জয়জীবন গোস্বামী, বাঁকুড়াঃ
মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে আবারো ‘কার্নিভালে’র সাক্ষী থাকলো বাঁকুড়ার প্রাচীন পৌর শহর সোনামুখী।কালী পুজোর পর এবার কার্তিক।প্রাচীন রীতি মেনে রাতভর শহর জুড়ে দেবসেনাপতি কার্তিক প্রতিমা নিয়ে এই হালকা শীতের রাতেও শহরের রাস্তায় নামলো মানুষের ঢল। সঙ্গে সুদৃশ্য আতসবাজি আর সুমধুর বাদ্য যন্ত্রের সুরধ্বণী।
‘কালী-কার্তিকের দেশ’ বলে পরিচিত সোনামুখীতে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় দু’শো কার্তিক পুজো হয় এখানে।কিন্তু শোভাযাত্রা করে প্রশাসনের বিসর্জনের অনুমতি পায় মাত্র চল্লিশটি পুজো।সারা বাংলায় যেখানে কার্তিক সংক্রান্তিতে এক রাতের কার্তিক পুজো,সোনামুখীতে সেই চিত্রটা সম্পূর্ণ ভিন্ন।এখানে টানা চার দিন পুজো হয়।তারপর সারা রাত ব্যাপী বিসর্জনের শোভাযাত্রা। সেই প্রাচীন ঐতিহ্য মেনে প্রশাসনের তরফে ঠিক করে দেওয়া নির্দিষ্ট পথ ধরে বুধবার সারা রাত ধরে প্রতিমা সহযোগে রংবেরঙের আতসবাজি আর বাদ্যযন্ত্র সহযোগে শহর পরিক্রমা।অবশেষে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পর্যায়ক্রমে একের পর কার্তিক প্রতিমা বিসর্জনের কাজ শুরু হলো।
বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ছ’নাগাদ প্রশাসনের তৈরী করে দেওয়া সূচী মেনে সোনামুখী চৌমাথায় প্রথমে নিয়ে আসা হলো বাউরী পাড়া কার্তিক।তারপর একে একে শিশু কার্তিক,বড় কার্তিক, লোহারপাড়া কার্তিক, নিমতলা কার্তিক, ডেঙ্গো কার্তিক, লালবাজার কার্তিক, মাইতো কার্তিক, শিখা কার্তিক, বটতলা কার্তিক, নীল বাড়ি কার্তিক, বকুলতলা কার্তিক,গুঁই পাড়া কার্তিক,মহিষগোঠ কার্তিক,পানপাড়া কার্তিক,রুদ্র পাড়া কার্তিক অবশেষে ভোর তিনটে নাগাদ এলো ঘুরুণী কার্তিক।
শোভাযাত্রা সহকারে কার্তিক বিসর্জন বা কার্তিক কার্নিভাল যাই বলা হোকনা কেন মানুষের উৎসাহ আর উদ্দীপনা ছিল চোখে পড়ার মতো। সোনামুখীর গণ্ডী ছাড়িয়ে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কাতারে কাতারে মানুষে এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এবছরও তার অন্যথা হলোনা।শীতের রাতকে তুড়ি মেরে সারা রাত সোনামুখীর রাজপথেই কাটালেন মানুষ।
পুলিশ ও প্রশাসনের তরফে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছিল।বাঁকুড়া জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নিশ্চ্ছিদ্র নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছিল সোনামুখী শহরকে।একই সঙ্গে সোনামুখী থানার পক্ষ থেকে সারা রাত ধরে বেশ কয়েকটি অ্যাম্বুল্যান্স মোতায়েন রাখা হয়েছিল।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584