সাইবার নিরাপত্তায় জোর! কলকাতা পুলিশের ৯ ডিভিশনেই সাইবার ল্যাব খুলছে লালবাজার

0
106

শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ

একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য জুড়ে ভুয়ো মেসেজের মাধ্যমে রাজনৈতিক অপপ্রচার থেকে দাঙ্গা-হাঙ্গামা বাধানোর চেষ্টা সাইবার মাধ্যমেই হতে পারে, তা অনুধাবন করে রাজ্য পুলিশ এবং কলকাতা পুলিশে সাইবার নিরাপত্তা আরও জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

Lalbazar police | newsfront.co
ফাইল চিত্র

তার সেই নির্দেশকে মাথায় কলকাতা শহরে সাইবার সুরক্ষা আরও জোরদার করতে এবার শহরের ৯ টি পুলি়শ ডিভিশনেই ‘সাইবার ল্যাব’ খুলতে চলেছে কলকাতা পুলিশ। শহরের কোথাও কোন সাইবার অপরাধ ঘটলে যাতে সকলকে লালবাজার ছুটে আসতে না হয়, তার জন্যই এই নয়া পরিকল্পনা বলে জানা গিয়েছে।

প্রসঙ্গত, লকডাউনের সময় অন্যান্য অপরাধের মাত্রা অনেকটাই কমে গেলেও সাইবার অপরাধের মাত্রা প্রায় ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, এমনটা বলছেন লালবাজারের কর্তারাই। আর সাধারণ মানুষকে সাইবার মাধ্যমে আর্থিক প্রতারণার অপরাধের হার শহরে সবচেয়ে বেশি।

আরও পড়ুনঃ ভিভিআইপি-দের যাতায়াতে লাইফলাইন তৈরিতে মা ফ্লাইওভারে ৪৫দিনের মধ্যে নতুন হাইট-বার

অনেক সময় দেখা যাচ্ছে, কেউ না জেনে আর্থিকভাবে প্রতারিত হওয়ার পরেও স্থানীয় থানায় গেলে সেই থানার ওসি তাকে লালবাজারে পাঠাচ্ছেন। লালবাজারে অভিযোগ জানাতে কেটে যাচ্ছে অনেকটা সময়। ততক্ষণে অপরাধীকে ধরার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যাচ্ছে। শুধু তাই নয় এই দীর্ঘসূত্রতার সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় একসঙ্গে অনেককে প্রতারণা করা সুযোগ পাচ্ছে প্রতারকরা।

তাই সাধারণ অপরাধের ক্ষেত্রে মানুষ যেমন চট করে পুলিশকে পাশে পান ঠিক সেভাবেই সাইবার অপরাধের ক্ষেত্রে ও যাতে দ্রুত কিনারা সম্ভব হয়, তার জন্য পরিকল্পনা মাফিক প্রত্যেকটি ডেপুটি কমিশনারের অফিসে একটি পৃথক সাইবার ল্যাব রাখতে চাইছে কলকাতা পুলিশ। পুজোর আগেই যাতে সেগুলি চালু করা যায়, তার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন পুলিশের শীর্ষ কর্তারা।

আরও পড়ুনঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আত্মীয় পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের নতুন পর্যবেক্ষক

বর্তমানে কলকাতা পুলিশের একটি মাত্র সাইবার থানা রয়েছে, যা রয়েছে লালবাজারে। সারা শহর মিলিয়ে এখন ৪০০-৫০০ টি অভিযোগ সেখানে জমা পড়ে। সাইবার থানার সঙ্গে থাকা সাইবার ল্যাবটিতে অভিযোগের এত বিপুল পাহাড় হয়ে যায় যে, লালবাজারের সীমিত সংখ্যক কর্মী নিয়ে খুব দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না।

তার ওপর কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যক্তিরা পরিস্থিতি ভিত্তিক অপরাধের কিনারা করতে গিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলা তদন্ত পিছিয়ে যায়। সেই কারণেই সাইবার লেভেলে বিকেন্দ্রীকরণের পরিকল্পনা নিয়েছেন লালবাজারের কর্তারা। ডিভিশনাল সাইবার ল্যাবে প্রাথমিক সমস্যা মিটলে লালবাজারের মূল সাইবার ল্যাবেও চাপ অনেকটাই কমবে বলে আশা কর্তাদের।

আরও পড়ুনঃ বিশ্বভারতীতে শেষ সেমেস্টারের পরীক্ষা হবে অনলাইনে

সাইবার থানায় সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো প্রোফাইল খুলে তাতে অশালীন ছবি-ভিডিও পোস্ট করে হুমকি থেকে ভুয়ো সাইট তৈরি করে অনলাইন জালিয়াতি সংক্রান্ত সাইবার অপরাধের তদন্তে অভিযুক্তের মোবাইল বা কম্পিউটারের হার্ড ডিস্ক থেকে প্রায়ই তথ্য উদ্ধারের জন্য সাইবার ল্যাবের প্রয়োজন হয়। এ বার থেকে এমন কাজ প্রতিটি ডিভিশনের নিজস্ব ল্যাবেই হয়ে যাবে।

প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, প্রতিটি ল্যাবরেটরিতে চার-পাঁচ জন করে সাইবার বিশেষজ্ঞ থাকবেন। তাদের অধীনে আরো কিছু শিক্ষানবিশ সাইবার কর্মী থাকতে পারেন। বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে তাদের যাচাই করে বেছে নেওয়া হবে। সঙ্গে থাকবেন প্রশিক্ষিত পুলিশকর্মীরাও।

তারা ডিভিশনের সাইবার ল্যাবের সঙ্গে লালবাজারে মূল সাইবার ল্যাবের সমন্বয় এবং সংযোগ রক্ষা করে চলবেন। খুব জটিল কোনোযও সাইবার মামলা হলে তা লালবাজারের মূল সাইবার ল্যাবের মাধ্যমে করা হবে। এভাবেই শহরের সাইবার নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে চায় লালবাজার।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here