উজ্জ্বল দত্ত, কলকাতাঃ
বিজয়া সম্মিলনীতে নাম না করে বিধায়ক পরেশ পালকে তোলাবাজ গুণ্ডা বললেন মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে। আর মন্ত্রীকে পরেশ পাল উত্তর দিলেন ছাগল বলে।
রবিবার সন্ধ্যায় ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে কর্মী সমাবেশ ও বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। মুখ্য উদ্যোক্তা রাজ্যের মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে। ফুলবাগানের সেই কর্মী সমাবেশে স্থানীয় তৃণমূল নেতা পরেশ পালের নাম না করে একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন সাধন পাণ্ডে।
পরেশ পালের ইলিশ উৎসব নিয়ে কটাক্ষ করে বললেন, ”আমি সেই নেতাদের ঘৃণা করি যারা এখানে ইলিশ মাছ খায়। আর কাঁটাগুলো ফেলে রাখে। আমি খুব দুঃখিত হই, যখন শুনি পাশের বড় পার্কে ইলিশ মাছ খাওয়ানো হয়েছে। ওখানে বহু মানুষ থাকেন যারা নিরামিশাষি। কিন্তু সেই পার্কেই ইলিশ মাছ খাচ্ছে। খুব লজ্জা হয়। বলি বাড়িতে কি খেতে পান না? মাছ খেয়ে কাঁটা ফেলে রেখে যান?”
এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ার অভিযোগ করেন তিনি। তোলাবাজি, দাদাগিরি প্রসঙ্গে পরেশ পালের নাম না করে তিনি কটাক্ষ করে বললেন, ”এলাকার মানুষ ভয় পাচ্ছে। রাতে দশটা ছেলে পাঠিয়ে হামলা করছে। যখন তখন যাকে তাকে মারধর করছে।
আরও পড়ুনঃ বিস্ফোরক কুণাল ঘোষ
কারও দোকানের সামনে স্ট্যাচু বসিয়ে দিচ্ছে।” সাধন পাণ্ডের বক্তব্যতে আগাগোড়া জুড়ে শুধুই পরেশ। তবে একবারও তার নাম করলেন না তিনি। বললেন, “এমএলএ পদ ছেড়ে দিয়ে টাকা কামাতে হলে কাউন্সিলর হতে হবে? বড়ো নেতা নেত্রীদের বলে কোনও লাভ হয় না। কারণ তারা মনে করেন যারা গুন্ডামি করে তাদের গুন্ডামি করতে দিতে হবে। তারাও ইলিশ খেতে আসে।
পরিস্থিতি সমাধানের রাস্তা হিসেবে বললেন, প্রতিটি দরজায় দরজায় যাব। মানুষকে সাহসী হতে বলব। কেউ ভয় দেখালে আমাকে একটা ফোন করবেন। বুঝে নেব। গালাগালিতে ভয় পাবেন না। কিছু লোকের স্বভাব গালাগালি দেওয়া। তারপর তাদের আর কিছু করার নেই। কেউ কিছু বললে আমাকে জানান। এলাকায় ইল্লিগাল প্রমোটিং, হামলা বাজি রুখতে হবে।”
আরও পড়ুনঃ তৃণমূল বিজেপি বোঝাপড়া রয়েছেঃ বিমান বসু
উত্তর কলকাতার তৃণমূলের রাজনীতিতে সাধন-পরেশের দ্বন্দ্ব দিন দিন আরও স্পষ্ট হচ্ছে। ২১-এর ভোটের আগে এবার সেই দ্বন্দ্ব সরাসরি সামনে চলে এল। সাধন পাণ্ডে এদিন আরও বলেন, ”আমি এসব করতে পারব না। দোকানদারের দোকানের সামনে স্ট্যাচু বসাতে পারব না।
গুপ্তা ব্রাদার্সের সামনে পরপর স্ট্যাচু বসিয়েছে। আরে! লোককে করে খেতে দাও! কোনও মারওয়ারী লোককে গালে থাপ্পড় মারলে এটা কি বাঙালি কালচার? অনেকে ভাবছেন বিধায়ক – সাংসদ হলেও টাকা আনতে হবে। টাকা আনতে গেলে কাউন্সিলর হতে হবে। এমন অনেক লোক ভাবছে ধান্দাবাজি করার জন্য পার্টি তে ঢুকে যাও। কিন্তু ধান্দাবাজি চলবে না। ক্ষমতা থাকলে কেউ করুক, আমি অন্যায় করতে দেব না। আমার মৃত বডির উপর দিয়ে এসব করতে হবে।”
আরও পড়ুনঃ ভগবানপুরে বিজেপির মহা মিছিলকে ঘিরে উত্তেজনা,ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশবাহিনী
কথায় কথায় এদিন উঠে এল পোস্তার ব্রিজ ভেঙে পড়ার ঘটনা। সাধন পাণ্ডে বললেন, ”পোস্তার ব্রিজটা হল, ভেজাল মালটাল দিল। ভেঙে পড়ে গেল ব্রিজটা। আমি উল্টোডাঙা থেকে একটা ব্রিজ বানাব। যেটা ১৫ মিনিটে সোজা হাওড়া চলে যাবে।
উল্টোডাঙা থেকে কাঁকুড়গাছি হয়ে। চিফ সেক্রেটারির সঙ্গে কথা বলেছি এই নিয়ে।” এদিকে সব শুনে-টুনে বিধায়ক পরেশ পালের বক্তব্য, ”সাধন পাণ্ডে ফাটকাবাজ। নিশ্চয়ই কোনও জায়গা থেকে আস্বাদ পেয়েছে। তাই দলে ঝামেলা ঝগড়া করে এখন পালাতে চাইছে। ওর কথায় দলের কোনো ক্ষতি হবে না। ও দলের কোনো ভালো কাজ দেখতে পারে না। ও হল চোখে আঙুল দাদা। একটা আস্ত ছাগল।”
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584