নিজস্ব সংবাদদাতা, মুর্শিদাবাদঃ
সাইকেলকে ভরসা করে ৫০০ কিমি পাড়ি দিয়ে বাড়ি ফিরলেন ১০ শ্রমিক। লকডাউনের কারণে কাজ বন্ধ। অর্থের ঘাটতি। অন্য রাজ্য কাজে গিয়ে আটকে পড়ে বহু শ্রমিকের নাজেহাল পরিস্থিতি। এদিকে তৃতীয় দফার লকডাউন শুরু হয়েছে। এই প্রতিকুল পরিস্থিতিতে লড়াই করা সম্ভবপর হচ্ছে না অনেকেরই। কেউ পায়ে হেঁটে, কেউ বা সাইকেলে বাড়ি ফিরছেন৷
সামসেরগঞ্জ ও সুতি এই দুই জায়গার ১০ জন শ্রমিক প্রায় ৫০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে ঘরে ফিরলেন বিহার থেকে। ৪ জন সাইকেল চালাতে না জানার কারণে পালা করে ছয়জন শ্রমিক তাদের নিয়ে আসেন। রাতে ঘুম নেই, খাবারও জোটে নি ঠিক করে। শনিবার সকাল দশটা নাগাদ তারা অনুপনগর হাসপাতালে পৌঁছান। সেখানে চিকিৎসার পর বাড়ি ফিরে যান। সামসেরগঞ্জের নামো চাচন্ড ও সুতির বাজিতপুর তাদের বাড়ি।
আরও পড়ুনঃ বৃষ্টিতে জল জমে ব্যাপক ক্ষতি ধানে
সামসেরগঞ্জের নামো চাচন্ডের নইমুদ্দিন সেখ,কেতাবুল হক এবং সুতির চিটুল সেখ ও ইয়ারুল মোমিন প্রায় ৩ বছর ধরে বিহারের কোতোয়ালি থানা এলাকায় রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন। কিন্তু দেশজুড়ে লকডাউন জারি হতেই কাজ বন্ধ হয়ে যায়। মেলেনি পারিশ্রমিকও। এদিকে তাদের কাছে যেটুকু সঞ্চয় ছিল তা শেষের দিকে। দোকানপাট বন্ধ। পেটে টান পড়তে আরম্ভ করে। তাই তারা ঠিক করে যে করে হোক বাড়ি পৌঁছাতে হবে। গাড়ি বন্ধ। তখনই ঠিক করেন সাইকেলে করেই বাড়ি ফিরবে।
কেতাবুল বলেন,” রাস্তায় বেড়িয়ে দেখি হোটেল বন্ধ। শুধু মুদির দোকান খোলা সেখান থেকে বিস্কুট নিয়ে খেয়ে আবার পাড়ি। কোথাও পুলিশ খাবার দিয়েছেন। কোনো গ্রামের মধ্যে দিয়ে আসার সময় সেখানার গ্রামবাসী খাবার দিয়েছেন। সাইকেল চালিয়ে ক্লান্তিতে যখন শরীর আর চলতে চাইত না তখন কোন ডাক্তারের কাছে ওষুধ নিয়ে খেয়ে আবার পাড়ী দিয়েছি।’
ইয়ারুল মোমিনের মা ফরিদা বিবি বলেন, ‘ছেলে ঘরে ফিরেছে এটাই বড় ব্যাপার। বাড়িতে আমার যে ভাবে চলছে তারও চলে যাবে। পাড়ায় যেন কোন অসুবিধা না হয় তাই ছেলেকে বলেছিলাম হাসপাতালে শরীর পরীক্ষা করিয়ে যেন আসে। ডাক্তার দেখিয়ে বাড়ি এসেছে। তাকে ১৪ দিন আলাদাভাবে থাকতে বলেছে। আমি ছেলেকে ডাক্তারের কথা মতো আলাদা রাখব। আর আল্লার কাছে দোয়া করব, সবার ছেলে যেন ভালভাবে মার কোলে ফিরে আসে।”
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584