কালনায় কালী ইতিহাসের ইতিবৃত্ত

0
311

শ্যামল রায়,কালনাঃ

কিছুদিন বাদেই শক্তি আরাধনার পুজো।প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে চলছে।কালনা শহর ও আশপাশ এলাকায় একাধিক কালী সাধনার পীঠস্থান।আর এই কালী সাধনার পীঠস্থান ঘিরে তন্ত্রসাধক রা কালীকে নিয়ে ভক্তিমূলক এবং জীবন সুধা রসের বহু গান রচনা করে গিয়েছেন।বহুদিন আগে থেকেই সেই ধারা অব্যাহত কালী পুজোর মধ্যে দিয়ে।কালনা শহরে সব থেকে বড় কালীপুজো সাধক কমলাকান্তের কালীপুজো।কালনার বিদ্যা বাগি পাড়ায় সাধক কমলাকান্তের বাস্তুভিটা তেই এই কালী পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।ভক্তি নিষ্ঠা সহকারে কালী পুজো হয় এবং ভক্তের ঢল নামে।

এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন যে সাধক কমলাকান্ত এই স্থানেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন পরে তিনি বর্ধমান এ মামার বাড়ি চলে যান।মৃন্ময়ীর মধ্যেই চিন্ময়ী রূপ যে আছে তা তিনি প্রমাণ করেছিলেন বলেই জানা গিয়েছে।তাই সাধক কমলাকান্ত দেবীর পায়ে কাঁটা বিঁধিয়ে রক্ত ঝরিয়ে তার জীবন্ত প্রমাণ তিনি দিয়েছিলেন এছাড়াও মন্দিরে পুজো সময় অলৌকিকতায় তেলে জলে মিশিয়ে প্রদীপ জ্বালানোর রীতি আজও বিদ্যমান।সকাল সন্ধ্যা এই প্রতিদিন নিত্য অমাবস্যাতে হোম করে ঢাক বাজিয়ে বিশেষ পুজো অনুষ্ঠিত হলেও এই কালীপুজোর দিন নিষ্ঠা সহকারে নিয়ম রীতি মেনেই মায়ের পুজো হয় বলে পুজো উদ্যোক্তারা জানিয়ে দিয়েছেন।সকলের জন্যই খিচুড়ি পায়েশ ভোগের বন্দোবস্ত করা হয়ে থাকে।এছাড়াও কালনা আর জাপট মিশন পাড়ায় রয়েছে কালী সাধক ভবা পাগলার মন্দির।এই ভব আর ভবানী মন্দির এর কালীপুজোয় সারা বছর ধরেই লক্ষাধিক ভক্ত সহ বাউল শিল্পীদের সমাগম যেমন ঘটে তেমনি ভবা পাগলার প্রতিষ্ঠা ভবানী মায়ের মৃন্ময়ী রূপের নিত্য পূজার সঙ্গে বাৎসরিক পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।সাধক ভবা পাগলা ছিলেন কালী সাধক তেমনি ছিলেন সমাজ সুধাকার এক গীতিকার তার লেখা বাউল গান বাউল শিল্পীদের কাছে আজও অমূল্য সম্পদ হিসাবে গণ্য।এছাড়াও রয়েছে কালনা শহরের সিদ্ধেশ্বরী কালী অম্বিকা কালী নামেও পরিচিতি।স্থানীয় মানুষের ধারণা এই অম্বিকা কালীর থেকেই কালনার নামকরণ হয়েছে অম্বিকা কালনা।জাগ্রত সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দিরে প্রতিদিনের নিত্য পুজোয় প্রচুর মানুষ যেমন আসে তেমনি কালী পুজো ঘিরে আরও প্রচুর মানুষের ঢল নামে।এই পুজোর বৈশিষ্ট্য হলো যে আগের দিন অঙ্গরাগ হয়।তাই মন্দিরে কালীপুজোর আগের দিন দেবী দর্শন বন্ধ থাকে তবে দেবী ঘাঁটি স্থাপনের নিত্য পূজা হয়ে থাকে।আলোকসজ্জায় সাজানো হয়েছে মন্দির প্রচলিত রয়েছে বলি প্রথা।এছাড়াও কালনা রয়েছে শতাব্দীপ্রাচীন সাধনা কালী বড়কালী আশা কালী মেজ কালী ঝুপড়ি কালীবাড়ি সত্যনাথ কালীবাড়ি আনন্দময়ী কালী।কালনা বারুইপাড়া ঝুপড়ি কালীবাড়ি এক সময় সাধারণ ঘরের চালায় দেবি পুজো হত পরে ভক্তদের দানে দেবীর মন্দির নির্মিত হয়েছে।রয়েছে পঞ্চমুন্ডির আসন।সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দিরের পাশেই রয়েছে প্রাচীন সাধনা কালীমন্দির।এই দেবী আবার কাঞ্চনদেবী ও ছোটমা নামেও পরিচিত।দুই শতাব্দী প্রাচীন এই মন্দিরে প্রতিদিন দৈনন্দিন পুজো হয়ে থাকে দেবী জাগ্রত বলে এলাকার বাসিন্দাদের দাবি।পাড়ায় রয়েছে সত্যনাথ কালী শতাব্দী প্রাচীন এই দেবী খুবই জাগ্রত বলে বিশ্বাস করেন এলাকার মানুষ।সাধক সত্যনাথ ছিলেন সাধারণ পরিবারের ছেলে চালা ঘরে কালী সাধনায় সিদ্ধিলাভ করেন। একদিন প্রবল বর্ষণে চালা ঘর দিয়ে জল ঢুকে দেবী প্রতিমার জল পরছিল সাধক সত্যনাথ দেবীকে বলেন “আমি রোদে জলে ভিজে তোর সেবা করি কিন্তু মা তুই যদি জলে ভিজিস তবে আমার মত অনেক ভক্তরা যে কষ্ট পাবে”,কথিত ভক্তের ডাকে সাড়া দিয়ে মা নিজেই সেই সময়ে এলাকার ধনী ব্যবসায়ীদের কয়েকজন কে স্বপ্নে দেখা দিলে তারা স্থায়ী মন্দির নির্মাণ কার্যে এগিয়ে আসেন বলে জানা গিয়েছে এবং স্থায়ী মন্দির নির্মিত হয় এছাড়াও কালনা লক্ষণ পাড়ায় রয়েছে বড় কালী আশা কালী।নিষ্ঠার সঙ্গে দেবীর পুজো করে থাকেন ভক্তরা।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here