লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে অভ্যাসে পাট চাষ করছে চাষী

0
258

পল্লব দাস,বহরমপুরঃ

পাট গাছের আঁশ থেকে ছাড়ানো হয় পাট।বর্ষা কালের এই ফসল কৃষকদের লাভের মুখ দেখাতো কোনো এক সময়।সম্ভবত উড়িয়া শব্দ jhuta বা jota থেকে jute শব্দটির উদ্ভব হয়েছে।অবশ্য, ‘জুটা’ ও ‘পট্ট’ বস্ত্র ব্যবহারের কথা যথাক্রমে বাইবেল এবং মনুসংহিতা ও মহাভারতে উল্লেখ আছে ,পাটদ্রব্যের সুপ্রাচীন ব্যবহারের সাক্ষ্য বহন করে।

পাট জাগ দেওয়া।নিজস্ব চিত্র

পাট উৎপাদনের আদর্শ জলবায়ু এ রাজ্যে বর্তমান তবু পাট চাষিরা লাভের মুখ দেখা থেকে বঞ্চিত থাকছেন।প্রচলিত কথা যার দাম একবার বাড়ে, তার দাম আর কমে না, কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে আমাদের দেশে কৃষকের বেলায় এ কথাটি সম্পূর্ন সত্য নয়। কারণ উপকরণের দাম বাড়লে আর কমে না, আর কৃষি ফসলের দাম যে কোন সময়ে কমে যায়।কৃষিপ্রধান এই দেশে অর্থনৈতিক ভাবে উন্নয়নের জন্য কৃষকের লাভের দিকটা দেখা খুব প্রয়োজন।

মাঠ থেকে এনে জাগ দেওয়ার পূর্বে।নিজস্ব চিত্র

পাট ও পাট শিল্পের বিকাশের পথে প্রতিকূলতা রয়েছে অনেক।আজকাল পাট চাষের ইচ্ছে ক্রমশ কমে যাচ্ছে ।চাষীদের এই অনীহা ডেকে আনছে পাটের দাম না থাকায়।পাট চাষী নেহেরুল শেখের তিন বিঘে জমিতে পাট চাষ করেন,এবার সেই জমিতে মোটের ওপর ছয় হাজার টাকা লোকসান হবে বলে জানান নেহেরুল।পাট চাষের প্রথম থেকে অনেক গুলি সেচ লাগে স্থানীয় ভাষায় যাকে বলে বাতানো।অনেক কৃষি শ্রমিক লাগে পাটচাষে এদিকে পাটের দাম নেই চাষের খরচ উঠছে না অধিকাংশ চাষির। শিল্পমহলের সমীক্ষা অনুযায়ী পাটজাত দ্রব্যের জায়গা নিচ্ছে বিকল্প নাইলন , প্লাস্টিক,পলিথিন পলিব্যাগ।জুটমিল গুলো বন্ধ হয়ে যাওয়া নৈমিত্তিক ঘটনা।কেন্দ্র বলছে উন্নত পাট উৎপাদনে ব্যর্থ রাজ্যের চাষিরা যদিও ভাল মানের পাট অধিকাংশই হয় উত্তরবঙ্গ,আর উত্তর ২৪ পরগনায়,হুগলিতে। নদিয়া-মুর্শিদাবাদের পাট চাষ হয় যথেষ্ট ।

তন্তু ছাড়ানোর পরে পাটকাঠি।নিজস্ব চিত্র

বীজ বপন,নিড়ানি, আগাছা দমন,পাটগাছ কাটা,পাটের ‘জাগ’ দেয়া (জলে ডুবিয়ে রেখে পচাতে দেওয়া) পাটগাছ থেকে পাট আলাদা করা,পাট ও পাটকাঠি শুকোনো সব মিলিয়ে অনেক শ্রম ও অর্থের প্রয়োজন হয়ে থাকে।এরপর যদি দাম না পেয়ে কম দামে বিক্রি করতে হয়, লোকসানের মুখ দেখতে হয় তবে পাট চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকবে কৃষক।’জমি পতিত পরে থাকবে। এতদিন চাষ করছি তাই লোকসান হলেও এবারটা চাষ করলাম ‘ আক্ষেপ করে বললেন আতিবুর শেখ।কিন্তু প্রশ্নটা হলো কতদিন ? সরকার পাট চাষের পুনরুজ্জীবন চাইলে এই দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করুন।পাটের ন্যূনতম দাম নির্ধারণ হোক।পাট চাষের এই দুর্দিনে সরকার দাঁড়াক বিপন্ন চাষিদের পাশে।
তবে হয়ত সুদিন ফিরবে।

আরও পড়ুনঃ গাছ উপহার দিয়ে সংবর্ধনা শিক্ষকদের

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here