বাতাসে দূষণ কম, কুলিক পাখিরালয়ে ভিড় পরিযায়ী পাখিদের

0
64

পিয়া গুপ্তা, উত্তর দিনাজপুরঃ

করোনা আবহের মধ্যেই প্রকৃতিপ্রেমিকদের জন্য ভালো খবর। সময়ের অনেক আগেই রায়গঞ্জের কুলিক পাখিরালয়ে ভিড় করতে শুরু করলো পরিযায়ী পাখিরা। বিভিন্ন জায়গা থেকে উড়ে এসে পাখিরা বর্তমানে ডেরা জমিয়েছে কুলিক পাখিরালয়ে। খুব স্বাভাবিকভাবে এই দৃশ্যে উচ্ছ্বসিত প্রকৃতিপ্রেমীরা।

Kulik bird sanctury | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

তাদের দাবি, লকডাউনের জেরে বর্তমানে তৈরি হওয়া পরিস্থিতিতে প্রাকৃতিক দূষণের মাত্রা কমে যাওয়ার কারণেই অনেক আগে পরিযায়ী পাখিদের দেখা মিলছে কুলিক পাখিরালয়ে।পক্ষী বিশেষজ্ঞদের মতে বিভিন্ন প্রজাতির পরিযায়ী পাখিরা মূলত জুন মাসের শেষ সপ্তাহে বা জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে কুলিক পাখিরালয়ে ভিড় করে।

Migrant birds | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

তবে এবছরে তার ব্যতিক্রম ঘটেছে বলেই মনে করছেন তারা। আর এর পেছনে অনেকটা বেশি হাত রয়েছে বাতাসে দূষণের মাত্রা কমে যাওয়ার বিষয়টির। উচ্ছ্বসিত প্রকৃতিপ্রেমিরা দ্রুত কুলিক পাখিরালয়টি সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন। যদিও বনদফতরের দাবি, সরকারি নির্দেশিকা না আসা পর্যন্ত কোনওভাবেই কুলিক পাখিরালয় সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া যাবে না।

আরও পড়ুনঃ গালওয়ানে সেনা মৃত্যুতে বেদনা প্রকাশ করে টুইট প্রতিরক্ষামন্ত্রীর

Somnath Sarkar | newsfront.co
সোমনাথ সরকার। নিজস্ব চিত্র

এবিষয়ে রায়গঞ্জ ডিভিশনের ডিএফও সোমনাথ সরকার বলেন, “বিভিন্ন এশীয় প্রজাতির পাখিরা সাধারণত যে সময় কুলিক পাখিরালয়ে আসে, এবার তার থেকে অনেক আগেই এসে পৌঁছেছে। ইতিমধ্যেই তারা তাদের মত করে বিভিন্ন গাছে বাসা বেঁধেছে। প্রজনন এবং প্রজননের পরবর্তী সময়ের কার্যকলাপ থাকে। সেই কাজ কুলিক পাখিরালয়ে তারা করে থাকে প্রতিবছর। তবে মূলত জুন মাসের শেষে বা জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে মায়ানমার, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের বিভিন্ন এলাকা থেকে পরিযায়ী পাখিরা এখানে আসে। এবারে মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকেই পাখিদের বাসা বাঁধতে দেখা যাচ্ছে। আমি মনে করি, মূলত প্রাক মরশুমি বর্ষা এবং পরিবেশ দূষণের মাত্রা কমে যাওয়ার ফলেই এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। শেষ কবে এমন কিছু হয়েছিল, তা আমার জানা নেই।”

আরও পড়ুনঃ ভারত-চিন সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে সর্বদলীয় ভার্চুয়াল বৈঠক ১৯ জুন

এবিষয়ে রায়গঞ্জের পক্ষীবিদ এবং পাখি গণনাকারীদের মধ্যে অন্যতম চন্দ্রনারায়ণ সাহা বলেন, “এবছর পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রাক-মরশুমি বৃষ্টি হয়েছে তাতে তাপমাত্রা যথেষ্ট কম রয়েছে। সাধারণত যে তাপমাত্রা এই সময় থাকে এখন তার থেকে অনেক কম তাপমাত্রা হওয়ায় পাখিরা কুলিক পাখিরালয়ে ভিড় করেছে। কুলিক পাখিরালয় এশিয়ার মধ্যে বৃহত্তম পক্ষী নিবাস। প্রতিবছর বিভিন্ন জায়গা থেকে পরিযায়ী পাখিরা এখানে এসে ভিড় জমায়। প্রজনন এবং প্রজনন পরবর্তী সময়ে পাখিদের নানা কার্যকলাপ, সমস্ত কিছুই এই কুলিক পাখিরালয়ে সম্পন্ন হয়ে থাকে।

কখনও কখনও পাখিদের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। আবার কখনও কখনও বা সংখ্যা কমে যায়। তবে কমবেশি যাই হোক না কেন, কুলিক পাখিরালয়ে মোটামুটি জুন মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে পাখিদের ভিড় করতে দেখা যায়। গত কয়েক বছরে পাখিদের আসা-যাওয়ার সংখ্যার কিছু তফাৎ দেখা গেলেও তাদের আসার সময়ে কোনও আগুপিছু কিন্তু দেখা যায়নি। তবে এবছরে পাখিরা অনেক আগেই পৌঁছে গিয়েছে তাদের প্রিয় কুলিক পক্ষীনিবাসে।”

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here