পিয়ালী দাস, বীরভূমঃ
আঘাত লাগলে বা চোট পেলে ডাক্তারখানা বা ওষুধের দোকানে গিয়ে ওষুধ খেলে ব্যথার উপশম হয়, এতো সবার জানা। হ্যাঁ সবার জানা, তবে অবশ্যই পৃথিবীর সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রাণী মানুষরা সেই জানাদের মধ্যে পড়েন। কিন্তু এমনটা জানেন হনুমানও! শুনতে বিস্ময় লাগলেও বাস্তবে সেটাই দেখতে পাওয়া গেল।
সকালে মল্লারপুর স্টেশন চত্বর ছিল যেন কুস্তির আখড়া। সকাল থেকে স্টেশনে ঢোকার মুখে দুই পূর্ণবয়স্ক হনুমানের লড়াই দেখতে ভিড় জমেছিল সাধারণ মানুষদের। কে কাকে আঘাত করে মাটিতে ফেলতে পারবে তার লড়াই চলতে থাকে। হনুমানের মল্লযুদ্ধ দেখে অনেকে মজা পান, আবার অনেকে ভয় পান। তবে দুই হনুমানের লড়াইয়ে জখম হয় দু’টি হনুমানই। কিছুক্ষণ পর রণে ভঙ্গ দিয়ে একটি হনুমান পালিয়ে যায়। অন্যটি বসে পরে চুপ করে। বেশ কয়েক জায়গায় আঘাত লাগে তার। ক্ষতস্থানে ব্যথা করতে শুরু করে, আঘাতের চিহ্ন স্পষ্ট বোঝাও যায়।
কিন্তু এরপরই ওই হনুমানটি অনুভব করে চিকিৎসা করাতে হবে। তাহলে! প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, “আচমকা একটি টোটোয় চরে বসে জখম হনুমানটি। করুণ চোখে সহযাত্রীদের গায়ে হাত রেখে বোঝানোর চেষ্টা করে সে আক্রমণ করবে না। মল্লারপুর স্টেশন থেকে খানিকটা দূরে পঞ্চায়েত ভবন। সেখানেই একটি ওষুধের দোকানের সামনে ঝুপ করে নেমে পড়ে হনুমানটি। দোকানের সামনে বেঞ্চে বসে অপেক্ষা করছিল হনুমানটি। দোকানের ভিড় একটু কমতেই লাফ দিয়ে কাউন্টারে উঠে বসে কোমরের নীচে ও শরীরের অন্য অংশে ক্ষতস্থানগুলি দেখাতে থাকে। এমন ভাব করে যেন চিকিৎসা চাইছে। “দোকানের ওষুধ নিতে এসেছিলেন স্থানীয় এক যুবক। তিনিও হাত লাগান জখম হনুমানের ক্ষতে মলম ও ব্যান্ডেজ করায়। ওষুধ লাগিয়ে ব্যান্ডেজ করে দেওয়ার পরেও ক্ষতস্থানগুলি বারবার দেখাতে থাকায় ওই ওষুধ দোকানদারের মনে হয় ব্যথার জন্য হনুমানটি এরকম করছে। তারপর কাপে জল নিয়ে একটি ব্যথা কমার ওষুধও খাওয়ানো হয় তাকে। সঙ্গে খান কয়েকটি কলা। কিছুক্ষণ বসে থেকে আনাজুলের কাঁধে হাত রেখে দোকানের কাউন্টার থেকে রাস্তায় নেমে ফের একটি স্টেশনগামী টোটোয় চড়ে বসে সে।
বন্যপ্রাণী গবেষক শান্তিনিকেতনের ঈশানচন্দ্র মিশ্র বলেন, “যে সব প্রাণী মানুষের কাছাকাছি থাকে তাদের কেউ কেউ মানুষের আচরণ, কার্যকলাপ অনুসরণ করে। হনুমান, বাঁদর বা কুকুরের অনুসরণের ক্ষমতা অনেক বেশি।”
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584