শুভম বন্দোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
দায়িত্বভার নেওয়ার পর থেকেই রাজ্যের সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যুতে সংঘাতে জড়িয়েছেন রাজ্যপাল। সেই সংঘাত সম্প্রতি আরও তিক্ত মাত্রা পেয়েছে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা রাজ্যপালের ডাকা ‘ভার্চুয়াল কনফারেন্সে’ যোগ না দেওয়ায়। এই ঘটনায় বিরক্তি প্রকাশ করে বৃহস্পতিবার সকালেই সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যপাল শিক্ষায় রাজনীতিকরণ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করেন। তারই জবাবে নবান্নে বসে রাজ্যপালের আচরণের তুমুল সমালোচনা করে বাড়াবাড়ির অভিযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত এর আগে রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রীর টুইট যুদ্ধ থেকে পত্র আদানপ্রদান হলেও সরাসরি কেউই একে অপরের বিরুদ্ধে সংবাদমাধ্যমে বক্তব্য রাখেননি। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার সকালে রাজ্যপালের সাংবাদিক বৈঠকের পরেই ক্ষুব্ধ হন মুখ্যমন্ত্রী। তাই রাজ্যপালের জবাব সোজাসুজি নবান্ন থেকে দেন তিনি। তিনি বলেন, সহ্যেরও সীমা আছে। আমি চুপ করে থাকি মানে কেউ যা খুশি তাই বলতে থাকতে পারেন না।
এদিন সকালে রাজ্যপাল অভিযোগ করেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী ৬ মাস ধরে তার চিঠির জবাব দেননি। এদিন সেখান থেকেই শুরু করেন মমতা। নথি দেখিয়ে বলেন, নিয়মিত রাজ্যপালের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেন তিনি ও সরকারের আমলারা। এমনকী বুধবারও তাঁর সঙ্গে রাজ্যপালের একাধিক বার কথা হয়েছে বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুনঃ করোনা যুদ্ধে প্রাণ হারালেন ৯৯ চিকিৎসক, লাল সংকেত জারি করল আইএমএ
এরপর উপাচার্যদের সঙ্গে রাজ্যপালের বৈঠক প্রসঙ্গে আসেন মমতা। ২০১৭ সালে বিধানসভায় একটি আইনের ধারা পড়ে শুনিয়ে বলেন, ‘রাজ্যপাল নিজে এই আইন মানছেন না। ওই আইন অনুযায়ী রাজ্যপালের কোনও সচিবালয় থাকতে পারে না। ওই আইনে শিক্ষাক্ষেত্রে রাজ্যপালের ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছিল। আপনার সঙ্গে উপাচার্যদের বৈঠক হবে কি না, তা তো শিক্ষা দফতর জানিয়ে দিয়েছে। এক কথা কতবার বলতে হবে!’
আরও পড়ুনঃ ‘আমার ডেডবডির মধ্যে চুল্লি বানিয়ে পুড়িয়ে দিন, অসহযোগিতার অভিযোগে বিস্ফোরক মুখ্যমন্ত্রী
রাজ্যপালের আচরণে তিনি যে যথেষ্ট বিরক্ত, তাও এদিন পরিষ্কার করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ওনার আচরণ দেখে মনে হয় আমরা ওনার চাকরবাকর। যখন তখন চিঠি পাঠিয়ে নানা জবাবদিহি তলব করেন। পদমর্যাদা মাথায় রেখে তারও সাধ্যমতো জবাব দিই। রাজভবনে বসে বিজেপির মুখপাত্রের থেকেও বিপদজনক কাজ করছেন রাজ্যপাল। রাজ্যপালের পরামর্শ দেওয়ার অধিকার রয়েছে। কিন্তু কাউকে মানতে বাধ্য করতে পারেন না তিনি। উনি যদি এখনও সংযত না-হন, তবে পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিকভাবে প্রতিরোধ গড়ব আমরা।’ রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান রাজ্যপালকে এই ভাষাতে হুঁশিয়ারি দিয়েই নিজের বক্তব্য শেষ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584