রাজ্যের অর্থনৈতিক পরিকাঠামোর চালন ক্ষমতা লকডাউনে আজ ভঙ্গুর, দাবি আদায়ে পথসভা

0
59

নিজস্ব সংবাদদাতা, হাওড়াঃ

লকডাউনের জেরে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল এশিয়ার বৃহত্তম বস্ত্রশিল্পের কেন্দ্র মঙ্গলা হাট সহ মেটিয়াবুরুজ এবং মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা হাট। ফলে এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হাওড়া, উত্তর-দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, হুগলী, মেদিনীপুর সহ পশ্চিমবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকার ১৩ লক্ষ বাঙালি দর্জি সহ ২ কোটির বেশি ছোট ওস্তাগর, জরি ও এমব্রয়ডারি শিল্পী, হোলসেলার, রিটেলারের জীবন জীবিকা আজ প্রশ্নের মুখে।

protest | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

অন্যান্য বছর চৈত্র সেল, পয়লা বৈশাখ থেকে ঈদ পর্যন্ত এই হাওড়া, মেটিয়াবুরুজের হাট থেকে বাংলার দর্জি ভাই বোনেদের বানানো পোষাক ভারতের ৮৫% মধ্যবিত্ত সহ এশিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে যে রেডিমেড জামার ব্যবসার রমরমা বাজার চলতো এবছর লক ডাউনের জেরে ব্যবসা তো দুরস্ত দুবেলা দুমুঠো খাবারটুকুও কষ্টে জুটছে। দক্ষিণবঙ্গের হাওড়ার বাকড়া, ধুলাগড়, অঙ্কুরহাটি, ডোমজুড়, হুগলী, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার আক্রা, সন্তোষপুর, ক্যানিং, মগরাহাট, ঘুটিয়ারি শরিফ এবং মেদিনীপুরের যে দর্জি ভাই ও বোনেরা সামান্য কিছু পুঁজি সঞ্চয় করে হাটে গদি লিজে নিয়ে ব্যবসা করছিল লকডাউনে কর্মীদের বেতন দিতে আর নিজের খাদ্যের সংস্থান করতে তাদের শেষ সম্বল টুকুও বেরিয়ে যাচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ কোচবিহারের সিএমওএইচ-র ঘরের সামনে ধরনায় বহুমুখী পুরুষ স্বাস্থ্যকর্মীরা

এই সেক্টর সারা বছর ধরে যেভাবে নিয়মিত রাজ্যের অর্থনৈতিক কাঠামোকে মজবুত করে থাকে তাতে এই শ্রেণী পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম অর্থনৈতিক শক্তি এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।

একই রকম দুরাবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে বাংলার অসংখ্য তাঁতী ও হোসিয়ারী শিল্পের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকেরা। নদীয়ার শান্তিপুর ও ফুলিয়া তাঁত কেন্দ্র দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। তাঁতীরা তাদের তাঁত বিক্রি করতে পারেনি, মহাজনরা সঠিক মজুরি দিচ্ছে না। আগামী দিনে কাজ করার পুঁজি, খাদ্য সামগ্রী ও জীবিকার জন্য প্রয়োজনীয় বস্তু কেনায় ব্যয় হয় যাচ্ছে। অন্য দিকে হোসিয়ারী শ্রমিকদের অনেকের মাইনে বন্ধ করে দিয়েছে মালিকেরা।

দর্জি, ওস্তাগর, তাঁতী ও হোসিয়ারী শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষার্থে আজ ১০ সেপ্টেম্বর পথে নামলো জাতীয় বাংলা সম্মেলনের অসংগঠিত শ্রমিক সংগঠন বঙ্গীয় শ্রমিক সম্মেলন। পথে সভা হল আয়োজিত হল হাওড়ার অঙ্কুরহাটি হাটে। বঙ্গীয় শ্রমিক সম্মেলন বস্ত্রশিল্পী শ্রমিকদের স্বার্থে ৮ দফা দাবি রেখেছে রাজ্য সরকারের কাছে।

আরও পড়ুনঃ মাটিগাড়ায় ভাঙন এলাকা পরিদর্শনে জেলা শাসক

এদিনের পথসভায় বঙ্গীয় শ্রমিক সম্মেলনের সদস্যবৃন্দ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় বাংলা সম্মেলনের সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধব্রত দাস, সহযোদ্ধা অতনু সিংহ ও রেজাজরু রেহমান মোল্লা। সিদ্ধব্রত দাস বললেন “কেন্দ্রীয় সরকার কর্পরেটদের হাজার হাজার কোটি টাকা লোন দিতে দুবার ভাবে না, কিন্তু শ্রমজীবী ভাই বোনদের পাশে দাঁড়ানোর কথা ভুলে যায়। শ্রমজীবী ভাই বোনেরা টাকা নিয়ে বিদেশ পালায় না, সরকারের প্রিয় কর্পোরেটরাই পালায়। তাই অবিলম্বে এই করোনা পরিস্থিতিতে কম সুদে ঋণের ব্যবস্থা করুক সরকার”।

আগামী দিনে বঙ্গীয় শ্রমিক সম্মেলন এই সকল দাবি নিয়ে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে কর্মসূচি নেওয়ার কথা চিন্তা ভাবনা করছে। রাজ্য সরকারের কাছে তাদের দাবি নিয়ে যাওয়ারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সংগঠনের তরফ থেকে।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here