পিয়ালী দাস, বীরভূমঃ
জাতীয় রক্তদান দিবসকে উপলক্ষ করে পৌষ মেলার মাঠ বাঁচাও কমিটি অভিনব প্রতিবাদে শামিল হোলো বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতির ব্যবসায়ীরা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কাতারে কাতারে ব্যবসায়ীরা এসে রক্ত দান করলেন মেলার মাঠ বাঁচাও কমিটির মঞ্চে।
ব্যবসায়ী সমিতির কোষাধ্যক্ষ সুব্রত ভকত জানিয়েছেন, বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী এবং হাইকোর্টের নিযুক্ত বর্তমানে তিন সদস্যের মাঠ ঘিরে ফেলার একনায়কতন্ত্র সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেছি।
বৃহস্পতিবার জাতীয় রক্তদান দিবস, রক্তদান শিবির দিয়েই আমরা আন্দোলনের গতি আরও বাড়িয়ে নিতে চাই। ইতিহাস সাক্ষী আছে যেকোনো হিটলারি শাসনের অত্যাচারের বিরুদ্ধে মানুষ যখন প্রতিবাদে সামিল হয় সেই প্রতিবাদ যুদ্ধে রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম না হলে স্বাধীনতা মেলে না। কিন্তু আমরা সেই রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম কে অহিংস আন্দোলনের মধ্য দিয়ে মুক্তি পেতে চাই।
আরও পড়ুনঃ উত্তরপ্রদেশের তরুণী মৃত্যুর প্রতিবাদে এসএফআই – ডিওয়াইএফআইয়ের ধিক্কার মিছিল মেদিনীপুর শহরে
রক্তদান দিবসের দিন থেকে ব্যবসায়ীরা শপথ নিয়েছে যতদিন না গুরুদেবের মুক্ত আশ্রমের ভাবনাচিন্তা কে প্রতিষ্ঠা করতে পারা যাচ্ছে ততদিন শান্তিপূর্ণ অবস্থান বিক্ষোভ চলতে থাকবে। মেলার মাঠে গেলেই চোখে পড়ছে বিশ্বভারতী দ্রুত ফেন্সিং দিয়ে ঘিরে ফেলতে তৎপর মেলার মাঠ।
এই দ্রুত কাজ নিয়ে অবশ্য ইতিমধ্যে নানা রকম প্রশ্ন তুলেছেন পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত। তিনি জানিয়েছেন হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছে তাতে তিনি সহমত পোষণ করছেন না। প্রয়োজনে তিনি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবেন।
আরও পড়ুনঃ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরার দু’টি ব্লকে পথশ্রী প্রকল্পের উদ্বোধন
বিশ্বভারতী সূত্রে খবর, গড়ে প্রত্যেকদিন ১৫০ জন শ্রমিক দিয়ে প্রাচীর তোলার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। প্রাচীর তোলার জন্য মাটি থেকে অন্তত তিন ফুট গভীরে গর্ত করা হয়েছে। প্রথমে চার ফুটের পাঁচিল তোলা হবে তার ওপরে নেটের ফেন্সিং দেওয়া হবে।
আরও পড়ুনঃ ফুলবাড়িতে ‘পথশ্রী অভিযান’-র সূচনায় মুখ্যমন্ত্রী
ইতিমধ্যে ফেন্সিং দেবার নেট এসে বিশ্বভারতীতে পৌঁছেছে। মুখ খুলতে নারাজ বিশ্বভারতীর এক আধিকারিক জানিয়েছেন, উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী ভালো করেই জানেন সুপ্রিম কোর্ট বহু বছর আগে একটি রায় দিয়েছিল যে কোন ভাবেই বিশ্বভারতীকে প্রাচীর দিয়ে ঘেরা যাবেনা। তাই তিনি দ্রুত প্রাচীর দিয়ে ধীরে ফেলতে চাইছে মেলার মাঠ।
যদি কোন কারনে মামলাটি সুপ্রিমকোর্টে যায় তাহলে ফের মেলার মাঠ ঘেরার কাজ ফের বন্ধ হয়ে যেতে পারে এই আশঙ্কায়। হাইকোর্টের রায় ইতিমধ্যে হতাশা প্রকাশ করেছেন আশ্রমিকরা। তাদের অনেকেরই দাবি বর্তমান বিশ্বভারতী কে যেভাবে দেখতে হচ্ছে সেভাবে দেখতে তারা অভ্যস্ত নন।
আশ্রমিক সুবোধ মিএ বলেন, নিরাপত্তার দিকটি জোরদার করে বিশ্বভারতী মেলার মাঠ কে সুরক্ষিত করতে পারতো। কলম কেন্দ্র থেকে বিশ্বভারতী নিরাপত্তার জন্য কোটি কোটি টাকা অনুদান আসে। তা না করে এইভাবে মেলার মাঠ ঘিরে আমাদের বুকের উপর দিয়ে কার্যত বুলডোজার চালালো বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584