শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
বিশ্বের করোনা পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে, তাতে যে কোনও জায়গা থেকে করোনা আক্রান্তদের তুলে এনে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার প্রয়োজন হতেই পারে। একই সঙ্গে দেশের সীমান্তে নজরদারিতে কর্মরত যুদ্ধজাহাজে নৌসেনার অফিসারদেরও করোনা আক্রান্তের ঘটনা ঘটলে এয়ারলিফট করার দরকার হতে পারে। সেই কারণে এই নিয়ে প্রাথমিক মহড়া সেরে রাখল নৌবাহিনীর সার্দান কম্যান্ড।
ইস্টার্ন কম্যান্ড সূত্রে খবর, মূলত মালদ্বীপ, লাক্ষা দ্বীপপুঞ্জের জরুরি পরিষেবা, করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার উদ্দেশ্যে পৌঁছে দেওয়া এবং একইসঙ্গে চিকিৎসার সরঞ্জাম পৌঁছে দেওয়ার মহড়া সেরে নিল ভারতীয় নৌবাহিনী।
আরও পড়ুনঃ করোনা অতিমারিতে বাড়ি বাড়ি গণ পরীক্ষার দাবি জানিয়ে জনস্বার্থ মামলা
কলকাতা বন্দরে ঘাঁটি গেড়ে থাকা ভারতীয় নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ আইএনএস নেতাজি সুভাষেও তৈরি হয়েছে আইসোলেশন ওয়ার্ড। সেখান থেকে হেলিকপ্টারেও ভারতীয় নৌবাহিনীর আধিকারিকদের নিয়ে আসা হতে পারে।
মূলত লাক্ষা দ্বীপপুঞ্জের জরুরী পরিষেবা, করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার উদ্দেশ্যে পৌঁছে দেওয়া এবং একইসঙ্গে চিকিৎসার সরঞ্জাম পৌঁছে দেওয়ার মহড়া সেরে নিল ভারতীয় নৌবাহিনী। অ্যাডভান্সড লাইট হেলিকপ্টার মহড়ায় ব্যবহার করা হয়েছে। প্রস্তুত করা হয়েছে দরনিয়ার এয়ারক্রাফটের মধ্যে আইসোলেশন ওয়ার্ড।
এয়ারক্রাফটের মধ্যে ককপিট এবং কেবিন পলিথিন চাদরের সাহায্যে সম্পূর্ণ আলাদা। উদ্দেশ্য একটাই, যাতে কোনও ভাবেই করোনা আক্রান্তের সংস্পর্শে আসতে না পারে ককপিট এবং কেবিন। পিপিই বা পার্সোনাল প্রোটেকশন ইক্যুইপমেন্ট সজ্জিত পাইলট এই হেলিকপ্টার ওড়াতে পারবেন।
একাধিক উচ্চতায় এভাবেই এয়ারক্রাফটের মহড়া হয়। মহড়ায় সাফল্য এসেছে দাবি নৌবাহিনীর।জানা গিয়েছে, রোগীকে হাসপাতালে পৌঁছনোর পর এয়ারক্রাফট জীবাণুমুক্ত করার কাজও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
সেনা সূত্রে আরও জানানো হয়েছে, কলকাতা বন্দরে ঘাঁটি গেড়ে থাকা ভারতীয় নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ আইএনএস নেতাজি সুভাষে তৈরি হয়েছে আইসোলেশন ওয়ার্ড। তবে এই আইসোলেশান ওয়ার্ডে ঠাঁই মিলবে শুধুমাত্র নৌসেনা কর্মীদেরই।
আরও পড়ুনঃ করোনা রোধে ১৫ হাজার কোটির স্বাস্থ্য প্রকল্প ঘোষণা কেন্দ্রের
মূলত বাংলার উপকূল ঘেঁষে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা যুদ্ধজাহাজ গুলিতে কেউ এই করোনার প্রকোপে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে এই আইসোলেশনে এনে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। জাহাজে থাকা সেনাকর্মীদের শরীরের অবস্থা জানতে প্রত্যেকটি যুদ্ধজাহাজে মেডিক্যাল টিম পাঠানো হচ্ছে।
এমনিতেই জাহাজে থাকা নৌসেনাকর্মী ও নাবিকদের সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হচ্ছে। তার ওপর স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে হচ্ছে। ঘনঘন আর রোজ কারও জ্বর হয়েছে কি না, থার্মাল গান দিয়ে তা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।
করোনার এই প্রকোপের জেরে কলকাতা বন্দরে ঘাঁটি গেড়ে থাকা জাহাজগুলির নৌসেনাদের ডাঙায় নামা আপাতত নিষিদ্ধ হয়েছে। সংক্রমণ ঠেকাতে কলকাতার কাছাকাছি যে যুদ্ধজাহাজগুলি ছিল, সেগুলি লকডাউন করে দেওয়া হয়েছে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস আইএনএস নেতাজি সুভাষ নৌসেনা ঘাঁটি থেকে স্যানিটাইজ করে পাঠানো হচ্ছে যুদ্ধজাহাজগুলিতে।প্রত্যেক আধিকারিক, কর্মী ও তাঁদের পরিবারের লোকেদের মাস্ক পরে ডিউটি করতে হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584