লকডাউনে বাড়ি থেকে কাজ ডেকে আনছে অনিদ্রা বলছে সমীক্ষা

0
53

ওয়েবডেস্ক, নিউজফ্রণ্টঃ

বর্তমানে বিশ্বব্যাপী চলছে লকডাউন প্রক্রিয়া। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন ভারতীয় বেসরকারি সংস্থার কর্মীরা। ইতিমধ্যেই কর্মী ছাঁটাই শুরু হয়ে গেছে বহু সংস্থায়। ধরা যায়, আগামী দিনেও ছাঁটাই হবে এমন বহু কর্মী। এমত অবস্থায় বেশি কিছু নামি বেসরকারি সংস্থা, যারা উদ্যোগ নিয়েছেন ‘ওয়ার্ক ফর্ম হোম’ অর্থাৎ বাড়ি থেকে করতে হবে অফিসের কাজ। যাতে করে অচল পৃথিবীকে কিছুটা সচল করা যাবে। যা এই মুহূর্তে পৃথিবীর জন্য যথেষ্ট উপকারী একটা পন্থা। কিন্তু নতুন করে সমস্যার মেঘ ঘনীভূত হলো এখানেই।

insomniac | newsfront.co
প্রতীকী চিত্র

অফিসে কর্মরত ঐ ব্যাক্তি যার কাজ করার জন্য একটি নিদিষ্ট সময় বেধে দেওয়া ছিলো কিছু নিদিষ্ট পরিমাণ কাজের জন্য এই সময়ে তা হয়ে গেলেই মিটে যেত। কিন্তু ওয়ার্ক ফ্রম হোমে ব্যাক্তির কাজের চাপ বাড়লো আরো দ্বি -গুণ। অফিসের কাজের সাথে ও যুক্ত হলো বাড়ির আনুষাঙ্গিক আরো নানান কাজ। যে সময়ের অদ্ভুত চাপ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের ছন্দকে বেঁধে রেখেছিলো সেই জীবনের ও ঘটলো ছন্দপতন। এর ফলে বাড়ির আনুষাঙ্গিক কাজ সহ অফিসের পাহাড় প্রমাণ কাজ শেষ করে, তিনি যখন রাতে শয্যা নিতে যাচ্ছেন। দেখা যাচ্ছে সারাদিন পরের সেই ক্লান্তি মাখা শান্তির ঘুমেই ঘটছে সময়ের চরম অভাব। খুব স্বাভাবিক ভাবেই যার প্রভাব পরছে পরের দিনের কর্মজীবনে।

ঠিক এমনই এক বর্তমান দৈনন্দিন জীবনে তিক্ত অভিজ্ঞতা জানালেন বছর ৪২ – র এক বেসরকারি বাণিজ্যিক বিভাগের ম্যানেজার অনিকেত। ছোট্ট দুই স্কুলে পাঠরত সন্তান ও স্ত্রী -কে নিয়ে যার সংসার। বাড়ি থেকে কাজ করা যে এতটা কঠিন হতে পারে যা তিনি আগে বুঝতে পারেননি। প্রতিদিন ভোর ৫- টায় প্রকৃতির ডাকে সারা দিলে তার পাঁচ বছরের সন্তান বিছানা থেকে তাকে টেনে তুলে দেয়। তার পরই ঠিক ৬ – টার মধ্যে বাড়ির সমস্ত জঞ্জাল পরিস্কার করতে হয় স্ত্রী-র রন্ধন কাজ শুরু জন্য।

এরপর, বাড়ির যাবতীয় সমস্ত প্রকার জঞ্জাল যা গুছিয়ে নিয়ে লোকালয়ের পাশে থাকা কোনো এক বিনে জমা করে আসতে হয়। সকালে ল্যাপটপের কাজ শুরু করার আগে তার স্ত্রী -কে তাদের দুই সন্তানকে খাওয়ানোর কাজে যথেষ্ট সহযোগিতা করতে হয়।যদিও যতদিন সব স্বাভাবিক ছন্দে না ফিরবে ততোদিন আর কাজ করতে হবেনা। এমন জানানো সত্বেও দুই সন্তান ও স্ত্রী -র মুখে অন্ন তুলে দেবার কারণে এই সুযোগ ও নিতে পারেন নি। যে কাজ তার সন্ধ্যে ৭ -টা শেষ হতো তা রাত ১০ -টায় শেষ করার জন্যও যথেষ্ট লড়াই করতে হয়। বর্তমান পরিস্থিতির সাপেক্ষে তিনি এই সাংঘাতিক অপরিচিত পরিস্থিতির থেকে নিস্তার পেতে অবশেষে পেশাদার পরামর্শদাতার সাহায্য নেন।

সিনিয়র কাউন্সিলিং সাইলোজিস্ট শ্বেতা সিং জানান , ‘অনিকেত একা নন। সাম্প্রতিক সময়ে আমরা এমন ব্যক্তিদের কাছ থেকে কল পাচ্ছি যাঁরা এক সময়ে বাড়ির কাজ ও অফিসের কাজ করার মধ্যে থেকে নিজেরা অবসাদগ্রস্ত হয়ে পরছে। যেক্ষেত্রে তাদের কাজের পাশে তারা পাচ্ছেননা কোনো সহায়ক কর্মী। তাই, এক্ষেত্রে অবাক হওয়ার কিছু নেই। যারা বাধ্য হচ্ছেন নিজের ঘুমের সাথে বোঝাপড়া করে নিতে।

ব্যাঙ্গালুরুর ওয়েকফিট.কম নামক নিদ্রা সমাধান কেন্দ্রের এক তথ্য এ বিষয়ে জানিয়েছে, ১, ৫০০ জন ভারতীয় বেসরকারি সংস্থারত কর্মজীবির মধ্যে, ৬৭ শতাংশ ভারতীয় যারা এই লকডাউন কালে প্রতি রাতে ১১ টার পরে ঘুমান। তাই, ৮১ শতাংশ যারা বিশ্বাস করেন লকডাউন কেটে গেলেই আবার সব পূর্বের নিয়মে হয়তো ফিরে আসবে।

৪৬ শতাংশ উত্তর দাতা যারা জানেন তারা ১১ – টার আগে রাতে ঘুমোতেন লকডাউনের আগে।এখনও এর মধ্যে আরও ৩৯ শতাংশ যারা ১১ টার পর ঘুমন একই ভাবে ২৫ শতাংশ উত্তরদাতা সাধারণ ভাবেই যারা রাত ১২ টায় ঘুমাতেন। বর্তমানে ৩৫ শতাংশ যারা এখন ১২ টার পরে ঘুমতে যান এবং এখনও ৪০ শতাংশ যারা মধ্যরাতে ঘুমচ্ছেন। করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত কাজের নিরাপত্তা ও আর্থিক সংস্থার কর্মী যারা তাদের পরিবার ও পারিবারিক আত্মীয় মহলকে নিয়ে যারা আর্থিক নিরাপত্তা হীনতায় ভূগছেন। তারা প্রায় অধিকাংশই বর্তমানে অনিদ্রা বা মধ্যরাতে ঘুমের পথে হাঁটছেন বর্তমানে।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here