পিয়ালী দাস,বীরভূমঃ
রাজনীতির লোক নন অথচ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মত চষে ফেলছেন গ্রামের পর গ্রাম। পাকা রাস্তা ধরে, রাঙ্গামাটি লাল পথ দিয়ে, পৌঁছে যাচ্ছে ভোটারদের বাড়ি, এমনই দৃশ্য দেখা গেল রবিবাসরীয় সকালে।
বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে বামফ্রন্ট প্রার্থী রেজাউল করিম ধীরে অথচ সোজা শিরদাঁড়া নিয়ে শাসকদলের শব্দ সন্ত্রাস কে উপেক্ষা করে প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছেন ভোট প্রচারে।গ্রামের মানুষদের ফুল মালার মাধ্যমে উষ্ণ অভ্যর্থনা সাদরে গ্রহণ করে এগিয়ে চলেছেন একের পর এক মানুষের কাছে।এবারের প্রচারে সিপিএম প্রার্থী রেজাউল করিম মানুষকে বেশি কিছু বলছেন না,শুধু বলছেন কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকার যে মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ তা খুব সহজেই বোঝা যাচ্ছে।গত ৫ বছর ধরে কেন্দ্রে বিজেপি সরকার যে একের পর এক ভাওতার স্বপ্ন দিয়েছে,জাত, ধর্ম নিয়ে যে নিকৃষ্ট মানের খেলায় মেতেছে তার অবসান করার ডাক দিচ্ছেন সি.পি.এম প্রার্থী। তিনি প্রচার এগিয়ে বলছেন রাজ্যে সাত বছর ধরে যে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আছে তাদের নোংরামো, টাকা লুট, বিশ্বাস লুঠ এবং সর্বোপরি ধামাধরা উন্নয়নের এক গল্পের প্রেক্ষাপট তৈরি করে,মিথ্যার ফানুস দিয়ে মানুষকে বোকা বানিয়ে যেভাবে কেন্দ্রে বিজেপির সাথে আঁতাত করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করছে তার বিপক্ষে ধর্মনিরপেক্ষ এবং শ্রমিক স্বার্থ রক্ষার দায়িত্ব পূর্ণ ভাবে পালন করার জন্য বাম প্রার্থীকে জয়ী করার আহ্বান দিচ্ছেন রেজাউল করিম।কাঁধে একাধিক লাল পতাকা নিয়ে সি.পি.আই.এম কর্মীরা যেভাবে প্রচার সারছে তাতে ইতিমধ্যে কপালে ভাজ পড়তে শুরু করেছে শাসক দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে।তৃণমূল কংগ্রেসের বীরভূম জেলার সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল অবশ্য দাবি করেন, যারা পাগল তারাই নাকি সি.পি.এমকে দেখতে পায়, যাদের কাজ নেই তারা কংগ্রেসকে দেখতে পায়, বিজেপি সে আবার কোন দল তাকে তো বীরভূমের আদ্যপ্রান্ত কোন জায়গাতেই খুঁজে পাওয়া যায় না।প্রশ্ন এখান থেকেই যদি বিরোধীরা নাই থাকবে,কেন তবে এত লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিচ্ছে কর্মীদের।তাদেরকে মানুষ যদি খুঁজে না পায়, দেখতে না পাওয়া যায়,তাহলে অনুব্রত মণ্ডল যাকে কিনা বাংলার বাঘ বলে তকমা দেওয়া হয়েছে, কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বারবার উল্লেখ করে দেন কখনো ছ’লক্ষ, আবার কখনো চার লক্ষ,সর্বশেষ তিনি তৃণমূল কর্মীদের উদ্দেশ্যে লক্ষ্য দিয়েছেন বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে ১৩ লক্ষ মানুষ ভোট দিতে পারলে তার মধ্যে ১১ লক্ষ ভোট যেন তৃণমূল কংগ্রেসের ভোটব্যাংকে পরে, এই টার্গেট দেখে কর্মীদের মাথায় হাত,ইতিমধ্যে অনেক কর্মী বলতে শুরু করেছেন,দাদা কি হিসাব করে বলেছেন?
আরও পড়ুনঃ রায়গঞ্জে ক্ষমতায় আসতে প্রচারের ময়দানে প্রার্থীরা
বিরোধীরা অবশ্য কটাক্ষের সুরে বলেছেন আসলে অনুব্রত বাবু বুঝতে পারছেন না বা হয়ত ভুলে গেছেন একজন প্রার্থী কত ভোট পায়।বিজেপি জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় বলেন, ‘উনার লক্ষ্যমাত্রা শুনে বড্ড হাসি পেয়ে গেল, তৃণমূল কর্মীরা এবার আত্মহত্যার পথ বেছে না নেয়,সুস্থভাবে যদি বাঁচতে চান তৃণমূল কর্মীরা তাহলে অবিলম্বে বিজেপি চলে আসুন এবং সম্মানের সঙ্গে রাজনীতিটা করুন।’
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584