কৌশিক ভট্টাচার্য,নিউজডেস্কঃ
ট্রেনের ভেতর যে রীতিমতো হাসপাতাল থাকতে পারে তা ‘লাইফলাইন এক্সপ্রেস’ না দেখলে বিশ্বাস হবে না। এই ট্রেনেই আছেন একদল দক্ষ চিকিৎসক এবং মেডিক্যাল স্টাফেরা। মজুত বিভিন্ন জীবনদায়ী ওষুধও। প্রত্যন্ত অঞ্চলের দরিদ্র মানুষদের কাছে চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দেওয়াই লাইফলাইন এক্সপ্রেসের লক্ষ্য। চিকিৎসা পরিষেবা ছাড়াও ট্রেনটি দুরবর্তী এলাকায় ত্রাণ নিয়ে যাওয়ার কাজেও এই বিশেষ ট্রেনটি ব্যবহার করা হবে বলে জানা গিয়েছে৷
ট্রেন যাত্রা শুরু করেছে ১৫ জুন। ৬ জুলাই পর্যন্ত বিভিন্ন রুটে পরিভ্রমণ করবে৷ পরে উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুরে বেশ কিছু গ্রামীণ এলাকায় পরিষেবা দেবে।

এই হাসপাতাল ট্রেন চালানোর উদ্যোগ নেয় ‘ইম্প্যাক্ট ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। লাইফলাইন এক্সপ্রেস বা জীবনরেখা এক্সপ্রেস পরিচালনার দায়িত্ব যৌথভাবে নেয় রেলমন্ত্রক এবং কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। এই রেল হাসপাতালে ২০ জন স্থায়ী প্যারামেডিক আছেন৷ এর বাইরে স্থানীয় মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে স্বেচ্ছাসেবী ভিত্তিতে চিকিৎসকরা কাজ করেন৷ ভারতীয় রেলের এই ট্রেনটির শীতাতপ-নিয়ন্ত্রিত কামরাগুলি বিশেষ ভাবে তৈরি করা। প্রতিটি ট্রেনে দু’টি করে অপারেশন থিয়েটার আছে। রয়েছে তিনটি অপারেটিং টেবিল, একটা জীবাণুমুক্ত করার ঘর। এই ট্রেনে নিয়মিত বিভিন্ন সার্জিক্যাল অপারেশন হয়। সাধারণ হাসপাতালে যেমন কর্মী আবাসন থাকে, এই ট্রেনেও স্বাস্থ্যকর্মীদের থাকার আলাদা জায়গা আছে।

মূলত, লাইফলাইন এক্সপ্রেসটি দরিদ্র মানুদের বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান করবে৷ ট্রেনের মধ্যে থাকবে বিশেষ একটি মেডিক্যাল টিম৷ ট্রেনের মধ্যে ছোটোখাটো অপারেশন-সহ ক্যানসার আক্রান্ত রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসাও করা সম্ভব৷ রোগীর পরিস্থিতি ভাল না হলে প্রযোজনে তাকে শহরে নিয়ে উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
প্রাথমিক ভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে, গ্রামীণ এলাকায় পৌঁছে প্রায় এক মাস শিবির করে চিকিৎসা পরিষেবা দেবে ওই লাইফলাইন এক্সপ্রেস৷ সেখানে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা থেকে শুরু করে ওষুধ বিলি ও জন্মনিয়ন্ত্রণে সচেতন করা হবে এলাকার মানুষকে৷

রেল পথ রয়েছে, এমন গ্রামীণ অঞ্চলে নতুন এই পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ছিল লাইফলাইন এক্সপ্রেসের চাকা৷ ১৯৯১ সালে প্রথম এই পরিষেবা চালু হলেও আর্থের অভাবে থমকে ছিল৷ পরে লাইফলাইন এক্সপ্রেস চালাতে উদ্যোগী হয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা৷ ইউনিসেফের আর্থিক সহযোগিতায় নতুন করে প্রাণ পায় লাইফলাইন এক্সপ্রেস৷ দীর্ঘ ১৯ বছর পর ১৯১টি গ্রাম ছোঁয়ার লক্ষ্যে আগামী সপ্তাহে যাত্রা শুরু করছে ৭ কামরার নয়া লাইফলাইন এক্সপ্রেস৷
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584