বদরুল আলম,মেদিনীপুর:-
অবসর প্রাপ্ত শিক্ষকের ছেলের বিয়ের প্রীতিভোজের মেনুকার্ডে প্রচার করছেন কণ্যাশ্রী প্রকল্পের ।কথায় বলে ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভাঙে। শিক্ষকতা জীবনে হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীদের পাঠ্য জ্ঞান বাদ দিয়েও সামাজিক বিভিন্ন বিষয়ে যেমন উপদেশ দিয়েছেন তেমনি আবার নিজেও সমাজের কথা ভেবে অবসর কালীন সময়ে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রুগীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন । ইনি হলেন গড়বেতার ফতেসিংপুরের সুভাষ চট্টোপাধ্যায় । ব্যানার্জীডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত সহ প্রধান শিক্ষক ।
একাধারে তিনি যেমন শিক্ষক তেমনই আবার কবি , সাহিত্যিক এবং সমাজ সেবিক । কলমের আঁচড়ে যেমন সৃষ্টি হয়েছে নানান কবিতা , গল্প সাহিত্য , তেমনই তাঁর সংস্পর্শে তৈরী হয়েছে অনেক অনেক ছাত্র ছাত্রী যারা আজ দেশ ছড়িয়ে বিদেশেও নিজেরা সুনামের সঙ্গে কর্তব্য পালন করছেন কর্মস্থলে । আবার তারই মধুর ভালোবাসায় এবং তৎপরতায় অনেক মা , বাবা ফিরে পেয়েছে তাদের সন্তান সন্ততি দের । সেই অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক সুভাষ বাবু তার নিজের ছোট ছেলের বিয়ের প্রীতিভোজেও একটু অভিনবত্ব আনলেন । গত ১৩ই অগ্রহায়ন তিনি তার ছোট ছেলে অভিক মঙ্গলের বিবাহ দেন গোয়ালতোড় থানার পিয়াশালা তে । গত কাল ছিল প্রীতিভোজ । সেই প্রীতিভোজে উপস্থিত অতিথি দের সামাজিক ভাবে সচেতনতা করতে তিনি মেনু কার্ডে খাদ্য তালিকার পাশাপাশি ‘রক্ত দিন প্রাণ বাঁচান ‘ , ‘নির্মল বাংলা – আমাদের অঙ্গিকার ‘ ‘কণ্যাশ্রী- আমাদের ভবিষ্যত ‘ ইত্যাদি সরকারি প্রকল্পের প্রচার করছেন ।
যে প্রকল্প সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করেও সঠিক ভাবে সচেতনতা করতে পারেনি সেই প্রকল্প গুলির প্রচার করছেন নিজের উপার্জনের টাকা খরচ করেই এবং তা হাসি মুখেই । এই ব্যাপারে সুভাষ বাবুর সহধর্মীনি অঞ্জলী চট্টোপাধ্যায় বলেন , ” স্বামীর এই ধরনের কাজে নিজেকে খুব গর্বিত মনে করি । সাংসারিক কারনে হয়তো বা স্বামীর সঙ্গে বাইরে গিয়ে সহযোগিতা করতে পারি না কিন্তু মন থেকে পূর্ণ সমর্থন থাকে ” । আর বড়ো ছেলে অনির্বান চট্টোপাধ্যায় বলেন , ” আসলে বাবা শিক্ষকতার সঙ্গে সঙ্গে গড়বেতার যে থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশন রয়েছে তার উপদেষ্টা । তিনি তার ছেলের বিয়েতে সামাজিক সচেতনতা প্রচার না করলে বরং একটু অবাক হতাম । বাবা যা করেন তাতে আমাদের পূর্ণ সমর্থন থাকে।” সুভাষ বাবুর ছোট ছেলের প্রীতিভোজে অথিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গড়বেতার বিধায়ক আশিষ চক্রবর্তী , সহ এলাকার বিশিষ্ট ব্যাক্তি বর্গরা । এই রকম একটি অনুষ্ঠানে সকল কে একত্রে পেয়ে এই প্রচার যে সাফল্য পাবে তা মনে করেন সুভাষ বাবু । তাঁর বক্তব্য , ” এই ভাবে যে টুকু সমাজের কাজ করা যায় সেটাই করার চেষ্ট করছি । অনেক অভ্যাগত অতিথি থাকছেন সকল কে নিয়েই এই সামাজিক সচেতনতা করতে চাই । ” আর যার প্রীতিভোজ সেই অভীক মঙ্গল চট্টোপাধ্যায় তিনিও গড়বেতার লেদাগামার বিধান চন্দ্র প্রাথমিক বিদ্যাপীঠের শিক্ষক । তাঁর বক্তব্য , “বাবার কাজে যেন আলাদা একটা অনুভুতি বোধ করি । তাই বাবার যে কোনো কাজ হাসি মুখেই পরিবারের সকলে মিলে মেনে নিই । ” আর পরিবারের নতুন পূত্রবধু নম্রতা দেবী বলেন , ” সত্যি শ্বশুর মশাই এর এই কাজ প্রশংসনীয় । আমি চেষ্টা করবো শ্বশুর মশায়ের কাজে সহায়তা করার ” ।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584