ডাকাতের প্রবর্তিত কালী পুজো এখন সার্বজনীন

0
175

হরষিত সিংহ , মালদহঃ

ঘন জঙ্গলের মাঝে ডাকাত দলের কালী মায়ের আরাধনা বর্তমানে হয়ে উঠেছে সার্বজনীন পুজো। পুজো উপলক্ষে এখনো মালদহের হবিবপুর থানার জাজল পঞ্চায়েতের মানিকোড়া গ্রামে সাতদিন ব্যাপী চলে মিলন মেলার আসর। অনুষ্ঠিত হয় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও।কথিত আছে প্রায় ৩০০ বছর আগে পুনরভবা নদী পেরিয়ে একদল ডাকাত মশাল জ্বালিয়ে প্রথম মানিকোড়াতে মা কালীর পূজো শুরু করে ।বহু হাড়হীম করা কাহিনী রয়েছে এই মা কালীকে নিয়ে । তাই আজও নিষ্ঠার সঙ্গে মায়ের পুজো দিয়ে আসছেন গ্রামবাসীরা ।
মালদহের হবিবপুর থানার জাজল পঞ্চায়েতের আদিবাসী গ্রাম মানিকোড়া। প্রায় ৩০০ বছর আগে চারিদিক ছিল ঘন জঙ্গলে ভরা । অবিভক্ত বাংলাদেশ থেকে একদল ডাকাত পুনরভবা নদী পেরিরে প্রথম শুরু করেন এই মায়ের পুজো ।

প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত শিল্পী।ছবিঃঅভিষেক দাস

কথিত আছে রাতেই পুজো সেরে সূর্য উঠার আগেই ডাকাত দল ফিরে যেত নিজেদের ডেরায় ।তারপর দেশ ভাগের পর জমিদার ভৌরবেন্দ্র নারায়ন রায় এই মায়ের পুজোর দায়িত্ব নেন । ১০০ বছর আগে জমিদার ভৌরবেন্দ্র পুজোর দায়িত্ব তুলে দেন গ্রামবাসীদের হাতে । তখন থেকেই গ্রামবাসীরা মায়ের পুজো করে আসছেন ধূমধামের সঙ্গে । লোকমুখে কথিত আছে একবার চক্ষু দানের বলির সময় মা সামনের দিকে হেলে যায়। সেই সময় থেকে মাকে শেকল দিয়ে বেঁধে রাখা হতো । এখন শেকল দিয়ে বেঁধে না রাখলেও প্রথম বলির সময় মায়ের সামনে কাপড় দিয়ে দেওয়া হয় । যাতে প্রথম বলি মা দেখতে না পায় । শুধু তাই নয় গ্রামবাসীদের মতে জাগ্রত এই মাকে নিয়ে বহু কাহিনী রয়েছে । একবার এক শাঁখারি গ্রামে আসে শাঁখা বিক্রি করতে ।তখন একটি মেয়ে শাঁখারির কাছে শাঁখা পরতে চায় । শাঁখারি তাকে শাঁখা পরিয়ে দিয়ে পয়সা চায় । তখন মেয়েটি বলে যে তার কালী বাবা(সেবাইত)পয়সা দিয়ে দেবে। এই বলে মেয়েটি চলে যায় । সেই সময়ই কালী বাবা মন্দিরের কাছেই আসছিলেন । তার কাছে শাঁকারি পয়সা চেয়ে বলে যে তার মেয়ে শাঁখা পরেছে । অবাক হয়ে যায় কালী বাবা কারন তার তো কোন মেয়েই নেই ।তারপর মন্দিরের পাশেই পুকুরের দিকে চোখ চলে যায় দেখেন জলের উপরে শাঁখা সমেত দুটি হাত বের হয়ে রয়েছে । বুঝতে দেরী হয়না কালী বাবার যে মা কালীই শাঁখা পরেছে ।সঙ্গে সঙ্গে তিনি শাঁখারিকে দাম দিয়ে দেন । এমনি বেশ কিছু লোককথা রয়েছে প্রাচীন এই মা কালীকে নিয়ে। বর্তমানে মায়ের এই পুজো উপলক্ষে এই গ্রামে বসে বিশাল মেলা । বিভিন্ন ধরনের পসরা নিয়ে বসে দোকানিরা । নাগরদোলা এমনকি ছোটখাট সার্কাসও আসে এই মেলাতে ।শুধুমাত্র এই জেলাই নয় বিভিন্ন জেলা এমনকি অন্য রাজ্য থেকেও বহু মানুষ আসে মায়ের এই পুজো দেখতে । মায়ের পুজোর শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি চলছে জোর কদমে।

আরও পড়ুনঃ কৃষ্ণনগরে রাজ্য হস্তশিল্প মেলা উদ্বোধন

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here