুচি ও ফ্যাশানেরও পরিবর্তন হয়ে গেছে। সোনা, রুপা, হীরা, মুক্তা বাইরে বেরিয়ে সকলেই বর্তমানে একটু অন্য সাজে নিজেকে সাজাতে ব্যস্ত।

তাই সোনা রূপার পরিবর্তে কাঠের ও মাটির গয়নাও বেশ ফ্যাশনেবল।মাটির অলঙ্কার সে হোক না মাটির তাতে ক্ষতি কিসের?একবার মানানসই পোশাকের সঙ্গে সেই মাটির অলঙ্কার যদি ম্যাচ করে মহিলাদের তাহলে কেল্লা ফতে। তাই আধু নিক ডিজাইনের টেরাকোটার গহনার চাহিদা এখন সোনার অলঙ্কারের সাথে সমান তালে টক্কর দিচ্ছে।

শিল্পীরা ব্যস্ত গহনা তৈরিতে।নিজস্ব চিত্র

তাই দিনকে দিন বেরেই চলেছে সেই সব টেরাকোটার অলঙ্কারের চাহিদা।উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ শহর থেকে ১০কিমি কালিয়াগঞ্জ-দুর্গাপুর রাজবাড়ী রোড দিয়ে যেতেই অবস্থিত কুনরের হাটপাড়া টেরাকোটা শিল্প গ্রাম।বাড়ি বাড়ি চলে এই শিল্পের কাজ।

শিল্প মানচিত্রে হয়তো আলাদা করে কুনোর হাট পারা গ্রামের নাম না থাকলেও এতদঞ্চলের মহিলা মহলের হৃদয়ে টেরাকোটা শিল্পী দুলাল রায়ের পোড়ামাটির টেরাকোটার অলঙ্কার মহিলামহলের হৃদয়ে ইতিমধ্যে ই স্থান করে নিয়েছে।টেরাকোটা শিল্পী দুলাল রায়ের বর্তমানে দম ফেলার সময় নেই।

পুজোর মরশুম শুরু হয়েছে।সোনার অলঙ্কার নাই বা হলো।হোক বা মাটির।তাতে কি যায় আসে।এবারের পুজোর সময় যে বাজারে বিভিন্ন রকমের মাটির গহনা সবাই কে টক্কর দিবে সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।টেরা কোটার গ্রামে শিল্পী দুলাল রায়ের বক্তব্য ‘হাম কিসি সে কম নেহি’।

নিজস্ব চিত্র

তারা যে ভাবে প্রস্তুতি সেরে নিচ্ছেন মাটির অলঙ্কার তৈরী করতে তাতে তাদের আশা এবারো পুজোয় তাদের হাতের তৈরী অত্যাধুনিক পোড়া মাটির টেরাকোটার অলঙ্কার বাজি মাত করবে এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই তার।মহিলাদের বিভিন্ন পোশাকের সাথে ম্যাচিং করা মাটির গহনায় মহিলারা আকৃষ্ট হতে বাধ্য।তারা এবার বাজি মাত করবেই।

রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এই সব শিল্পীদের জন্য মেলার আয়োজন করে থাকে। তাদের তৈরী অলঙ্কারের বাজার চাহিদা দিনের পড় দিন বেড়েই চলেছে।তাই যুগের সাথে পাল্লা দিতে উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ ব্লকের আদর্শ গ্রামের টেরাকোটা শিল্পীরা ভীষন ব্যস্ত হয়ে পড়েছে টেরাকোটার মাটির গয়না তৈরী করতে।

এই গ্রামের টেরা কোটা শিল্পী দুলাল রায়ের নেতৃত্বে বহু টেরা কোটা শিল্পীরা আজ প্রথা গত মাটির জিনিস বানানোর পরিবর্তে বেছে নিয়েছে মাটির গয়না তৈরীর কাজ।আধুনিক যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তাদের ও এই পেশায় পরিবর্তন আনতে হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ আলিপুরদুয়ারে সাড়ম্বরে পালিত করম পুজো

তিনি বলেন এবছর তাদের তৈরী বিভিন্ন ধরনের মাটির গয়নার সেট পারি দিচ্ছে স্থানীয় বাজার সহ, রাজ্য থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।এমন কি তাদের হাতের তৈরি অলঙ্কার পাড়ি দিচ্ছে বিদেশেও।

দুলালবাবু জানান,বিদেশের বাজারে টেরাকোটার গয়নার খুব চাহিদা তাই বিদেশের এক্সপোটাররা ইণ্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ডিজাইনের গয়নার ছবি পাঠালে সেই মতো তাদের বানাতে হচ্ছে।এই শিল্পের মাধ্যমে যাতে এলাকার টেরাকোটা শিল্পীরা কাজ পান সেই দিকে তিনি সব সময় নজর দিয়ে থাকেন।

তাই এলাকার টেরাকোটার শিল্পীদের একত্রিত করে দুলাল রায়ের নেতৃত্বে মাটির তৈরী গয়না বানিয়ে চলছেন।এদিকে অন্যান্য শিল্পীরা জানান, টেরাকোটার মাটির গয়নার দারুন চাহিদা রয়েছে।তার উপড় সোনার গয়নার মতো এর কোন নিরাপত্তার দরকার পড়ে না।

তার উপড় বিভিন্ন ধরনের পোশাকের সঙ্গে মানানসই করে পড়া যায়।তাই প্রথাগত টেরাকোটার দ্রব্য সামগ্রী বানানোর পরিবর্তে টেরাকোটার গয়না সামগ্রী বানিয়ে খুব অল্প সময়ের মধ্যে চাহিদা আগের তুলনায় অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে।আগে তাদের সেই রকম বাজার ছিল না রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে মেলা আয়োজন করা হয়।

সেই মেলায় তাদের হাতের তৈরী বিভিন্ন সামগ্রী নিয়ে যায় ।সেখান থেকেই তাদের পোড়ামাটির গহনার ব্যাপক প্রচারের ফলে অলঙ্কারের চাহিদা আগের তুলনায় কয়েক গুণ বেড়েছে বলে দুলালবাবু জানালেন।এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের ভূমিকা যথেষ্টই ভালো বলা যায়।রাজ্য সরকার সহযোগিতা না করলে তারা এগিয়ে যেতে পারত না।

এখন কালিয়াগঞ্জ ব্লকের কুনোরের হাটপাড়ার আদর্শ শিল্প গ্রামের শিল্পীদের হাতে তৈরী টেরাকোটার গয়নার কাজ চলছে জোর কদমে।কারন আগামী কিছু দিনের মধ্যে এই গয়নাই পাড়ি দিতে চলছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।

এদিকে যারা টেরাকোটার গয়নার তৈরী করছেন তারা জানান,তাদের তৈরী মাটির গয়না বিদেশের বাজারে পারি দিচ্ছে এটা জেনে তারা ভীষন খুশি।শুধু তাই নয় টেরাকোটার গয়না তৈরী করে তাদের উপার্জন ও বেশ ভালোই হচ্ছে।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here