পিয়ালী দাস, বীরভূমঃ
বিশ্বভারতীর ইতিহাসের এক কলঙ্কময় অধ্যায় লেখা হল সোমবার সকালে। বর্তমান উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর হিটলারি শাসনের প্রতিবাদে রাস্তায় নামলেন কয়েক হাজার ক্ষিপ্ত জনতা, ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল বিশ্বভারতীর গেট। ঘটনার সূত্রপাত দিন কয়েক আগেই।
বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী ঘোষণা করেন, পৌষ মেলার মাঠ উঁচু প্রাচীর দিয়ে ঘিরে ফেলা হবে। এই সিদ্ধান্ত জানাজানি হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী থেকে শুরু করে আশ্রমিক ,অধ্যাপক, ছাত্রছাত্রীসহ, বোলপুরের সাধারণ মানুষ।
আগুনে ঘৃতাহুতি পরে শনিবার সকালে যখন বিশ্বভারতীর নির্দেশে এক ঠিকাদার প্রাচীরের কাজ শুরু করতে যায় তখন বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতির তরফ থেকে বাধা দিয়ে ঠিকাদারকে হটিয়ে দেওয়া হয়। সেদিনের মত কাজ বন্ধ থাকলেও রবিবার সকাল বেলায় উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বিশ্বভারতীর সমস্ত অধ্যাপক শিক্ষক কর্মীদের নিয়ে বড় মিছিল করে মাঠে প্রাচীরের কাজ শুরু করে।
প্রাচীরের বিরোধিতা করে আন্দোলনরত সাধারণ মানুষ সংখ্যায় কম থাকলে সেই সময় পিছু হটে যায়, কিন্তু সোমবার সকাল হতেই হাজার হাজার মানুষ পথে নামে বিশ্বভারতীর উপাচার্যের এই ঘৃণ্য সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে। রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে বিশ্বভারতী এলাকা।
আরও পড়ুনঃ আধুনিক প্রযুক্তি ছাড়া চালানো যাবে না ইটভাটাঃ ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল
সাধারণ মানুষের ক্ষোভের আঁচে গুড়িয়ে যায় শান্তিনিকেতন থেকে বিশ্বভারতী ঢোকার মুখের বড় গেট, ভেঙে ফেলা হয় প্রাচীর সহ প্রাচীর তৈরীর সমস্ত সামগ্রী। এদিনের উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিলে পা মেলায় বহু সাধারণ মানুষ, বিশ্বভারতীর প্রবীণ আশ্রমিকরা। এমনকি নজরে আসে হুইলচেয়ারে করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক এই বিক্ষোভে সামিল হোন।
আরও পড়ুনঃ বিশ্বভারতীতে বিশৃঙ্খলা, টুইট রাজ্যপালের
বিশ্বভারতীর প্রাক্তন ছাত্র নরেশ বাউরির জানান,”এই উপাচার্যকে অবিলম্বে বিশ্বভারতী থেকে সরিয়ে নেবার জন্য আচার্যের কাছে আমরা অনুরোধ করছি। বিশ্বভারতীর ইতিহাসে এই ধরনের কলঙ্কময় দিন কখনো আসেনি। একজন উপাচার্যের বিরুদ্ধে কাতারে কাতারে মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদে সামিল হচ্ছে। বিশ্ববাসীর কাছে লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে। নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করা শুরু করেছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী।”
বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী শুভলক্ষ্মী গোস্বামী জানান, আমরা বিশ্বভারতী কে খোলা চোখে দেখতে অভ্যস্ত গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের যে স্বপ্ন সেই স্বপ্নকে পরম্পরায় আমরা অতিবাহিত করতে চাই। তাই এই প্রাচীরে ঘেরা বিশ্বভারতী আমরা দেখতে চাই না। জেলবন্দি বিশ্বভারতী কখনোই বিশ্বভারতীর কাম্য নয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আদর্শকে জলাঞ্জলি দিয়ে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিশ্বভারতীকে বিক্রি করে দিচ্ছে। এমনই অভিযোগ প্রাক্তনীদের। তবে প্রকাশ্যে কেউ মুখ খুলতে চাইছেন না। এই মুহূর্তে প্রত্যেকেই প্রযুক্তির উপর নজর রেখে পরে তাদের বক্তব্য জানাবে বলে মন্তব্য করছেন।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584