শরীয়তুল্লাহ সোহন, ওয়েব ডেস্কঃ
আর তিন বাদে অর্থাৎ ২৪ অক্টোবর ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ; বিশ্বের যেকোনো খেলায় আর যে প্রান্তেই হোক, এ ম্যাচের গুরুত্বই আলাদা। আর লড়াইটা যদি হয় ক্রিকেটে, তাহলে তো কথাই নেই। পুরো বিশ্ব যেন দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। জিবে জল আনা ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট দ্বৈরথ এখন অনেক কমে গেছে। রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক দ্বন্দ্বের কারণে দ্বিপাক্ষিক সিরিজে এখন আর মুখোমুখি হয় না চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দল দুটি। এ কারণে বৈশ্বিক টুর্নামেন্টেই শুধু দেখা হয় তাদের। বিশ্বজোড়া ক্রিকেটপ্রেমীরাও অপেক্ষায় থাকে সেই ঐতিহাসিক ক্ষণের। ২০১৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর আবারও দুই বছরের বেশি সময় পর সেই অপেক্ষার অবসান হচ্ছে।
এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভের ম্যাচে ভারত-পাকিস্তান খেলতে নামছে আগামী রবিবার, ২৪ অক্টোবর, ভারতীয় সময় সন্ধ্যে ৭.৩০ টার সময়। যদিও এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দুই দল মুখোমুখি হয়েছে পাঁচবার এবং প্রতিবারই ভারত তেমন কোন প্রতিরোধ ছাড়াই জিতেছে।
এ ম্যাচ নিয়ে আইসিসির সূচী ঘোষণার পর থেকেই ক্রিকেট বিশ্বে নানা আলোচনা শুরু হয়েছে। সময় যত এগিয়ে আসছে, মাতামাতি ততই বাড়ছে। বিশেষ করে ভারত ও পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা ম্যাচের সম্ভাব্য ফল নিয়ে নানা ধরনের ভবিষ্যদ্বাণী করে যাচ্ছেন। এর আগে পাকিস্তানের সাবেক ফাস্ট বোলার আকিব জাভেদ এ ম্যাচে ভারতকে এগিয়ে রাখার কথা বলেছেন।
পাকিস্তানের সাবেক কিংবদন্তী অলরাউন্ডার এবং অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি অবশ্য কথা বলেছেন অন্যভাবে। তিনি বলেছেন, “যে দল চাপটা ভালো সামলে নিয়ে নিজেদের সেরা খেলাটা ঠিকঠাক খেলতে পারবে, তারাই ম্যাচ জিতবে। ” এটা সত্যিও যে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে সব সময়ই বাড়তি চাপ অনুভব করেন দুই দলের খেলোয়াড়েরাই। এই ম্যাচে তাই চাপ সামলানোই সবচেয়ে বড় ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।
ভারতের সাবেক অধিনায়ক কপিল দেবও তেমন কথাই বলেছেন। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করতে গিয়ে ১৯৮৩ এর বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক কপিল দেব বলেছেন, ‘চাপ আর চাপ, ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের মূল বিষয় এটাই। তাই চাপ সামলানোর ওপরই সবকিছু নির্ভর করে। তাই তো ম্যাচের ফল নির্ধারণ করবে আপনি খেলাটা উপভোগ করছেন, নাকি চাপে পড়ে গেছেন এর ওপর।’
কপিল চাপের বিষয়টি আরও ব্যাখ্যা করেছেন এভাবে, ‘আপনি যদি বেশি চাপ নিয়ে ফেলেন, তাহলে আশানুরূপ খেলতে পারবেন না। যারা খেলাটা উপভোগ করবে, তাদের জয়ের সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।’ ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে খেলোয়াড়দের ওপর চাপ বেড়ে যাওয়ার একটা বড় কারণ ভালো করার তীব্র ইচ্ছা। সেটা কেন, সেই ব্যাখ্যাও করেছেন কপিল, ‘ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে ভালো কিছু করলে খেলোয়াড়দের ওপর আলোটা বেশি পড়ে। কোনো তরুণ যদি এ ম্যাচে ভালো খেলে, তাহলে বিশ্বময় পরিচিতি আর প্রশংসা পায় সে। একই সঙ্গে একজন সিনিয়র খেলোয়াড় এ ম্যাচে ভালো খেলতে না পারলে খ্যাতিতে টান পড়ে।’
আরও পড়ুনঃ লন্ডনের পর এবার দুবাইয়ের মাদাম তুসো মিউজিয়ামে কোহলির মোমের মূর্তি
এছাড়াও পাকিস্তানি স্পিড স্টার রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস খ্যাত শোয়েব আখতার ম্যাচের ভবিষ্যৎ বাণী করতে গিয়ে যদিও ভারতকে এগিয়ে রেখেছেন। তবুও রাখঢাক না রেখে বলেছেন, “পাকিস্তান যদি আগে ব্যাট করে ১৭০-৮০ রান তোলে, তাহলে আইপিএল এর মতো সহজেই চেস করে জিততে পারবে না ভারত।” তাঁর মতে আইপিএলের মতো সহজ নয়, বিশ্বকাপের মঞ্চ।
অন্যদিকে বিশ্ব ক্রিকেট-এর অন্যতম পাক কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান এবং পাক দলের প্রাক্তন প্রধান নির্বাচক ইনজামাম সরাসরি জানিয়েছেন, “কোহলির নেতৃত্বে ভারত একটি ভয়ংকর টি-টোয়েন্টি দল এবং চ্যাম্পিয়ন হওয়ার উপযুক্ত দাবিদার। ”
আরও পড়ুনঃ শীঘ্রই বদলাতে চলেছে ফেসবুকের নাম, ঘোষণা হবে আগামী সপ্তাহেই
তবে নফরগড়ের নবাব শেহবাগ, গম্ভীর সহ অন্যান্য ভারতীয় প্রাক্তনীদের মতে, আসন্ন ম্যাচে খুব সহজেই পাকিস্তানকে হারাবে ভারত। এছাড়াও অন্যান্য দেশের ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা, ভারতের দিকেই পাল্লা ভারী করেছেন। ভারত এই বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য কতটা মরিয়া হয়ে আছে, প্রস্তুতি ম্যাচ গুলোতে প্যারফরম্যান্স দিয়ে প্রমাণ করেছেন। এখন পর্যন্ত ভারত দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলছেন একটি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে, যে ম্যাচে ভারত অনায়াসে ১৯০+ তাড়া করে জিতেছে, অন্যটি অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে, যে ম্যাচে ভারত অজিদের কে হেসে খেলে হারিয়েছে।
অন্যদিকে পাকিস্তানও দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলছেন, একটি গতবারের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে, যে ম্যাচে তারাও সহজ ছিনিয়ে নিয়েছে, আর একটি খেলছেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে, যে ম্যাচে তারা আগে ব্যাট করে ১৮৬ রানের বড় লক্ষ্য মাত্রা দক্ষিণ আফ্রিকা দলকে দিয়েছিল এবং দুই বল বাকি থাকতেই আফ্রিকা তাদের লক্ষ্য মাত্রায় পৌঁছে পাকিস্তানকে হারায়।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584