পীড়িত-আর্তদের সেবায় ‘বাইক অ্যাম্বুলেন্স দাদা’

0
90

নিজস্ব সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ারঃ

‘বাইক আ্যম্বুলেন্স দাদা’— এই কথাটা সামনে এলেই দেশবাসীর পদ্মশ্রী জয়ী করিমুল হকের কথা মাথায় আসে। নিজের নুন আনতে পান্তা ফোরানোর সংসার হলেও আর্তের সেবায় ঘরের খেয়ে, বনের মোষ তাড়ানোকে মজ্জাগত করে ফেলেছেন আরও একজন।

Md. Akram | newsfront.co
অ্যাম্বুলেন্স বাইকে মহঃ আক্রম। নিজস্ব চিত্র

পদ্মশ্রী করিমুল হক ছাড়াও আর একজন রয়েছেন, যিনি দীর্ঘ তিন বছরের বেশি সময় ধরে নিঃস্বার্থ ভাবে জনগণের সেবা করে যাচ্ছেন। তবে কোনওদিনই প্রচারের আলোয় আসেননি তিনি, আসতেও চান না।

আরও পড়ুনঃ মেদিনীপুরে এবিটিএ’র শতবর্ষ উদযাপনের সূচনা

মাদারিহাট ব্লকের প্রত‍্যন্ত দলদলি এলাকার বাসিন্দা মহঃ আক্রম, পেশায় টোটো চালক। প্রথম অবস্থায় তিনি টোটো দিয়ে জনগণের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন। দীর্ঘ এক বছর ধরে টোটোরিক্সা করে মাদারিহাট ব্লকের প্রত‍্যন্ত এলাকার বাসিন্দাদের স্বাস্থ্য পরিষেবা দিয়েছেন।

Ambulance Bike | newsfront.co
স্থানীয় বাসিন্দার সাথে আক্রম। নিজস্ব চিত্র

কিন্তু নিজের টোটোরিক্সা না হওয়ায় রাতে পরিষেবা দিতে সমস‍্যা হতো আক্রমের। তাই নিজের কষ্টে জমানো কিছু টাকা দিয়ে একটি পুরনো বাইক কিনে সেই বাইকটিকেই আ্যম্বুলেন্স বানিয়ে বর্তমানে স্বাস্থ্য পরিষেবা দিচ্ছেন আক্রম বাবু।

মাদারিহাট ও কালচিনি ব্লকের প্রত‍্যন্ত এলাকায় তাঁর বাইক আ্যম্বুলেন্সের সাহায্যে বিগত তিন বছর ধরে পরিষেবা দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। সকালে, সন্ধ্যায় ও রাতে যে কোনও মুহূর্তে ডাক পড়লেই বাইক আ্যম্বুলেন্স নিয়ে ছুটে যান আক্রম। এমনকী যেকোনও জায়গায় দুর্ঘটনার খবর আসলেও ছুটে যান তিনি।

এ বিষয়ে আক্রমকে জিজ্ঞেস করা হলে, উনি আবেগপ্রবণ হয়ে জানান, চার বছর আগে তার পুত্র সন্তান আলিপুরদুয়ার হাসপাতালে ভর্তি ছিল। চিকিৎসকরা শিলিগুড়ি নিয়ে যেতে বলেছিলেন। কিন্তু সেই রাতে একটিও আ্যম্বুলেন্সও পাননি তিনি।

সেই রাতেই মারা যায় তাঁর পুত্র সন্তান। তারপরে তিনি প্রতিজ্ঞা করেন গ্ৰামীণ আ্যম্বুলেন্স তৈরি করার। প্রথমে টোটোতে করেই আ্যম্বুলেন্স পরিষেবা প্রদান করতেন। পরবর্তীতে বাইকে পরিষেবা প্রদান করা শুরু করেন তিনি।

জানা গেছে, ছোটো গলি বা চা বাগান এলাকায় আক্রমের বাইক সহজেই পৌঁছে যায় ৷ তিন বছরে প্রায় ৪০০-র বেশি রোগীকে হাসপাতালে পৌঁছে দিয়েছেন আক্রম ৷ কখনও প্রাথমিক চিকিৎসার কাজও করেছেন। তাঁর এই সেবাকাজের জন্য মাদারিহাট ব্লক প্রশাসন থেকে এ বছর ছাত্র যুব উৎসবে তাকে বিশেষভাবে সন্মানিতও করা হয়।

আক্রম বাবুর ওই কাজকে সন্মান জানিয়েছেন মাদারিহাট ব্লকের বাসিন্দারা। তারা জানান যে কোনও সময় প্রয়োজনে ছুটে আসে আক্রম, রোগীদের নিয়ে যায় হাসপাতালে।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here