সল্টলেকে অতিথিশালার ঘটনার প্রতিবাদে সরব কৌশিক, জয়

0
84

শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ

শুরুটা হয়েছিল ২০১৪ সালে খাগড়াগড় বিস্ফোরণের সময় থেকেই। ওই ঘটনা তদন্তে বেশকিছু মাদ্রাসার নাম উঠে আসায় তখন থেকেই মাদ্রাসা শিক্ষকদের সন্দেহের চোখে দেখতে শুরু করেছিলেন অনেক স্থানীয় মানুষজন।

এখনও অনেকেরই ধারণা, মাদ্রাসাগুলিতে ধর্মীয় শিক্ষার বদলে জঙ্গিবাদী প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। আর এই ধারণা বদলের ক্ষেত্র থেকে ধর্মীয় পরিচয়ের জন্য সল্টলেকের একটি অতিথিশালা থেকে বের করে দেওয়া হল মালদহের বাসিন্দা ১০ জন মাদ্রাসা শিক্ষককে। এমনটাই অভিযোগ করেছেন শিক্ষকেরা।

বিতাড়িত শিক্ষকবৃন্দ। নিজস্ব চিত্র

জানা গিয়েছে, কাজের সূত্রে বিকাশ ভবনে আসার জন্য আগেভাগেই সল্টলেকের ডি এল ব্লকের ওই অতিথিশালা ঘর বুক করে রেখেছিলেন। সেইমতো সোমবার সকালে তাঁরা অতিথিশালায় পৌঁছান। কিন্তু অতিথিশালার তরফে জানানো হয়, কোনও ঘর ফাঁকা নেই। তাঁদের সি এল ব্লকের একটি অতিথিশালায় পাঠানো হয়।

তিন ঘণ্টা পর সেই অতিথিশালাও ছেড়ে দিতে বলা হয় বলে অভিযোগ শিক্ষকদের। মুখে কিছু না বললেও মুর্শিদাবাদের আল-কায়েদা জঙ্গি ধরা পড়ার ঘটনার পর থেকেই মাদ্রাসা শিক্ষকদের অতিথিশালায় রাখতে ভয় পাচ্ছেন, এমনটাই জানিয়েছেন অতিথিশালা কর্তৃপক্ষ।

Guest house | newsfront.co
অতিথিশালা। নিজস্ব চিত্র

এদিকে কোথাও কোন ঘটনার সাথে যোগ সূত্র না থাকলেও এভাবে শুধুমাত্র মাদ্রাসা শিক্ষক হওয়ার জন্য বার করে দেওয়ায় চরম অপমানিত বোধ করেছেন ওই মাদ্রাসা শিক্ষকরা।

আরও পড়ুনঃ রাজ্য পুলিশকে না জানিয়ে সরাসরি তল্লাশি, এনআইএ পূর্বাঞ্চলীয় কর্তাকে চিঠি ডিজি বীরেন্দ্রর

কৃষ্ণপুর মাদ্রাসা এডুকেশন সেন্টারের প্রধান শিক্ষক সাদেক আলি জানান, দীর্ঘ শিক্ষক জীবনে তিনি কখনও এরকম অপমানের মুখে পড়েননি। জাহাঙ্গির আলি নামে আরও একজন মাদ্রাসা শিক্ষকের কথায়, ‘কলকাতায় এরকম অপমানিত হতে হবে, তা আমরা কখনও ভাবতেও পারেননি।’

বিষয়টি নিয়ে বিধাননগর পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়। সংশ্লিষ্ট গেস্ট হাউসের কর্তৃপক্ষের দাবি, আশপাশের লোকজনের আপত্তি ছিল বলে এটা ঘটেছে। ঘটনায় দু’টি গেস্ট হাউসের নাম উঠে এসেছে। একটি ডি এল ৩৯-এর বাড়ি, অন্যটি সি এল ১৬৪-র বাড়ি।

আরও পড়ুনঃ হর্ষবর্ধন লোধাকে অপসারণের পর ৮ শতাংশের বেশি শেয়ারপতন এমপি বিড়লার

সি এল ১৬৪ বাড়ির গেস্ট হাউস থেকে ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তদন্তে নেমে পুলিশ দেখে, ওই গেস্ট হাউসের রেজিস্টারের খাতা থেকে আশ্চর্যজনক ভাবে ২০ ও ২১ সেপ্টেম্বরের তারিখের পাতাগুলি উধাও! পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে বলে জানা গিয়েছে।

Kausik Sen | newsfront.co
কৌশিক সেন

শহরের বুদ্ধিজীবী বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব কৌশিক সেন বলেন, ‘আল কায়েদা সংযোগের যে ঘটনা ঘটেছে এ রাজ্যে, তার দায় কোনও নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের ওপর পড়তে পারে না। নাম বা পদবির জন্য কারও এই অবস্থা, এটা ভয় পাওয়াচ্ছে।’

Jay Goswami | newsfront.co
জয় গোস্বামী

কবি জয় গোস্বামী বলছেন, ‘এ রাজ্য থেকে আল কায়েদার জঙ্গিদের ধরা পড়াটা আকস্মিক আঘাতের মতো। কিন্তু তার জেরে মাদ্রাসার শিক্ষকদের সন্দেহের আওতায় নিয়ে আসা হল, এটা ঠিক নয়।’

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here