পিয়ালী দাস, বীরভূমঃ
কাটমানির ভাগাভাগি নিয়ে শহরের দুই তৃণমূল নেতার মোবাইলে কথোপকথনের অডিও ফাঁস করল সিপিআই(এম)। কাটমানি রাজ খতম কর-এই আওয়াজ তুলে বৃহস্পতিবার গণ অবস্থানে সামিল হয়ে সিপিআই(এম) এই অডিও টেপ প্রকাশ করতেই শোরগোল পড়েছে রামপুরহাট শহরজুড়ে। বাংলার আবাস যোজনা, একশো দিনের কাজ, থেকে তোলা কাটমানি ফেরত দিতে হবে এই দাবি নিয়ে এদিন গণ অবস্থানে বসেন বহু মানুষ। সামিল হয়েছিলেন শহর ও গ্রামে কাটমানির আদায়ের খপ্পরে পড়া প্রতারিতরা। সেই অবস্থান মঞ্চ থেকেই চাঞ্চল্যকর অডিও টেপ প্রকাশ্যে এনে সিপিআই(এম)র এক প্রতিনিধি দল অডিও টেপটি রামপুরহাট মহকুমা শাসক এবং থানায় জমা দিয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
কি শোনা গেছে ওই অডিও টেপে ? অডিওতে রামপুরহাট পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অমল শেখের সঙ্গে কথা হচ্ছে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের স্বামী তথা রামপুরহাট শহর তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি সৌমেন ভকতের। ওই অডিও কথোপকথনে এক সাংবাদিক, পৌরসভার কয়েকজন বাস্তুকার এবং ঠিকাদারের নাম উঠে এসেছে। অডিওর শুরুতে কোনো এক জনকে জব্দ করতে দুজনকে কথা বলতে শোনা গেছে। শোনা গেছে, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের জন্য বরাদ্দ সকলের জন্য বাড়ি প্রকল্পের ১৮ লক্ষ টাকা ভাগাভাগি নিয়ে একগুচ্ছ কৌশলের কথাও।
উল্লেখ্য, রামপুরহাট শহরে একমাত্র এই ১৭ নম্বর ওয়ার্ডেই রয়েছেন সিপিআই(এম)-র কাউন্সিলর। স্বাভাবিকভাবেই বরাদ্দ থেকে বঞ্চিত এই ওয়ার্ডটি। এছাড়াও একটি প্রকল্পে এক কোটি ১৫ লক্ষ টাকা মেরে খাওয়ার উল্লেখ রয়েছে অডিওতে। আরও একাধিক প্রকল্পে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করার স্পষ্ট কথোপকথন ও চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নেওয়ার কথাও দুই নেতার মধ্যে শোনা গেছে ওই অডিও রেকর্ডে।
এমনই কথোপকথনে ‘সমৃদ্ধ’ প্রায় দশ মিনিটের একটি সিডি প্রকাশ্যে এনে সিপিআই(এম)-র জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সঞ্জীব বর্মণ বলেন,‘কাটমানি যে তৃণমূল নেতারা খেয়েছেন তার বড় প্রমান অডিও বার্তা। তবে আমরা ওই অডিওর সত্যতা যাচাই করিনি। পরীক্ষা করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছি মহকুমা শাসক এবং রামপুরহাট থানায়। সরকারি প্রকল্পে কাটমানি ছাড়াও কয়লা, বালি পাচার এবং পাথরের কারবার থেকেও লক্ষ লক্ষ টাকা তোলা আদায় করেছে তৃণমূল। সব টাকা ফেরত চাই।’
১৭ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিআই(এম)-র কাউন্সিলর সঞ্জীব মল্লিক বলেন,“তৃণমূল আবাস যোজনার বাড়ির টাকা কিভাবে খেয়েছে তা অডিওতে পরিস্কার।আমার ওয়ার্ডে আমাকে অন্ধকারে রেখে বাড়ি নির্মাণ করে কাটমানি খেয়েছে। যার পরিমান ১৮ লক্ষ টাকা। ওই টাকা পৌরসভা নির্বাচনে আমার ওয়ার্ডে খরচ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছি।’’
আরও পড়ুনঃ শিক্ষক নিগ্রহের প্রতিবাদে সতীঘাটে পথ অবরোধ এবিভিপির
এদিকে ওই কণ্ঠস্বর তার নয় বলে দাবি করেছেন তৃণমূল নেতা সৌমেন ভকত।তিনি মানহানি মামলা করার হুমকি দিয়েছেন। অমল শেখ ফোন ধরেন নি। রামপুরহাট পৌরসভার তৃণমূলের চেয়ারম্যান অশ্বিনী তেওয়ারি বলেন, “ওই অডিও আমিও শুনেছি। অডিওর কণ্ঠস্বর আদৌ কাউন্সিলর কিংবা আরেক কাউন্সিলরের স্বামীর কিনা বলতে পারব না। প্রশাসন তদন্ত করে দেখুক।’’
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584