প্রাগৈতিহাসিক থেকে এখনও পর্যন্ত তমলুকের দেবী বর্গভিমার ভক্তদের ভিড় অটূট

0
80

নিজস্ব সংবাদদাতা, পূর্ব মেদিনীপুর:

প্রচার আছে তাম্রধ্বজ রাজার বাড়িতে প্রতিদিন এক মাছুয়ানী জীবিত শোল মাছ দিয়ে আসত। রাজার খুব জানার ইচ্ছে হতো কী করে প্রতিদিন জীবিত মাছ পায় ওই মাছুয়ানী।

kali puja east midnapore | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

রাজা এক দিন লুকিয়ে ওই মাছ বিক্রেতার পিছু নেয়। লক্ষ্য করে জানতে পারেন, মরা মাছগুলোকে ওই মহিলা মাছ বিক্রেতা একটি পুকুরের ধারে নিয়ে আসে এবং সেই পুকুরের জল মরা মাছগুলোর উপর ছিটিয়ে দিতেই মাছগুলো জ্যান্ত হয়ে যায়।

এই ঘটনা চাক্ষুষ করে রাজা অবাক হলেন। পরে একদিন একাকী গোপনে ওই পুকুরের ধারে গিয়ে খেয়াল করলেন পুকুরের ধারে একটি ধাতুর মূর্তি।

kali puja east midnapore | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

সেই মূর্তিটি উদ্ধার করে ওই জায়গাতে একটি মন্দির স্থাপনের নির্দেশ দিলেন রাজা। মন্দির গঠনের পর দেখা যায় মন্দিরের মুখ পশ্চিম দিকে করা হলেও কোনও কারণে মা বর্গভীমার মুখ দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে ঘুরে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, পশ্চিমমুখী যে সিঁড়ি তৈরি করা হয়েছিল তাও নিজে থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে ঘুরে গেছে।

আরও পড়ুনঃ ৭০ বছরের পুরনো রঘুনাথপুরের তারাকালীর উপাসনায় আকুল ভক্তরা

ঠিক কত বছর আগে এই মন্দিরটি তৈরি হয়েছিল তার সঠিক সন-তারিখ কেউ না বলতে পারলেও কথায় রয়েছে কুরুক্ষেত্রের ঘটনার সময় এই মন্দিরের স্থাপন।

এমনকি প্রচলিত রয়েছে, অর্জুনের অশ্বও থামিয়ে দিয়েছিলেন এই তাম্রধ্বজ রাজা। আজ থেকে ৬০-৭০ বছর আগেও এই তমলুক এলাকাতে মা বর্গভীমার পূজো ছাড়া আর কোনও দেব দেবীর পুজো হতো না। এখন পুজো হলেও নিয়ম রয়েছে বাড়ির পুজো হোক বা ক্লাবের, আগে মা বর্গভীমা কে পুজো দিয়ে তবেই অন্য পুজো শুরু হবে।

আজও সেই নিয়ম অক্ষরে অক্ষরে পালন করে তমলুকের মানুষ। শ্যামা পুজোর দিন সারা রাত ধরে চলে মায়ের পুজো। তমলুকের বিভিন্ন ক্লাব, প্রতিষ্ঠান বা বাড়ির পুজোর সবাই ঘট নিয়ে, মিছিল করে, নাচ-গান-বাজনার সাথে মা বর্গভীমার মন্দিরে আসে। পুজো দেয়। তারপর নিজ নিজ এলাকাতে গিয়ে শ্যামা পুজোয় মেতে ওঠে।

কথিত, সতী দেহের বাম গোড়ালির অংশ এখানে এসে পড়েছিল। তাই মা এখানে কালী রুপে থাকলেও সারা বছর দূরদূরান্ত থেকে মায়ের ভক্তগন এখানে আসে । বছরের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন তিথি মেনে বিভিন্ন রূপে মায়ের পুজো হয়। তাই মা বর্গভীমাকে জাগ্রত দেবী বলেন এখানকার মানুষ। তাদের বিশ্বাস মা সব সময়ই জাগ্রত থাকেন ।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here