নিজস্ব সংবাদদাতা, দক্ষিণ দিনাজপুরঃ
আসন্ন বিধানসভা ভোটের আগে সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যে আজ বালুরঘাটে জেলার পঞ্চায়েত সদস্য ও সাংগঠনিক কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক সারলেন বিজেপি দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাশ বিজয় বর্গীয়। সঙ্গে ছিলেন বিজেপি দলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক তথা জেলার ভারপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক সায়ন্তন বসু ও রথীন্দ্র বোস।
আজ বালুরঘাট শহরের জেলা কার্যালয় প্রাঙ্গণে এক সভায় জেলার আটটি ব্লকের দলীয় পঞ্চায়েত সদস্যদের নিয়ে বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতৃত্ব। পাশাপাশি এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জেলার বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার ও জেলা বিজেপির সভাপতি বিনয় বর্মন সহ জেলার কার্যকর্তারা।
বিজেপি দলের এই দুই নেতা আজ মালদা থেকে সড়ক পথে বালুরঘাটে আসেন। বালুরঘাট শহরে ঢোকার মুখে তাদের মোটর সাইকেল মিছিল যোগে শহরের বিভিন্ন রাস্তা অতিক্রম করে দলীয় অফিসে নিয়ে আসে জেলা বিজেপির যুব মোর্চার কর্মকর্তা সহ সদস্যরা।আজকের সভায় বিজেপিতে যোগ দেন জেলার দুই প্রতিষ্ঠিত ডাক্তার দিবাকর ঘোষ ও অমিত সাহা।
আরও পড়ুনঃ শুভেন্দু আসায় সন্দেহ দূর হয়েছে দিলীপের- জানালেন ঝাড়গ্রামে
ভিড়ে ঠাসা বৈঠকে বিজেপির রাজ্য সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, “আসন্ন ভোটের আগে কেন্দ্রীয় সরকারের পাঠানো প্রকল্প গুলিকে তৃণমূল নেত্রী নাম পালটে বাংলায় চালু করে তার ফায়দা লুটছে।” এরপরেই তিনি পঞ্চায়েত সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, এই প্রকল্প গুলি যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী করেছে তা আপনারা বুথে বুথে ঘুরে লোকজনদের চায়ে পে চর্চা ও অনান্য কর্মসূচীর মাধ্যমে করার নির্দেশ দেন। বিজেপি ২০০ আসনের বেশি নিয়ে ক্ষমতায় আসবে বলে তিনি দাবি করেন।
কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাশ বিজয় বর্গীয় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করে বলেন, “রাজ্যে পঞ্চায়েত থেকে বিভিন্ন ভোটে মহিলারা নির্বাচিত হয়ে আসছেন। আর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও একজন মহিলা। কিন্তু এই রাজ্যে সেই মহিলারাই আজ সুরক্ষিত নেই। তাহলেই বুঝুন এই রাজ্যের অবস্থা।” তিনি পঞ্চায়েত সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, “কেন্দ্রের সব প্রকল্পের কাটমানি খাওয়ার জন্য রাজ্য সরকার বলছে তাদের মাধ্যমে পাঠানোর জন্য।”
আরও পড়ুনঃ মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ে মালবাহি গাড়ির ধাক্কা
এভাবেই রাজ্যের কৃষকরা কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষাননিধি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে তিনি জানান। তিনি আরও বলেন, আপনারা ঘরে ঘরে গিয়ে কৃষকদের বলুন, রাজ্যে ক্ষমতায় এলেই টাকা সোজা সব কৃষকদের ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে ঢুকে যাবে। তিনি পঞ্চায়েত সদস্যদের উজ্জীবিত করতে পাকিস্তান ও চিনের বিরুদ্ধে মোদীর পরম বিক্রমের কথা তুলে ধরেন।
এই প্রসঙ্গেই তিনি এয়ার স্ট্রাইকের সময় তৃণমূল নেত্রীর প্রমাণ চাওয়ার কথা তুলে ধরে বলেন, আপনারা পঞ্চায়েতে গিয়ে সত্যিটা তুলে ধরতে বলেন। এই রাজ্যে গণতন্ত্র নেই, কেননা বিরোধীদের কোন বক্তব্য রাখার অধিকার নেই। বক্তব্য রাখতে গেলেই পুলিশ ও তৃণমূল ক্যাডার দিয়ে মারধোর করা হয়। এভাবেই তাদের ৩০০ জন কার্যকর্তা মারা গেছে বলে তার মত।
পুনরায় ভাইপো প্রসঙ্গ তুলে তৃণমূল নেত্রীর কড়া সমালোচনা করে বলেন এখানে দেড় জনের সরকার চলছে। এক মুখ্যমন্ত্রী ও অন্যজন ভাইপো এছাড়া কোন কেউ টু করার সাহস নেই। অনেকে দমবন্ধ অবস্থায় আছেন। তাই সুযোগ পেলেই তারা বিজেপিতে চলে আসছেন আরও আসবেন বলে জানান তিনি। সভা শেষ করার আগে প্রত্যেক উপস্থিত জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রীর সেই স্লোগান সোনার বাংলা গড়ার ডাক দিয়ে তাদের নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে ভোটে যাতে বিজেপি বিপুল ভাবে জয়লাভ করে তার জন্য কাজ করতে বলেন।
আরও পড়ুনঃ ঝাড়গ্রামে শুরু হল ‘বাংলা মোদের গর্ব’ শীর্ষক অনুষ্ঠান, প্রদর্শনী
বৈঠক শেষে কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতা কৈলাশ বিজয় বর্গী সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ফুরুফুরা শরিফের সাথে ওয়াইসির বৈঠক সহ বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে বলেন কে কার সাথে বৈঠক করল সে নিয়ে তাদের কোন চিন্তা নেই। কেননা আমাদের ৫১ পার্সেন্ট ভোট রয়েছে। সেই নিয়েই তারা অনায়াসে রাজ্যের ক্ষমতায় আসবেন বলে জানান।
পাশাপাশি তার দাবি কলকাতা কর্পোরেশন থেকে তিন তৃণমূল সদস্যই আসবেন শুধু নয়, অনেকেই দলবদল করে বিজেপি তে আসবেন কিন্তু যাকেই দল নেবে তার পেছনে যাতে কোন কলঙ্ক না থাকে। তিনি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় নিয়ে বলতে গিয়ে বলেন উনি অসুস্থ তাকে সুস্থ করে তোলাই প্রধান কাজ। এর জন্য যদি তাকে দিল্লি নিয়ে যেতে হয় তা করা হবে।
আরও পড়ুনঃ ভাইকে দলে টেনে কাঁথি থেকে তৃণমূলকে ঝেঁটিয়ে সাফ করার ডাক শুভেন্দুর
কেন্দ্রের নেতারা তার প্রতি নজর রেখে চলেছেন। তিনি অশোক ভট্টাচার্যের তার রাজনীতিতে আসার মন্তব্য প্রসঙ্গে বলেন কে কি করবে তা কি উনি ঠিক করে দেবেন। সেটা না হয় সৌরভের উপর ছেড়ে দেওয়া হোক।এরপরেই কেন্দ্রীয় নেতা ও রাজ্য নেতারা বুনিয়াদপুরের জনসভার উদ্দেশ্যে রওনা হন।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584