৬২৪ বছরের ইতিহাসে প্রথম রথের চাকা গড়াল না মাহেশে

0
65

মোহনা বিশ্বাস, হুগলিঃ

করোনা পরিস্থিতির কারণে ৬২৪ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম হুগলির মাহেশে জগন্নাথদেবের রথের চাকা গড়াল না। তবে সকাল থেকে রীতি মেনেই পুজো হচ্ছে মন্দিরে। গর্ভগৃহ থেকে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রাকে মন্দিরের চাতালে নিয়ে এসে রাখা হয়েছে। সকাল থেকে সেখানেই চলছে পুজোপাঠ। মন্দিরের ভিতরে শুধুমাত্র সেবায়েত ও পুরোহিতরা রয়েছেন। প্রতিবছর লাখ লাখ ভক্তের সমাগম হয় মাহেশের রথযাত্রায়।

Mahesh rathyatra | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

লক্ষ্য করা যাচ্ছে, এবছর করোনা আবহের জন্য সেখানে ভক্ত সমাগম অনেকটাই কম। অনেক ভক্তই পুজো দেওয়ার জন্য উপস্থিত হয়েছেন মন্দিরের সামনে। তাই স্বাস্থ্যবিধি ও সরকারি সবরকম নির্দেশিকা মেনেই ২৫ জন করে মন্দিরের ভিতরে প্রবেশ করানো হচ্ছে। মন্দিরের পাশেই অস্থায়ী মাসির বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। সেখানেই রাখা হবে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে।

আগামী আট দিন ধরে সেই মাসির বাড়িতেই থাকবেন জগন্নাথদেব। পয়লা জুলাই উল্টো রথে আবার সেখান থেকে মূল মন্দিরে নিয়ে আসা হবে জগন্নাথ, সুভদ্রা ও বলভদ্রকে। এবছর জগন্নাথের বদলে নারায়ণ শিলা যাবে আসল মাসির বাড়ি। অর্থাৎ মাহেশে এত বছর যে মাসির বাড়িতে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার রথ যেত সেই মাসির বাড়িতেই এবার নারায়ণ শিলা যাবে।

আরও পড়ুনঃ আজ ঘরে বসেই কলকাতা ইসকনের রথযাত্রা দেখবেন ভক্তরা

দুপুর ৩ টের সময় রথে পুজো হবে। সাড়ে ৩ টের সময় নগর সংকীর্তন করে নারায়ণ শিলাকে নিয়ে যাওয়া হবে জগন্নাথের মাসির বাড়ি। রথ যাত্রায় এখানে ভোগ হিসেবে থাকে পোলাও, খিচুড়ি, আলুরদম, ধোঁকার ডালনা, পনীর ও পায়েস। সোজা রথ থেকে উল্টো রথ অবধি প্রতিদিনই নানা রকমের পদ রান্না করে দেওয়া হয় জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা’কে।

আরও পড়ুনঃ গবেষকদের ফেলোশিপের ভাতা বাড়াল ইউজিসি

উল্লেখ্য, মাহেশের রথের উচ্চতা ৫০ ফুট। গোটা রথটি লোহার তৈরি। তিনতলার এই রথের নাম নব নীলাচল। শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু একাধিকবার এই রথ যাত্রায় অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি মাহেশের নাম দেন নব নীলাচল। সেই অনুযায়ী মাহেশের রথ নীলাচল রথ নামেই পরিচিত। প্রথম যখন মাহেশে রথযাত্রার সূচনা হয়েছিল তখন রথ ছিল নিম কাঠের। শ্যামবাজারের বসু পরিবারের সাথে মাহেশের অধিকারী পরিবারের দীর্ঘ দিনের যোগাযোগ। তারা জগন্নাথ মন্দিরের সেবক।

১৩৫ বছর আগে যখন এই কাঠের রথে ক্ষয় ধরতে শুরু করে। তখন তারা ইচ্ছা প্রকাশ করেন নতুন রথ তৈরি করে দেবেন। এরপরই মাহেশের কাঠের রথটি বদলে লোহার রথ তৈরি করে দিয়েছিলেন বসু পরিবারের বংশধরেরা। সেইসময় তিনতলার লোহার রথটি তৈরি করতে খরচ হয়েছিল ২০ হাজার টাকা। জানা যায়, শ্রী চৈতন্যদেব, রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবও মাহেশের এই রথের রশিতে টান দিয়েছিলেন।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here