নিজস্ব সংবাদদাতা, ওয়েব ডেস্কঃ
বিহার ভোটে খারাপ ফল নিয়ে দলের ভিতরে ফের সরব কংগ্রেসের একাংশ। দলের আদ্যন্ত সংস্কারের পক্ষে সওয়াল করার সাথে সাথে শীর্ষ নেতৃত্বে বদলের দাবি তুলেছেন বর্ষীয়ান আইনজীবী নেতা কপিল সিব্বাল দলীয় সংগঠনের পুনর্মূল্যায়ন, পর্যালোচনা, শীর্ষ নেতৃত্বের মনোভাব বদলের মতো একাধিক দাবি তুলেছেন সিব্বল।
নেতৃত্বের উদাসীন মনোভাবকেও কাঠগড়ায় তুলেছেন তিনি। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, সিব্বলের নিশানায় মূলত গাঁধী পরিবার।সদ্য শেষ হওয়া বিহার নির্বাচনে তেজস্বী যাদবের আরজেডির সঙ্গে কংগ্রেস ও বামেদের মহাজোট হয়েছিল। ভোটে আগের বারের ৮০টি আসন ধরে রাখতে না পারলেও ৭৫টি আসন নিয়ে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আরজেডি। বামেরাও আগের বারের থেকে ৩টি আসন বেশি পেয়েছে,তাদের আসন সংখ্যা ১৬।
আরও পড়ুনঃ শপথ নিলেন নীতীশ, অনুষ্ঠান বয়কট তেজস্বীর
সবচেয়ে খারাপ ফল করেছে কংগ্রেস। আগের বারের ২৭ থেকে কমেছে ৮টি আসন। নির্বাচন বিশ্লেষকদের একাংশের মতে কংগ্রেসের এই খারাপ ফলের জন্যই বিহারে ক্ষমতা দখলের মতো অবস্থায় পৌঁছতে পারেনি মহাজোট।বিহারের ফলের পরে ফের দলের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন সিব্বল। একটি ইংরেজি দৈনিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, মানুষ যাঁদের কথা শুনতে চায় অর্থাৎ সাধারণ মানুষের কাছে যেসব নেতাদের গ্রহণযোগ্যতা আছে, তাঁদের তুলে আনা, সক্রিয় নেতাদের কাজে লাগানো, সংগঠনে আরও বেশি করে নজর দেওয়া ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে নানা সংস্কারের প্রয়োজন আছে।
আরও পড়ুনঃ বিহারের ভোটাররা ৭ লাখেরও বেশি ভোট দিয়েছে ‘নোটা’য়
নেতৃত্বের ঔদাসীন্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, দলের মধ্যে এমন একটা মনোভাব, যেন কিছুই হয়নি। একাধিক রাজ্যের উপনির্বাচনেও আশানুরূপ ফল নেই কংগ্রেসের। দলের আভ্যন্তরীণ বিভিন্ন বিষয়ে সমালোচনা করে রাজ্যসভার সাংসদ সিব্বল বলেন, যে সব রাজ্যে বিকল্প হিসেবে মানুষ কংগ্রেসকে চাইছেন, দল তাঁদের কোনো প্রত্যাশাই পূরণ করতে পারছেনা।
এই পরিপ্রেক্ষিতেই দলের ও নেতৃত্বের সংস্কার এবং পুনর্মূল্যায়নের দাবি তুলেছেন সিব্বল। তিনি বলেন, অন্তর্তদন্ত, আলোচনা পর্যালোচনা ছেড়ে কংগ্রেসকে সাহসী হতে হবে।গত অগস্ট মাসে কপিল সিব্বাল সহ শশী তারুর, গুলাম নবি আজাদের মতো নেতারা চিঠি লিখে এক গুচ্ছ প্রস্তাব দিয়েছিলেন দলকে। শীর্ষ নেতৃত্বে বদল আনা, দলকে নিয়ে নতুন করে ভাবনাচিন্তা করার মতো নানা পরামর্শ ছিল সেই চিঠিতে।
আরও পড়ুনঃ কালীঘাটে অগ্নিকান্ডে মৃত্যু বৃদ্ধার,আহত ১
সেই সময় সিব্বলের সঙ্গে বিজেপির ‘সখ্য’ নিয়েও জল্পনা তৈরি হয়েছিল। সেই সম্ভাবনা আগেই নস্যাৎ করে দিয়েছেন বর্ষীয়ান সাংসদ। তা হলে দলের মধ্যে থেকেও সমালোচনা কেন? সিব্বলের যুক্তি, দলে কোনও আলোচনা নেই, আলোচনার চেষ্টা পর্যন্ত নেই। তাই মতামত জানানোর জন্য একপ্রকার বাধ্য হয়ে সর্বসমক্ষেই মুখ খুলতে হয়। বিজেপি-যোগের সম্ভাবনা ফের উড়িয়ে দিয়ে সিব্বল বলেন, যে তিনি আগাগোড়া কংগ্রেসম্যান এবং তাই-ই থাকবেন,তবে তিনি আশা করেন যে কংগ্রেস তার ক্ষমতার বিকল্প উৎস সন্ধান করবে।
কংগ্রেস নিয়ে সিব্বলের যা পর্যবেক্ষণ সেটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন,কংগ্রেসের এখন আর সেই আগের মতো ক্ষমতা নেই। এখন আর এমন অবস্থা নেই যে, অন্যরাই দলের কাছে আসবে। তাই কংগ্রেসকেই সবার কাছে যেতে হবে। কারণ দলের প্রয়োজন আছে জোটের। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে সিব্বলের পরামর্শ, আগে দলীয় নেতাদের পর্যালোচনা করতে হবে, অভিজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। যাঁরা বোঝেন, দেশের কী অবস্থা, তাঁদের মতামত নিতে হবে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584