নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতাঃ
সোনার বাংলা গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে একুশের বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে বর্তমান শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেও রাজ্যের উন্নয়নে বিজেপির বিকল্প ভাবনা কী? শিল্পায়নের জন্য তারা কী ভাবছে? এই প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গেলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা।
শনিবার বঙ্গ সফরে এসে বর্ধমানে একগুচ্ছ কর্মসূচি করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। মন্দিরে পুজো, কৃষকদের বাড়িতে মুষ্টিভিক্ষা, তারপর পাত পেড়ে মধ্যাহ্নভোজন, বিকেলে বিশাল রোড শো এবং শেষে সর্বমঙ্গলা মন্দিরে পুজো দেন নাড্ডা। রাতে সাংবাদিক সম্মেলনে ফের একপ্রস্ত কাটমানি, দুর্নীতি নিয়ে মমতা সরকারকে তোপ দাগেন তিনি। কিন্তু বিজেপির বিকল্প ভাবনা নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে নড্ডা বলেন, ‘আমরা ধীরে ধীরে সব জানাবো। ভোট যত এগিয়ে আসবে তত আমরা এব্যাপারে সুনির্দিষ্ট বক্তব্য তুলে ধরবো।’
বঙ্গে ভোটের মুখে একটা বড় ইস্যু যেমন আইনশৃঙ্খলা, দুর্নীতি, গরু-কয়লা পাচার, তেমনই একটা বড় ইস্যু সিএএ বা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন। ২০১৯ লোকসভা ভোটে নাগরিকত্ব ইস্যুতে রাজ্যের উদ্বাস্তু-মতুয়া অধ্যুষিত অঞ্চলে ব্যাপক প্রচার করেছিল বিজেপি। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী ঠাকুরবাড়িতে গিয়ে নাগরিকত্বের আশ্বাস দিয়েছিলেন। তার ফলও পেয়েছিল গেরুয়া শিবির।
আরও পড়ুনঃ কাটোয়ায় চাল সংগ্রহ অভিযান কর্মসূচির সূচনা নাড্ডা’র, দিলেন রাধাগোবিন্দ মন্দিরে পুজো
মতুয়ারা দুহাত উজাড় করে ভোট দিয়েছিলেন পদ্মশিবিরকে। কিন্তু আইন পাশের পর দেড় বছর হয়ে গেলেও তা কার্যকর হয়নি। একুশের ভোটের মুখে তা ধোঁয়াশা রয়েছে। শনিবার সেই ধোঁয়াশা আরও বাড়ালেন জে পি নাড্ডা। সিএএ কার্যকর নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে নাড্ডা বলেন, “বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রক উত্তর দিতে পারবে। সিএএ কার্যকর নিয়ে আমি বলতে পারি, আমরা এর প্রতি দায়বদ্ধ।”
প্রসঙ্গত, রাজ্যে ৩০টি বিধানসভা কেন্দ্র মতুয়া সম্প্রদায় প্রভাবিত। আর এই ৩০টি আসনের ফলাফলের উপর অনেক পট পরিবর্তন অপেক্ষা করছে। ইতিমধ্যেই কিছুদিন আগে সিএএ কার্যকর না হওয়ায় বেসুরো গাইছিলেন বনগাঁর সাংসদ তথা মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর।
আরও পড়ুনঃ গোটা দেশে বার্ড ফ্লুর আতঙ্ক, ডিম-মাংস খাওয়ায় বিশেষ নির্দেশিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার
কিন্তু পরে তিনি বলেন, সিএএ কার্যকর হওয়া নিয়ে কেন্দ্রের উপর ভরসা রয়েছে তাঁর। এমনকী তাঁর দাবি মতো, বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা তৈরি করে শান্তনুর পছন্দের লোককে সভাপতিও করে বিজেপি। আগামী ৩০ জানুয়ারি ঠাকুরবাড়িতে আসার কথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। তখনই মতুয়াদের ক্ষতে প্রলেপ দিতে পারেন তিনি। কিন্তু ঠাকুরবাড়ি এখন দ্বিধাবিভক্ত। নাগরিকত্ব আইন কার্যকর হতে দেরি হলে ‘অস্থির’ মতুয়াদের মন বদলাতে দেরি হবে না, বলছেন বিশ্লেষকরা।
পাশাপাশি আজকে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে বিজেপি নেতা বিএল সন্তোষের বৈঠক নিয়ে নড্ডার মত জানতে চাইলে তিনি বলেন, “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে রাজ্যপাল কী আলোচনা করেছেন তা গোপন ব্যাপার। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করার সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে রাজ্যপালের।“ কিন্তু বিএল সন্তোষের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি তিনি।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584