নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতাঃ
বছর শুরুর প্রথম সপ্তাহেই নন্দীগ্রামে সভা করার কথা ছিল তৃণমূল নেত্রীর। পাল্টা তার পরদিন সভা করার ঘোষণা করেছিলেন সদ্য বিজেপিতে নাম লেখানো শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু, আপাতত আগামী ৭ জানুয়ারি নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রীর সভা হচ্ছে না বলেই তৃণমূল সূত্রে খবর।

দলের তরফে আনুষ্ঠানিকভাবে নন্দীগ্রামে নেত্রীর সভা বাতিলের কোনও ঘোষণা এখনও করা হয়নি। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে ৭ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর সভা হচ্ছে না। ওই সভায় উপস্থিত থাকবেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি।
তৃণমূল সুপ্রিমোর সভা ঘোষণা করেও বাতিলের ঘটনা সাম্প্রতিককালে ঘটেনি। তৃণমূলের রাজনৈতিক উত্থানে নন্দীগ্রাম জমি আন্দোলনের বড় ভূমিকা রয়েছে। দিন কয়েক আগেই এই নন্দীগ্রামেরই তৃণমূল বিধায়ক তথা জমি আন্দোলনের অন্যতম নেতা শুভেন্দু অধিকারী পদত্যাগ করে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন।
সেই নন্দীগ্রামেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা বাতিলের খবরে রাজনৈতিক জল্পনা এখন তুঙ্গে। প্রশ্ন হল, তাহলে কী মমতা সভার পরদিন শুভেন্দু অধিকারীর জমায়েতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার সাহস দেখালো না তৃণমূল? নাকি, সভায় নিজে না গিয়ে শুভেন্দুর সভার বাড়তি প্রচার রদ করলেন নেত্রী?
আরও পড়ুনঃ শুধু পরিবহণ দফতরেই ৭২৫ কোটির দুর্নীতি করেছেন শুভেন্দু, অভিযোগ ঘাসফুল শিবিরের
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, নন্দীগ্রাম আন্দোলন ও পরে বিধায়ক হওয়ার সূত্রে শুভেন্দুর ভালোই জনভিত্তি রয়েছে সেখানে। এতদিন নন্দীগ্রামে শাসক দলের সংগঠনও দেখাশুনো করতেন শুভেন্দুই। ফলে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় ভিড় জমানোর বিষয়টি শুভেন্দুর মতো করে অন্য কোনও নেতা নাও করতে পারেন। পর দিন নন্দীগ্রামেই আবার শুভেন্দুর সভা রয়েছে। ফলে দুই জমায়েতের ভিড় নিয়ে নানা বিতর্ক তৈরি হতে পারে। আর মুখ্যমন্ত্রীর সভা ঘিরে বিতর্ক চাইছে না তৃণমূল শিবির।
আরও পড়ুনঃ আজ দিল্লিতে অমিত শাহের অনুষ্ঠানে থাকবেন সৌরভ
অন্য আরেকটি মত হল, ৭ তারিখ মমতার সভা করছেন। পরদিনই ৮ তারিখ শুভেন্দুর জনসভা। পরপর দুই সভার ফলে বাড়তি প্রচার পেতে পারে বিজেপির সভা। তাই ওই দিন সভায় না গিয়ে কার্যত শুভেন্দু অধিকারীর নন্দীগ্রামের সভাকেই কিছুটা লঘু করে দিলেন শাসক দলের নেত্রী।
নন্দীগ্রামে তৃণমূলের জনভিত্তি যে শুভেন্দুর ওপর নির্ভরশীল নয় তা প্রমাণে ৭ জানুয়ারি সেখানে সবার ডাক দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজে সেই সভায় হাজির থাকবেন বলে জানান। পাল্টা শুভেন্দু অধিকারীও নন্দীগ্রামে ৮ জানুয়ারি সভার ঘোষণা করেন। বলেন, “আমাকে ঠেকাতে জোড়া মন্ত্রী পাঠিয়েও হচ্ছে না। তাই এবার মুখ্যমন্ত্রী নিজে আসছেন।” এরপরই চ্যালেঞ্জের সুরে বলেছিলেন, “আপনি পুলিশ দিয়ে লোক জমায়েত করুন, আমি ভালোবাসা দিয়ে লোক জোগাড় করবো।”
মুখ্যমন্ত্রীর নন্দীগ্রামের সভা হাজির না থাকার বিষয়ে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “বিজেপির সভার ভয়ে উনি যাচ্ছেন না। এরপর অনেক জায়গাতেই ওনার যাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে।”
বছরের শুরুতেই হাড্ডাহাড্ডি লডাইয়ের অপেক্ষায় ছিল নন্দীগ্রাম, কিন্তু, আপাতত তৃণণূলের সভায় মুখ্যমন্ত্রী না যাওয়ায় সেই লড়াইয়ের আঁচে ভাটা পড়ল।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584