সুদীপ পাল,বর্ধমানঃ
কিত-কিত খেলা কি জানা নেই।জানা নেই ধাপসা খেলার নিয়মও।আধুনিক সভ্যতার ছোঁয়ায় এই ধরনের ‘লোকক্রীড়া’ হারিয়ে যেতে বসেছে বাংলা থেকে। বর্ধমানের শহর শুধু নয় গ্রামের বাচ্চারা আর পরিচিত নয় এই ধরনের খেলাগুলি নিয়ে।বর্ধমানের বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব ফণিভূষণ মুখার্জি বলেন, ‘এক সময় এই খেলাগুলি খুব জনপ্রিয় ছিল। এর সাথে চোর-পুলিশের খেলা কিংবা বুড়ি ছোঁয়া এগুলিও ছিল নিত্যদিনের সঙ্গী।এগুলি ছাড়াও অনেকে বাঘবন্দি খেলতেন চণ্ডীমণ্ডপে বসে।
এখন এই দৃশ্যগুলি অলীক মনে হয়। আধুনিকতার ছোঁয়ায় খেলাগুলি হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের জীবন থেকে।’ বর্ধমানের অমরারগড় গ্রামের বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএড পাঠরত কার্তিক সাহা বলেন, ‘আমার ছোটবেলা কেটেছে গ্রামে।সেখানে মার্বেল খেলেছি। ডাংগুলি খেলেছি। ডাংগুলি খেলায় আঘাত লাগার সম্ভাবনা থাকে তবুও ডাংগুলি খেলার মজাই ছিল আলাদা।এখন অবশ্য সেই দৃশ্য সচরাচর চোখে পড়ে না। সবাই ব্যস্ত।’কেন হারিয়ে যাচ্ছে এই ধরনের খেলাগুলি? শুধু কি আধুনিকতার ছোঁয়ায়?এক্ষেত্রে বলা হচ্ছে খুব ছোট থেকেই শিশুরা মোবাইল বা কম্পিউটারে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে।
আরও পড়ুনঃ শেরপুরে বন্ধন শিক্ষা কর্মসূচির বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজন
ইন্টারনেটের যে জগত, তাতে হারিয়ে যাচ্ছে তাদের শৈশব। আর তার প্রভাব দেখা যাচ্ছে তাদের জীবনেও। একটু বড় হলেই মরনখেলা ব্লু হোয়েল এর মত গেমে তারা আসক্ত হচ্ছে। শুধু তাই নয় এই লোকক্রীড়াগুলি খেলতে গেলে অনেকের সাথে একসাথে খেলতে হতো।তাতে সামাজিক চেতনা আসত কিন্তু ইন্টারনেটকেন্দ্রিক মানসিকতা গড়ে ওঠার ফলে একা বাঁচার প্রবণতা গড়ে উঠছে শিশুদের মধ্যে।
বর্ধমানের গৃহবধূ সঙ্গীতা তরফদার বলেন,’এই সমস্যার সমাধান করতে হবে বাড়ি থেকে এবং বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে।অনেক সময় দেখা যায় বিদ্যালয় থেকে ফিরেই শিশু মোবাইল নিয়ে বসে।বাড়ির লোককে এ ক্ষেত্রে সচেতন হয়ে তাকে খেলার মাঠে পাঠাবার ব্যবস্থা করতে হবে। বিদ্যালয়েও নিয়মিত খেলার ব্যবস্থা থাকলে এই মানসিকতার বদল ঘটবে।’
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584