সুদীপ পাল, বর্ধমানঃ
বড়বেলুন গ্রামে পুজো করতে হয় এক রাতের মধ্যেই ১৮ হাত দেবী প্রতিমার রঙের কাজ সম্পূর্ণ করে। পুজো শেষ করতে হয় মশাল জ্বালিয়ে।
নিশুতি রাতে সবার অলক্ষ্যে হয় ঘট স্থাপন। পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতারের বড়বেলুন গ্রামের প্রায় ৬০০ বছরের প্রাচীন এই পুজোর সূচনা করেছিলেন সাধক ভৃগুরাম।
অকৃতদার ভৃগুরাম এই এলাকার শ্মশানের ধারে পর্ণকুটির তৈরি করে তিনি মাতৃ সাধন করতেন। মাতৃ সাধনা করতে করতে যৌবন অতিক্রান্ত হওয়ার পর, তিনি যখন বৃদ্ধ হলেন তখন দেবীই ভৃগুরামকে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে।
স্থানীয় লোকশ্রুতি অনুযায়ী, বিল্বপত্তনের রাজা নারায়ণচন্দ্র রায়ের কুমারী কন্যা সর্পাঘাতে মারা যান। বড়বেলুনের শ্মশানে মরদেহ দাহ করার জন্য নিয়ে আসা হয়।
দেহ নিয়ে আসার পরে শুরু হয় ব্যাপক ঝড়-বৃষ্টি। শ্মশানে দেহ রেখে একটু দূরে আশ্রয় নেয় কন্যার আত্মীয় পরিজন। ভৃগুরাম মৃতদেহের উপর শ্মশানের চিতাভষ্ম ছিটিয়ে দিলে রাজকন্যা বেঁচে ওঠেন।
আরও পড়ুনঃ কালীপুজোয় জমজমাট রানিগঞ্জ থেকে ইকড়া
কিন্তু পুনর্জন্ম পাওয়া সেই মেয়েকে সমাজ নিতে চায়নি। অবশেষে দেবীর নির্দেশ অনুসারে রাজকন্যাকে বিবাহ করেন ভৃগুরাম। বর্তমানে ভট্টাচার্য পরিবার এই পুজোর সেবায়েত। ৩৬ টি পরিবার ট্রাস্টি করে পুজো চালানো হয়।
দুর্গাপুজোর পর ত্রয়োদশীর দিন থেকে প্রতিমার কাঠামো তৈরি কাজের সূচনা হয়। ১৮ হাত উচ্চতার বড় কালীর জিহ্বা তৈরি হয় নতুন কুলো কেটে। রাতে মূর্তি গড়ার কাজ করার সময় জ্বালিয়ে রাখতে হয় মশালের আলো। ভাতৃদ্বিতীয়ার দিন ফোঁটা দিয়ে দেবীকে বিসর্জন দেওয়া হয় বড়দিঘিতে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584