খালিদ মুজতবা,মুর্শিদাবাদঃ
রানীনগর এলাকার চায়ের দোকানগুলোতে এখন কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে একটাই কথা,শেষ পর্যন্ত কামা ছয় ছয়টা খুনের খুনি ! অনেকের কাছে ঘটনাটি অবাস্তব হলেও ডাকাতির নেশায় ছয়টি খুন করেছে রাণীনগর থানার অন্তর্গত কালিনগর গ্রামের সর্বদা ‘ফিটফাট’ থাকা ছেলে কামরুজ্জামান সরকার।
যদিও সে বর্তমানে পূর্বস্থলী ১ ব্লকের গোয়ালপাড়ার বাসিন্দা।রবিবার বিকেলে কালনার সাধপুকুর এলাকার কাছে ধরা পড়ে একের পর এক ছয় মহিলা খুনের দুষ্কৃতী কামরুজ্জামান সরকার। বিবাহ সূত্রে বর্তমানে সে শ্বশুরবাড়ি পূর্বস্থলী ১ ব্লকের গোয়ালপাড়ার কাছে সুজননগরে থাকলেও তার আদি বাড়ি মুর্শিদাবাদের রানিনগর থানার অন্তর্গত কালীনগর ২ গ্রাম পঞ্চায়েত অন্তর্ভুক্ত ফারাজীপাড়া গ্রামে।
যদিও ছোট বেলা থেকে সে এখানেই বড়ো হয়েছে তবে পরিবারের দাবি,ছোট থেকেই কাজের সূত্রে বিদেশ থাকত সে।পরিবারের কারোর সঙ্গে কখনোই ভালো সম্পর্ক ছিলনা তার এবং প্রথম থেকেই কম কথা বলা ও একা থাকতে পছন্দ করত সে।
স্থানীয় বাসিন্দা লিটন মোল্লা বলছেন,” ছোট বেলা থেকেই বাড়ির কারো সাথে ওর তেমন মিল-মোহাব্বত ছিলনা। মাঝে মধ্যে বাইরে কাজে থেকে আসত,মোটরবাইকে করে ঘুরে বেড়াতো আর দামি দামি সিগারেট খেত। কি করত না করত কেও জানতো না। মাঝে মধ্যে শুনেছি নাকি চুরি টুরি করত। তবে গ্রামে তেমন কখনোই কিছু করেনি। বাইরে থেকে দেখে কখনো বোঝা যায়নি যে ও এতটা খারাপ কাজ করতে পারে তা।”
আরও পড়ুনঃ বাবার হাতে খুন ছেলে
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকটি বিয়ে করেছিলেন কামরুজ্জামান সরকার তবে শেষ বর্ধমানে বিয়ে করে প্রায় পনেরো বছর থেকে ওখানেই থাকত সে। মাঝে মধ্যে দশ-পনেরো দিনের জন্য বাড়িতে আসলেও বিগত দুই বছর আগে নিজের তৈরি বাড়িটা বিক্রি করে দিয়ে পাকাপাকি ভাবে এখান থেকে বিদায় নিয়েছে সে। কিন্তু মাসখানেক আগে বাবার শারীরিক অসুস্থতার কারণে বাবাকে দেখতে আসে কামরুজ্জামান ও তার স্ত্রী।
স্থানীয় মহিলাদের বক্তব্য, কামরুজ্জামানের স্ত্রীর গায়ে প্রচুর সোনার গহনা ছিল।সে বিষয়ে তার স্ত্রীর কাছে কিছু জানতে চাইলে কোন সদুত্তর পাওয়া যায়নি।
কিন্তু রবিবার পূর্ব বর্ধমান পুলিশের তৎপরতায় ধরা পড়ে যায় সিরিয়াল কিলার কামরুজ্জামান।প্রাথমিক জেরার মুখে সব স্বীকার করে নেয়। গত বছরের ৮ই অক্টোবর থেকে আজ পর্যন্ত সে ১৩ জন মহিলার উপর আক্রমণ চালিয়েছে এবং তাদের মধ্যে ৬ জন মহিলার মৃত্যু হয়েছে।পুলিশকে সে আরও জানিয়েছে রবিবার সে আরও একটি মহিলাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে লাল মোটরবাইক ও হেলমেট পড়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়।কিন্তু তার আগেই সে পুলিশের জালে ধরা পড়ে আজ তাকে আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠায় আদালত।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584