পিয়া গুপ্তা, উত্তর দিনাজপুরঃ
সুস্থ হওয়ার আগেই রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন এক বৃদ্ধকে ‘অজানা কারণে’ অ্যাম্বুলেন্সে করে এনে তার বাড়ির এলাকার রাস্তার পাশে ফেলে পালিয়ে যায় স্বাস্থ্যকর্মীরা। অমানবিক এই ঘটনার জেরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি ওই ব্যক্তি রাস্তার পাশে জ্বরে কার্যত বেহুশ হয়ে থাকায় বাসিন্দাদের মধ্যে করোনা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
ফলে অসুস্থ ওই ব্যক্তিকে রাস্তা থেকে তুলে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার সাহস কেউ দেখায়নি। খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে এলাকার বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখায়। পঞ্চায়েত থেকে খবর পাঠানো হয় স্বাস্থ্য দফতরে। মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ অবশ্য গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বলে জানা গিয়েছে।
রায়গঞ্জ ব্লকের শ্যামপুর পঞ্চায়েতের সদস্যা কল্পনা বর্মন জানিয়েছেন, “ওই বৃদ্ধের নাম বাদল দাস। বাড়ি দেবীনগর এলাকার জোড়া বটতলা এলাকায়। তার স্ত্রী লকডাউনের আগেই বাইরে গিয়ে কোথাও আটকে পড়ে।কয়েকদিন ধরে ওই বৃদ্ধ জ্বর নিয়ে বাড়িতেই ছিলেন।আমরা সেই খবর পাওয়ার পরে বিডিও’র সাহায্যে তাকে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করি।
গতকালও আমি মেডিক্যাল কলেজে খোঁজ নিয়েছি। আমাকে জানানো হয়েছে, ওই ব্যক্তি সুস্থ হলে আমাদের খবর দেওয়া হবে।এদিন সন্ধ্যার ঠিক আগে মেডিক্যাল কলেজ থেকে তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে এনে রাস্তার পাশে ফেলে পালিয়ে যায়। আমরা গোটা ঘটনা স্বাস্থ্য দফতরে অভিযোগ করেছি।”
আরও পড়ুনঃ মাতৃভূমি রক্ষায় শহীদ আলিপুরদুয়ারের বিপুল, গর্বিত বিন্দিপাড়া
প্রত্যক্ষদর্শী জ্যোৎস্না বিশ্বাস জানিয়েছেন, ” আমি বাড়ির সামনে বসে ছিলাম। হঠাৎ একটা অ্যাম্বুলেন্স এসে রাস্তার পাশে থামে। ওই অ্যাম্বুলেন্স থেকে এক ব্যক্তিকে টেনে হিঁচড়ে নামিয়ে রাস্তার পাশে রেখেই তারা প্রচন্ড গতিতে গাড়ি চালিয়ে পালিয়ে যায় কিছু বুঝে ওঠার আগেই। একটু কাছে গিয়ে বুঝতে পারি, আমাদের ওই প্রতিবেশীকে ফেলে রেখে যাওয়া হয়েছে। প্রচন্ড জ্বরে সে রাস্তায় শুয়েই কাঁপছিলো।আমি বাড়ি থেকে একটা চাদর এনে তাকে দিই। কিন্তু করোনা আতঙ্কের জেরে তাকে তুলে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সাহস আমরা পাচ্ছি না।”
আরও পড়ুনঃ সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে প্রচার, এখন নীরব কেন প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন বিরোধীদের
মেডিকেল কলেজের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার অভিক মাইতি জানিয়েছেন, ” ওই ব্যক্তি জ্বর নিয়ে ভর্তি হওয়ার পর তার ট্রুন্যাট মেশিনে টেস্ট করা হয়। রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। এরপর এদিন তাকে চিকিৎসারত ডাক্তার ছুটি দেয়। তার ভর্তির সময় লেখানো ফোন নম্বরে আমরা যোগাযোগ করে জানতে পারি সেটি ঠিক দেওয়া হয়নি। ফলে একজন অ্যাটেন্ডডেন্টকে সাথে দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। তাকে রাস্তায় ফেলে দেবার বিষয়টি জানি না।গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584