শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
লকডাউনে দীর্ঘদিন মদের দোকান বন্ধ থাকায় প্রবল বিপদ আর চিন্তা বেড়ে গিয়েছিল বহু সুরা প্রেমীদের। নিয়মিত পানাসক্তদের শরীরে চলে আসছিল খিঁচুনি আর মেজাজ হয়ে যাচ্ছিল খিটখিটে। বাড়িতে যেটুকু স্টক করে রাখা ছিল, তাও সপ্তাহখানেকের মধ্যে শেষ হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় বুধবার দুপুরে আচমকা বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল এবং নিউজ পোর্টাল মদের হোম ডেলিভারির খবর পেয়ে মনের মধ্যে যেন দপ করে আলো জ্বলে উঠেছিল বহু সুরা প্রেমীদের। তাদের জন্যও এতটা ভাবে সরকার! কিন্তু ঘণ্টাদু’য়েকের মধ্যেই সব আশা শেষ।
আরও পড়ুনঃ মাস্ক, স্যানিটাইজারের কালোবাজারি বন্ধে পদক্ষেপ, স্বাস্থ্য দফতরের
বুধবার দুপুরে আচমকাই একটি খবর রটে যায়, কলকাতায় বাড়িতে বাড়িতে মদের হোম ডেলিভারি দেওয়া হবে। সকাল ১১ টা থেকে দুপুর ২ টোর মধ্যে সাধারণ মানুষ তাদের নিকটবর্তী লাইসেন্স প্রাপ্ত মদের দোকানে ফোন করে মদের অর্ডার দিতে পারবেন। দুপুর ২ টা থেকে বিকেল ৫ টার মধ্যে সেই পরিমাণ মদ বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে যাবে মদের দোকানদার। বাড়িতে টাকা মিটিয়ে দিতে পারবেন গ্রাহক। নিজের দোকান থেকে গ্রাহকের বাড়িতে মদ পৌঁছানোর সময় যাতে রাস্তায় সমস্যা না হয়, তার জন্য নিকটবর্তী থানায় ই-পাসের আবেদন করতে হবে সংশ্লিষ্ট দোকানদারকে। এটাও জানিয়ে দেওয়া হয়, থানা থেকে একজন দোকানদারকে ন্যূনতম তিনটির বেশি ই-পাস দেওয়া যাবে না। সমস্ত পাস গুলিতে সংশ্লিষ্ট থানার অফিসার ইনচার্জ এবং ডিভিশনাল ডেপুটি কমিশনারের সই থাকতে হবে।
এত গুছিয়ে খবর প্রকাশ হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই প্রবল খুশি হয়ে যান সুরাপ্রেমীরা। এমনিতেই ১৫ এপ্রিল লকডাউন উঠে যাবার সম্ভাবনা নেই বলে বিভিন্ন মহল থেকে খবর আসছে। এই পরিস্থিতিতে যদি বাড়িতেই মদের জোগান আসে, তাহলে লকডাউন যতদিন চলুক, অন্তত বাড়িতে আয়েশ করে বেশ কয়েকটা দিন কাটিয়ে দেওয়া যাবে বলে খুশি হয়ে যান সকলে।
আবগারি দফতর থেকে এমন খবর প্রকাশ করা হয়েছে বলে খবর পৌঁছে যায় অনেকের কাছে। অনেকে হোয়াটসঅ্যাপে দাবি করতে থাকেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই রাজ্যে মদ বাবদ বিপুল রাজস্ব আয় করে। তাই পানবিলাসী এবং প্রশাসনিক যৌথ স্বার্থেই পুনরায় বাড়িতে মদের যোগান দেওয়ার মত জনহিতকর চিন্তা ভাবনা চালু করা হয়েছে। কিন্তু মাত্র ঘন্টা দুয়েকের মধ্যেই সমস্ত আশায় জল!
বুধবার বিকেলে কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা জানিয়ে দেন, কলকাতায় মদের হোম ডেলিভারির অনুমতি দেবে না পুলিশ। পুলিশের তরফে এরকম কোনও অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়। আর সঙ্গে সঙ্গে ফের দুঃখের সাগরে ডুবে যান রাজ্যের তামাম সুরাপ্রেমী। কেন এই নির্দেশ আসার পরেও তা বদল করা হলো বা তুলে নেওয়া হল, তার কারণ জানার চেষ্টা করেন অনেকে। কিন্তু তাতে আর কোনও লাভ হয়নি। পান বিলাসীরা রয়ে যেতে বাধ্য হন সেই পুরনো তিমিরেই।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584