পিয়ালী দাস, বীরভূমঃ
বাঁধ রঙ করা থমকে গিয়েছে তো কী হয়েছে, বাঁধের আদলে যে পুজোর মণ্ডপ,এ বার তাকেই নীল সাদায় রাঙালেন বীরভূমের সেচ দফতর।
ময়ূরাক্ষী নদীর উপর ম্যাসাঞ্জোর (মশানজোড়) বাঁধের গায়ে নীল সাদা রঙ লাগাতে গিয়ে বিপত্তি বেঁধেছিল চলতি বছরের আগস্ট মাসের শুরুতে। তার জের টানতে হচ্ছে এখনও।এখনও রাজ্যের সেচ দফতরের ইচ্ছে থাকলেও পুরোপুরি নীল সাদা রঙ করা যায়নি ম্যাসাঞ্জোর (মশানজোড়) বাঁধ।কারণ বাঁধের দেখভালের দায়িত্ব বাংলার সেচ দফতরের হলেও এর ভৌগলিক অবস্থান ঝাড়খণ্ডের দুমকায়।আর সেখানকার বিজেপি নেতৃত্বের বাধাতেই মাঝপথেই থামিয়ে দিতে হয় বাঁধ রাঙানোর কাজ।
বাঁধ রঙ করা নিয়ে দুই রাজ্যের রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয়ে যায়।পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের কয়েক দফা বৈঠকের পরেও সমাধানসূত্র মেলেনি।ফলে থমকে রয়েছে কাজ।সেই ম্যাসাঞ্জোর (মশানজোড়) বাঁধই এ বার বীরভূমের সেচ দফতরের পুজোর থিম। সিউড়ির সেচ কলোনির মাঠে পুজোর প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে।আর এখানে কিন্তু ম্যাসাঞ্জোর বাঁধের রঙ নীল সাদাই।তাই অনেকেই মজা করছেন, “নাই বা হল ম্যাসাঞ্জোর বাঁধ নীল-সাদা। মণ্ডপ নিয়েই খুশি থাকতে চাইছেন সেচ দফতরের কর্মীরা।”
যদিও এ কথা মানতে নারাজ পুজো কমিটির সদস্যরা।পুজো কমিটির সম্পাদক পরিতোষ শিকদার বলেন, “গত বছরই আমাদের পুজোর থিম ছিল এই বাঁধ। কিন্তু সেটা করা হয়ে ওঠেনি। তাই এ বছরই সেই থিমে মন্ডপ হচ্ছে।এর পিছনে অন্য কোনও ভাবনা নেই।”

ময়ূরাক্ষী নদীর জল ধরে রাখতে ১৯৫৫ সালে কানাডা সরকারের আর্থিক সহায়তায় শুরু হয়েছিল এই বাঁধ নির্মাণের কাজ।স্থানীয়রা অনেকে একে বলে কানাডা বাঁধ।ঝাড়খণ্ডের দুমকা জেলায় হলেও ম্যাসাঞ্জোর বাঁধের রক্ষণাবেক্ষণ থেকে শুরু করে জল ছাড়া সবই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সেচ দফতরের অধীনে। বীরভূম জেলার সিউড়ি শহরে সেচ দফতরের অফিস থেকে বাঁধের সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করা হয়। কারণ,মূলত মুর্শিদাবাদ,বীরভূম ও বর্ধমান জেলায় খারিফ ও বোরো চাষের জল সরবরাহ করার জন্যই এর জল ব্যবহার করা হয়।
এতদিন নির্বিঘ্নেই চলছিল সবকিছু।সম্প্রতি ম্যাসাঞ্জোর বাঁধের বৈদ্যুতিকরণ ও সেখানে কর্মীদের জন্য আবাসন নির্মাণ ও মেরামতের জন্য ১ কোটি ৮২ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করে নবান্ন। সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে,আবাসন নীল-সাদা রঙ করা হয়ে গিয়েছে।তারপর শুরু হয় বাঁধ রঙ করার কাজ।কিন্তু অর্ধেক রঙ করা হতে না হতেই আসে বাধা।বিজেপি-র দুমকা জেলার নেতারা নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে সেচ দফতরের অ্যাসিসট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে জানান নীল সাদা রঙে তাঁদের আপত্তি রয়েছে।সেই কাজিয়ায় বন্ধ হয়ে যায় কাজ।এখনও বাঁধ পড়ে রয়েছে অর্ধেক রঙ হয়ে।
আরও পড়ুনঃ হুল্লোড় বাজ ‘খারাপ ছেলে’র দল পুজোর আনন্দ ভাগ করে নিল অনাথ শিশুদের সাথে
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584