শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
বিধানসভা নির্বাচনের আগে ফের মাস্টার স্ট্রোক মমতার। বাড়ি-সহ পুরোহিত ভাতার ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। যাঁরা গরিব পুরোহিত, দরিদ্র সনাতনী ব্রাহ্মণ, হয়তো সারা বছর খুব বেশি পুজো পান না, আর্থিক সমস্যায় রয়েছেন, তাঁদের কথা মাথায় রেখে পুরোহিত ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এরকম ৮০০০ পুরোহিতের তালিকা আমরা পেয়েছি। তাঁদের মাসে হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।’ পাশাপাশি, যাঁদের বাড়ি নেই তাঁদের বাংলার আবাস যোজনার বাড়ি দেওয়া হবে।
বিরোধীদের অভিযোগ, রাজ্যে শিল্প আসুক না আসুক, কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকুক না থাকুক, যে কোনও ক্ষেত্রেই ভাতা দিতে বরাবর তৎপর মুখ্যমন্ত্রী। তবে অনেক ক্ষেত্রেই গরিব অসহায় শিল্পী বা মানুষদের তিনি ভাতা দিয়ে সাহায্যও করেছেন।
আরও পড়ুনঃ শিলিগুড়ির মহিলা টোটো চালকের ভূমিকা প্রশংসিত উপরাষ্ট্রপতির টুইট বার্তায়
সম্প্রতি কৃষক ও মৎস্যজীবীদের জন্যও ২০০০ টাকা করে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এর আগের শুধুমাত্র ইমাম ভাতা ঘোষণা করায় বিরোধী দলের অনেকেই মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মুসলিম তোষণের অভিযোগ তুলেছিলেন। কিন্তু ওরা হিন্দু মুসলিম নিরিখে সকল রাজ্যবাসী যে তার কাছে সমান, তা এদিন পুরোহিত ভাতা এবং বাংলা আবাস যোজনায় বাড়ি ঘোষণা মাধ্যমে জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “সনাতন ধর্মের অনেকেই একটা অনুরোধ করেছেন তাঁদের জন্য তীর্থস্থান গড়ে দেওয়ার জন্য। আমরা তা গড়ার জন্য কোলাঘাটে জমি চিহ্নিত করেছি।” সব মিলিয়ে হিন্দুদের অপ্রাপ্তি নিয়ে যাতে কোনোভাবেই বিজেপি ধর্মীয় মেরুকরণের চেষ্টা না করতে পারে, তার জন্য এদিন বার্তা দিয়ে রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুনঃ ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা পাক বাংলাও, হিন্দি দিবসের শুভেচ্ছায় আবেদন মুখ্যমন্ত্রীর
এছাড়াও সোমবার হিন্দি ভাষা দিবসে রাজ্য সরকার সমস্ত ভাষার প্রতি কতটা দায়িত্বশীল, তাও বোঝার চেষ্টা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “আমরা ২০১১ সালেই একটি হিন্দি অ্যাকাডেমি গঠন করেছিলাম, আজ হিন্দি অ্যাকাডেমি কমিটিও গঠন করছি। এছাড়া দলিত সাহিত্য অ্যাকাডেমিও গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
বিভিন্ন প্রাচীন উপজাতির ভাষা ও সংস্কৃতির কথা লেখা যে ৩ হাজার পাণ্ডুলিপি বিষ্ণুপুরের জাদুঘরে আছে, তা ডিজিটাইজ করারও সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাংলার বিভিন্ন প্রাচীন ধর্মস্থানের বা হেরিটেজের ম্যাপিংও করা হবে। ম্যাপিংয়ের পরে সরকার মনে করলে কোনও ধর্মস্থানকে হেরিটেজ হিসেবে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য গ্রহণও করতে পারে।
আরও পড়ুনঃ পরিবেশ রক্ষার্থে নিউটাউনে তৈরি হচ্ছে আমলকি বন
এছাড়াও এবার দুর্গাপুজোয় প্যান্ডেল খোলা মেলা করার পরামর্শ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার করোনা সঙ্কট মোকাবিলায় রাজ্য সরকার গঠিত গ্লোবাল অ্যাডভাইসরি কমিটির বৈঠকের পর নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কমিটির সদস্যরা পুজো নিয়ে একটা ‘ভাল’ পরামর্শ দিয়েছে। ওঁরা বলেছেন, হাওয়া বাতাস ঢোকার জন্য পুজো প্যান্ডেল খোলা রাখলে ভাল হবে। তাতে জীবাণু থাকলে বেরিয়ে যাবে। তাই ঢাকা প্যান্ডেলে ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা না রেখে খোলামেলা প্যান্ডেল রাখা ভালো।”
তিনি বলেন, তার মানে সবটা খোলা থাকবে এমন নয়। যেখানে দুর্গা প্রতিমা থাকবে সেই জায়গাটা তো ঢাকাই থাকবে। কিন্তু মানুষ যেখানে দাঁড়িয়ে অঞ্জলি দেবেন, যেখানে দাঁড়িয়ে ঠাকুর দেখবেন সেই জায়গাটা খোলা রাখতে হবে। এবার রাজ্যে পুজোতে বিশেষ বাধা দেবে না সরকার। তবে কোভিড স্বাস্থ্য বিধি ও কিছু সতর্কতা অবশ্যই মেনে চলতে হবে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584