পঞ্চাশোর্ধ মহিলার প্রাণ ফেরালো মালদা মেডিক্যাল

0
145

নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদাঃ

হাতুড়ে চিকিৎসকদের ভুল চিকিৎসায় স্বাভাবিক জীবন হারাতে বসেছিলেন বছর পঞ্চাশের মমতাজ বিবি। মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসকেদের প্রচেষ্টায় ফিরে পেলেন স্বাভাবিক জীবন। এখনও চিকিৎসা চলছে তার, অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠেছেন তিনি।

malda medical college and hospital proper treatment to patient | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

কিছুদিনের মধ্যেই তিনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যেতে পারবেন বলে জানা গেছে। বিরল চিকিৎসার অস্ত্রোপচারে সফল মহিলা বিভাগের চিকিৎসকেরা।

হাতুড়ে চিকিৎসকের খপ্পরে পড়ে হারিয়ে গেছিল ওই মহিলার স্বাভাবিক জীবন-‌যাপন। ভুল চিকিৎসার ফলে তাঁর মূত্রথলি ও জনিপথ পুড়ে গিয়ে দুটি পথ মিলে গিয়ে একটিই পথে পরিণত হয়ে পড়ে। ফলে ২৪ ঘন্টায় তাঁর প্রস্রাব হয়ে যেত।

malda medical college and hospital proper treatment to patient | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

১২ বছর ধরে ভুল চিকিৎসার খেসারত দিতে হচ্ছিল তাঁকে। মেডিক্যাল কলেজের মাতৃমা বিভাগের চিকিৎসকদের প্রচেষ্টায় বিনে পয়সায় এখন তিনি নতুন জীবনের দোরগোড়ায় প্রায়। অস্ত্রোপচারের পর অনেকটাই সুস্থ তিনি। ভুক্তভোগী ওই মহিলার নাম মমতাজ বিবি(‌৫০)‌। চাঁচল থানার ধানগাড়া গ্রামে বাড়ি তাঁর। স্বামী জোহর আলি পেশায় চাষি।

গরিব পরিবারে তাঁর ৪ ছেলে ও ২ মেয়ে নিয়ে সংসার। জানা যায়, প্রায় ১২ বছর আগে তাঁর পুত্র সন্তান হওয়ার পর থেকে জরায়ুতে পোলাপস দেখা যায়। অর্থাৎ নাড়ি বের হয়ে আসে। শরন্নাপন্ন হন স্থানীয় এক হাতুড়ে চিকিৎসকের। সরষের দানার মতো ওষুধ লাগাতে বলা হয় তাঁকে। তাঁর ৩ দিনের মাথা থেকে নতুন করে সমস্যা তৈরি হয়। অনর্গল প্রস্রাব হয়ে যায়। বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয় চিকিৎসা। মমতাজের কথায়,‘‌বাথরুমে যাওয়ার দরকার পড়ে না আমার।

আরও পড়ুনঃ ‘স্বীকৃতি সংবর্ধনা’ নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে

বাড়িতি শাড়ি রাখতে হয় আমাকে। তাছাড়া পরিবারে ছেলে, মেয়েদের মধ্যে এরকম হয়ে যায়, লজ্জার বিষয় ব্যাপারটা। কোথাও গিয়ে থাকা যায় না। বাড়িতেই ২৪ ঘন্টা। বহু জায়গায় চিকিৎসা হয়েছে। মালদা থেকে বিহার, বহু টাকাও খরচ হয়েছে, শেষে আমরা হাল ছেড়ে দিয়েছিলাম।

পরে মালদা মেডিক্যালের খবর পাই আমি।’‌ মাস তিনেক আগে মালদা মেডিক্যালের চিকিৎসা দেখে ধীরে ধীরে তাঁরা চিকিৎসা শুরু হয়। শেষে মাতৃমা বিভাগের ইউনিট-‌সি’‌র চিকিৎসকদের সাহায্যে বিরল অস্ত্রোপচার করা হয়। নেতৃত্বে ছিলেন মলয় সরকার।

এছাড়াও ছিলেন জয়দেব মন্ডল, দিব্যেন্দু রায় এবং সুনিত সরকার। ইউনিট প্রধান মলয় সরকার জানান,‘‌কবিরাজি ওষুধ প্রয়োগের সময় অ্যাসিড দেওয়া হয়। তার ফলে মুত্রথলি ও জনিপথ পুড়ে গিয়ে একটিই পথ তৈরি হয়। ফলে সব সময় প্রস্রাব হয়ে যায়।

প্লাস্টিক সার্জারি অফ ইউরানারি ব্লাডার-‌র মাধ্যমে সারিয়ে তোলা হয়। অর্থাৎ মূত্রথলিটি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মেরামত করা হয়। অন্যদিকে, জনিপথেরও একই ভাবে ক্ষতপূরণ করা হয়। এবার থেকে নিজের ইচ্ছে মতো প্রস্রাব করতে পারবেন উনি। এখনও চিকিৎসা চলবে কিছুদিন। তারপর পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবেন।’‌

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here