শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
উত্তরপ্রদেশের হাথরাসে নারকীয় গণধর্ষণ ও পুলিশের দেহ লোপাটের ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে সারা দেশের রাজ্য-রাজনীতি। যোগী আদিত্যনাথ এর বিজেপি সরকার তথা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালিয়ে সারা দেশ জুড়ে আন্দোলনে নেমে পড়েছেন বিরোধী দলের লোকজন।
ইতিমধ্যেই হাথরাসে গিয়ে পুলিশের গলা ধাক্কা খেতে হয়েছে তৃণমূলের প্রতিনিধি দলকেও। এবার শনিবার এই ঘটনার প্রতিবাদে কলকাতার রাজপথে হাঁটলেন মুখ্যমন্ত্রী। শনিবার বিকেলে বিড়লা প্ল্যানেটোরিয়াম থেকে গান্ধীমূর্তি পর্যন্ত হাঁটেন জননেত্রী। তারপর একটি সভাও করেন তিনি।
গান্ধীমূর্তির পাদদেশে দাঁড়িয়ে তিনি তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায় গর্জে উঠে বললেন, ‘দেশ রাষ্ট্রপতি শাসনের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে। বিজেপির আমলে ওয়ান নেশন, ওয়ান পলিটিক্যাল পার্টি হয়ে যাচ্ছে।আমার মন পড়ে আছে হাথরাসে।’
গ্রামে ঢোকার ১ কিলোমিটার আগে যে পুলিশ তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের লোকজনদের আটকে দিয়েছিল, তা এদিন ফের মনে করিয়ে দেন মমতা।
আরও পড়ুনঃ আগে দলদাস ছিল এখন ক্রীতদাস হয়েছে, পুলিশের উদ্দেশ্যে দিলীপ উবাচ
তিনি বলেন, ‘পুলিশ আটকে মহিলাদের গায়েও হাত তুলেছে। দেশে গণতন্ত্রের ছিঁটেফোঁটাও অবশিষ্ট নেই। দেশে স্বৈরাচারী শাসন চলছে। স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে বিজেপি। সাংবাদিকদের ফোন করে ভয় দেখাচ্ছে। হাথরাসের ঘটনা প্রচার না করার জন্য হুমকি দিচ্ছে।”
এদিন সভা মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘দলিত মানুষের পাশে বরাবর থাকবে তৃণমূল। তৃণমূলের লড়াই মা-মাটি-মানুষের লড়াই। আমি আজ হাতে টর্চ নিয়ে হেঁটেছি। যেভাবে যোগী সরকারের উত্তরপ্রদেশে আদিবাসী-দলিত মা বোনদের উপর অত্যাচার হচ্ছে তার জন্য এই টর্চের মাধ্যমে নির্যাতিতাদের অন্ধকার থেকে আলোর দিকে নিয়ে আসব।
আরও পড়ুনঃ এনসিআরবি-র রিপোর্টে ‘বাদ’ পশ্চিমবঙ্গ
রাতের অন্ধকারে দেহ জ্বালায় বিজেপি। পরিবারের হাতে দেহ দেয় না। ভোট এলেই দলিত বন্ধু সাজে বিজেপি। ভোট এলেই যুদ্ধের কথা বলে। এক নায়কতন্ত্র চলছে। আমি বিজেপির বন্দুককে ভয় পাই না।’
উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকারকে এক হাত নিয়ে তিনি বলেন, “বিজেপি সবথেকে বড় প্যানডেমিক। এদের স্বৈরতন্ত্রকে জব্দ করার জন্য সব রকম কসরত হবে। বিজেপি পার্টি কী ভাবে, নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে দেবে না আমাদের? আজ দেবে না, কাল দেবে না, পরশু দেবে না, কিন্তু একদিন না একদিন তো দেবেই। কতদিন বাধা দেবে?”
আরও পড়ুনঃ কেন্দ্রের বেসরকারিকরণ নীতির বিরুদ্ধে ভারত বনধ
লজ্জা হওয়া উচিত যোগী সরকারের। মা-বোনদের নির্যাতন থেকে বাঁচাতে পারেন না, আবার নির্যাতিতার পরিবারকে ভয় দেখাচ্ছেন, সাংবাদিকদের হুমকি দিচ্ছেন। যেন ওরাই দোষী!
এদিন তিনি হাথরাসে দলিত তরুণীর মৃত্যুর ঘটনায় রাজ্যে লাগাতার আন্দোলনের রূপরেখা বেঁধে দেন মমতা। কর্মী-সমর্থক, নেতৃত্বকে বলেন, আগামিকাল থেকে রাজ্যের ব্লকে ব্লকে পোস্টার নিয়ে প্রতিবাদ মিছিল করার নির্দেশ দেন মমতা। মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস, বঙ্গজননী, সংখ্যালঘু সেল-সহ সমস্ত কর্মী-সমর্থকদের ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রতিবাদ আন্দোলনে নামতে বলেন।
পুজোর শুরু পর্যন্ত এই প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চালিয়ে যেতে বলেন তিনি। অন্যরা ভুলে গেলেও তিনি যে এই প্রতিবাদ আন্দোলন থামাবেন না, এদিন গান্ধী মূর্তির পাদদেশের মঞ্চ থেকেই সেই হুঁশিয়ারি দিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584