এসএফআই দিয়ে রাজনীতিতে হাতেখড়ি, তৃণমূল হয়ে বিজেপিতে অর্জুন ছায়াসঙ্গী মণীশ

0
148

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতাঃ

বর্তমানে রাজনীতি উত্তাল বিজেপি কর্মী মণীশ শুক্লার হত্যাকাণ্ড ঘিরে। কিন্তু কে ছিলেন এই মণীশ? বাম ছাত্র রাজনীতি দিয়ে হাতেখড়ি। তারপর তৃণমূল কংগ্রেস হয়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া। একসময় সিপিএম সাংসদ তরিৎবরণ তোপদারের সংস্পর্শে, পরবর্তীতে অর্জুন সিংয়ের ডান হাত হয়ে ওঠার কাহিনী ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের সকলেই প্রায় জানে।

manish shukla | newsfront.co
মণীশ শুক্লা

বর্তমানে মণীশ শুক্লা ছিলেন অর্জুন সিংয়ের ছায়াসঙ্গী। অর্জুন নিজেও তা মানেন যে মণীশ তাঁর ঢাল ছিলেন। রাজনৈতিক জীবনে বাম, তৃণমূল ও বিজেপি যখন যেটা প্রয়োজন ঠিক সময়ে সেদিকেই ভিড়েছেন মনীশ শুক্লা এবং ক্রমশ ওপরে উঠেছেন। কিছু দিন কংগ্রেসেও ঘর করেছেন। এহেন মনীশ শুক্লা রবিবার সন্ধ্যায় টিটাগড় থানার সামনে অজ্ঞাত পরিচয় আততায়ীর গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গেলেন।

আরও পড়ুনঃ রানীনগরে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল

bjp leaders | newsfront.co
অর্জুন সিং দিলীপ ঘোষের সাথে মনীশ শুক্লা

ছাত্রাবস্থায় এফএফআই-এ রাজনৈতিক হাতেখড়ি। তখন ছিলেন সাংসদ তরিৎবরণ তোপদারের সংস্পর্শে । ধীরে ধীরে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের টিটাগড় এলাকায় নিজের রাজত্ব কায়েম করা শুরু, তাঁর অনুমতি ছাড়া এলাকায় বলতে গেলে কিছুই হত না কারণ মাথার ওপর ছিল তৎকালীন সাংসদের হাত। ব্যারাকপুরের রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ কলেজে পড়াশুনা। তখন দাপিয়ে বাম রাজনীতি করেছেন। পরে অবশ্য তরিৎবরণ তোপদারের সঙ্গে সম্পর্কে ছেদ ঘটে। ততদিনে মণীশ আইনজীবী হয়ে গিয়েছেন। ২০০৯ সালে ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থীকে পরাজিত করে সাংসদ হন তৃণমূল কংগ্রেসের দীনেশ ত্রিবেদী।

আরও পড়ুনঃ পুলিশ-আততায়ী যৌথ ভাবে মেরেছে! মণীশ খুনে বিস্ফোরক মন্তব্য ভারতীর

যথারীতি পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে ভাটপাড়ার দাপুটে বিধায়ক অর্জুন সিংয়ের হাত ধরে তৃণমূল শিবিরে যোগদান, এলাকায় দাপট ধরে রাখতে হবে তো! এর মধ্যেই ২০১৫ সালে নির্দল প্রার্থী হিসাবে টিটাগড় পুরসভা নির্বাচনে ৭ নম্বর ও ২১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী হওয়া। তৃণমূল টিকিট না দেওয়ার নির্দল প্রার্থী হিসাবে দাঁড়িয়েছিলেন, পরে আবার দলে ফিরে যান।

ব্যারাকপুরে এক অনুষ্ঠানে তৃণমূলে ফেরেন মণীশ। ভাটপাড়ার তৎকালীন তৃণমূল বিধায়ক অর্জুন সিংয়ের গাড়িতে মণীশ শুক্লা আছেন, এই অভিযোগে তাঁর গাড়ি তল্লাশি করেছিল পুলিশ। তখন দলের ওপর রীতিমত ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন খোদ অর্জুন সিং। এই ঘটনার পর সেদিন রাতেই সিঁথির মোড়ে রীতমতো তাণ্ডব চালিয়েছিল অর্জুন ও মণীশের দলবল।

আরও পড়ুনঃ হাথরাসের ঘটনার প্রতিবাদে জাকাত মাঝি পরগণার প্রতিবাদ মিছিল

তারপর ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিতে যোগ দিয়ে ব্যারাকপুর কেন্দ্রে প্রার্থী হন অর্জুন সিং। যথারীতি সময়ের দাবি বুঝে তাঁর সঙ্গে বিজেপিতে চলে আসেন ছায়াসঙ্গী মণীশ। ধীরে ধীরে দলে নিজের জায়গা পাকাও করে ফেলেছিলেন।

ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে রাজনীতির ধরন ধারণ বাংলার অন্য যে কোনও এলাকার থেকে অনেকটাই আলাদা, বরং অনেকটাই উত্তরপ্রদেশ, বিহারের মত। রাজ্যের অন্য জায়গার তুলনায় অবাঙালি বসতিও তুলনামূলক বেশি। সেই সংস্কৃতিতে মণীশ বেশ মাননসই ও বটে। সেই স্টাইলই ছিল তাঁর রাজনীতির মস্ত বড় হাতিয়ার। শোনা যায় এলাকায় কিছু রবিনহুড জাতীয় ইমেজও নাকি ছিল তাঁর; রক্তদান শিবির বা দুঃস্থ বাড়ির মেয়ের বিয়ের জন্য দরাজহস্ত ছিলেন মণীশ।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here