মোহনা বিশ্বাস, ওয়েব ডেস্ক:
সক্রিয় মৌসুমী বায়ু এবং নিম্নচাপের দাপটে গত সপ্তাহ থেকেই বৃষ্টিতে ভিজছে বাংলা। সেই নিম্নচাপের প্রভাবেই এবার ডুবতে বসেছে দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা। সেখানকার অধিকাংশ গ্রামই জলের তলায়। প্রবল বৃষ্টির জেরে জলমগ্ন একাধিক এলাকা। প্লাবিত বিঘা বিঘা জমিও। কোথাও হাঁটু সমান জল তো কোথাও এক বুক। বৃষ্টি থেমে গিয়েছে। তবে জল এখনও নামেনি। এখনও জলযন্ত্রণাই সহ্য করতে হচ্ছে স্থানীয়দের।
কিন্তু জলের কারণে পোলিও টিকাকরণ তো আর বন্ধ থাকতে পারে না। তাই রবিবার হাঁটু সমান জলে দাঁড়িয়েই পোলিও খাওয়ালেন আশাকর্মীরা। কিন্তু যেখানে বুক সমান জল, সেখানকার শিশুদের পোলিও খাওয়ানো কিভাবে সম্ভব? ভেবে পাচ্ছিলেন না আশাদিদিরা। তাই ক্যানিং-২ নম্বর ব্লকের সারেঙ্গাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের সিংহেশ্বর সাবসেন্টার এলাকায় হাঁটু জলে দাঁড়িয়েই হাঁক দিয়েছিলেন আশাকর্মী সোনালি প্রধান এবং এএনএম (২) নমিতা হালদার। আর আশাকর্মীদের গলা পেয়েই হাঁড়িতে করে নবজাতককে হাঁড়িতে নিয়ে পোলিও খাওয়াতে আশাকর্মীদের কাছে পৌঁছে গেলেন সদ্য বাবা হওয়া নিজামুদ্দিন মোল্লা।
এ যেন শ্রীকৃষ্ণের জন্মের কাহিনী। বাসুদেব যেমন ঝড় জল উপেক্ষা করে ঝুড়িতে শ্রীকৃষ্ণকে শুইয়ে এক বুক সমান জলে হেঁটে মথুরা থেকে বৃন্দাবনের পথে রওনা হয়েছিলেন। ক্যানিংয়ের এই ঘটনাও খানিকটা এমনই। রবিবারের সকালে আশাদিদিরা ডাকা দিলেন, ‘বাড়িতে পোলিও খাওয়ানোর বাচ্চা থাকলে নিয়ে এসো গো…।’ এই ডাক শুনে ঘরে বসে থাকতে পারেননি বাবা মা। কোমর সমান জলে বাচ্চাদের ঘর থেকে বের করা প্রায় অসম্ভব। তবু আশাদিদির ডাক ফেরাতে পারেননি নিজামুদ্দিন। উপস্থিত বুদ্ধির জোরে সন্তানকে বড় মুখওয়ালা অ্যালুমিনিয়ামের হাঁড়িতে শুইয়ে জলে ভাসিয়ে আশাকর্মীর কাছে নিয়ে যান তিনি।
আরও পড়ুনঃ ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’-এর শক্তিক্ষয়ের জেরে ওড়িশা উপকূলে প্রবল বৃষ্টি, দক্ষিণবঙ্গেও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস
নবজাতককে হাঁড়িতে ভাসিয়ে নিয়ে আসতে দেখে প্রথমে চমকে উঠেছিলেন আশাকর্মী থেকে এএনএম (২)। তারপর হাঁটু সমান জলে দাঁড়িয়েই হাঁড়ির ভিতরে শুয়ে থাকা শিশুকে পোলিও খাওয়ান আশাকর্মীরা। রবিবার দিনভর ক্যানিংয়ের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে এভাবেই পোলিও খাওয়ালেন আশাকর্মীরা।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584