নিজস্ব সংবাদদাতা, পূর্ব মেদিনীপুরঃ
তিনি তাপস পাল। আজ আর নেই। পরিচিতি লাভ করেছিলেন সিনেমা জগৎ দিয়ে। জীবনের শেষ পথে রাজনীতিতে এসে কালিমালিপ্ত হলেও সিনেমা জগতের তার সুখ্যাতি কোন অংশেই কমে যায়নি। আর তাই তার মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ হল পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলের রাজপরিবার।
রাজবাড়ীর অন্দরে অলিগলিতে তিনি ছবির শুটিং করতে গিয়ে ঘুরে বেরিয়েছিলেন। বেশ কটা দিন কাটিয়েও ছিলেন এই বাড়িতেই। আর তখনই পরিচয় হয় রাজবাড়ীর সদস্য ও পরিচারিকাদের সাথে।
মঙ্গলবার ভোররাতে প্রয়াত অভিনেতার মৃত্যুর খবর রাজবাড়িতে এসে পৌঁছাতেই শোকস্তব্ধ হয়ে যায় গোটা রাজবাড়ী সদস্যরা।
প্রয়াত অভিনেতার বেশ কয়েকটি সিনেমায় আজও সাক্ষী রয়েছে মহিষাদল রাজবাড়ি। সালটা ২০১২ সে সময় রাজীব কুমার বিশ্বাস পরিচালিত বাংলা সিনেমা ‘খোকা ৪২০’ এর শুটিং হয় রাজবাড়ীতে। সিনেমায় তিনি বাবার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন।
টাইট সিডিউল থাকায় কলকাতায় ফিরে না গিয়ে রাজবাড়ীতে থেকেই টানা কয়েক দিন শুটিং সেরেছিলেন। পরে ২০১৩ সালে রাজবাড়ীতেই শুটিং হয় তাপস পাল অভিনিত খিলাড়ি সিনেমাও। সে সময় গ্রামের বহু দূর-দূরান্ত থেকে অভিনেতাকে দেখতে প্রতিদিনই রাজবাড়ী চত্বরে ভিড় জমাতেন এলাকার বাসিন্দারা।
অভিনেতা হওয়া সত্ত্বেও সে সময় তিনি এলাকার সাধারণ মানুষের সাথে মিশে গিয়েছিলেন নিবিড় ভাবে। আবার প্রডিউসারকে অনুরোধ করে এলাকার একাধিক মহিলাকে সুযোগ করে দিয়েছিলেন সিনেমায় অভিনয়ের। যার ফলে মহিষাদলবাসীর বহু মানুষের কাছে তাপস পাল আজও সুখস্মৃতির স্মৃতির সাক্ষী।
প্রায় দুই পুরুষ ধরে মহিষাদল রাজবাড়িতে পরিচারিকার কাজ করে চলেছেন স্থানীয় বাসিন্দা স্বপন চক্রবর্তীর পরিবার। তাপস বাবুর শুটিংয়ের সময় রাজবাড়ী তরফ থেকে সর্বক্ষণের সঙ্গী ছিলেন তিনি। তাই তাপস পালকে ঘিরে স্মৃতিটা অনেক বেশি।
কয়েক দিনের সঙ্গীর মৃত্যুর খবর পেয়ে শোকস্তব্ধ হয়ে তিনিও জানান, রাজ পরিবারের সাথে তাপস বাবুর একটা ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল। যে কারণে উনি রাজবাড়ির দোতালায় থাকতেন। এখানে আসার আগে শুনেছিলাম উনি খুব অহংকারী।
আরও পড়ুনঃ হিমঘরে তোলার আগেই আলুর পরিচর্যার নিদান
একসাথে থাকার সুযোগ পেয়ে বুঝতে পারলাম উনি খুব সহজ-সরল একটা মানুষ। দীর্ঘদিন শারীরিক ভাবে অসুস্থ থাকার পর চলে যাওয়ার খবরটা পেয়ে খুব খারাপ লাগছে। তাপস পালের হাত ধরেই সিনেমায় প্রথম অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছিলেন মহিষাদলের বাসিন্দা পাপিয়া গুমট্যা।
তাপস পালের মৃত্যু মেনে নিতে পারেননি তিনিও। তাঁর কথায় উনি যখন মহিষাদলে এসেছিলেন তখন একবার আমি ওনার সাথে একসাথে নাচ করার সুযোগ পেয়েছিলাম। সে সময় উনি খুব খোলামেলাভাবেই আমাদের সাথে মিশেছিলেন।
ওনার মৃত্যু মন থেকে মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে।রাজপরিবারের সদস্য হরপ্রসাদ গর্গ জানিয়েছেন, পারিবারিক সম্পর্ক থাকার কারণে ওনাকে আমরা দীর্ঘদিন ধরেই চিনতাম। ‘দাদার কীর্তি’ র মতো সিনেমার স্রষ্ঠা এভাবে চলে যাবে ভাবতেই পারছিনা।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584