নিজস্ব সংবাদদাতা, ওয়েব ডেস্কঃ
চরমে পৌঁছেছে তিক্ততা, টাটা গ্রুপ আর মিস্ত্রি পরিবারের, যার ফলস্বরূপ আলাদা হতে চলেছে দুই গ্রুপ। অবশেষে মঙ্গলবার শাপুরজি পালোনজি গোষ্ঠী জানিয়ে দিল টাটা সন্সের সঙ্গে তাঁদের সাত দশকের সম্পর্ক শেষ হতে চলেছে।
কোম্পানির তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “শাপুরজি পালনজি এবং টাটার সম্পর্ক ৭০ বছরের পুরনো। পারস্পরিক আস্থা, বিশ্বাস ও বন্ধুত্বের কারণেই তা সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু আজ শাপুরজি পালনজি গ্রুপ সুপ্রিম কোর্টে জানিয়ে দিয়েছে, টাটার থেকে আলাদা হয়ে যাওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। নইলে এই যে মামলা মোকদ্দমা শুরু হয়েছে তা সকলেরই জীবিকা ও অর্থনীতির উপর প্রভাব ফেলতে পারে।”
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, বিচ্ছেদের কথা বলতে গিয়ে মিস্ত্রী পরিবারের হৃদয় ভারাক্রান্ত, কিন্তু এও ঠিক যে এর ফলে সকলের স্বার্থই সুরক্ষিত থাকতে পারে।
আরও পড়ুনঃ মহিলা পাইলটরাও এবার রাফাল চালাবেন
টাটা সন্সে শাপুরজি পালনজি গ্রুপের ১৮.৪ শতাংশ অংশীদারিত্ব রয়েছে। সেই পরিমাণ শেয়ার দুটি বিনিয়োগকারী সংস্থার মাধ্যমে ধরে রেখেছে মিস্ত্রী পরিবার। হয়তো সেই অংশীদারিত্ব এবার বিক্রি করে দেবেন তাঁরা।
টাটা ও মিস্ত্রী পরিবারের মধ্যে আইনি লড়াই শুরু হয় ২০১৬ সালের শেষের দিকে। অক্টোবর মাসে টাটা সন্সের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল সাইরাস মিস্ত্রীকে, সেই থেকেই দ্বন্দ্বের শুরু।
আরও পড়ুনঃ হর্ষবর্ধন লোধাকে অপসারণের পর ৮ শতাংশের বেশি শেয়ারপতন এমপি বিড়লার
শাপুরজি পালনজি গোষ্ঠীর বক্তব্য, মিস্ত্রীকে বোর্ড চেয়ারম্যান পদ থেকে সরানোর পর থেকে টাটা সন্স নিজেরাই নিজেদের ব্যবসার ক্ষতি করতে শুরু করে। যখন বোঝা গিয়েছিল যে টাটা স্টিলের বিদেশের কারখানার জন্য ক্ষতি হচ্ছে, তখন সেদিকে টাটা গোষ্ঠী নজর দেয়নি। ওই একটি কারখানার জন্য গত তিন বছরে অপারেশনাল লস এর পরিমাণ ১১ হাজার কোটি টাকা। বিমান পরিষেবার ব্যবসার জন্যও ক্ষতির পরিমাণ ক্রমশ বেড়েছে।
আরও পড়ুনঃ বিরোধীশূন্য রাজ্যসভায় বিল পাশ, অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের তালিকা থেকে বাদ চাল-আলু-পেঁয়াজ
শাপুরজির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এই সব কাজকর্মের জন্য গত তিন বছরে টাটা গোষ্ঠীভূক্ত কোম্পানিগুলির ঋণের পরিমান বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকা। একমাত্র টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস (টিসিএস) ছাড়া গত কোয়ার্টারে গ্রুপ কোম্পানিগুলির ১৪ হাজার কোটি ক্ষতি হয়েছে। এ জন্য ছোট শেয়ারহোল্ডারদের ক্ষতি হচ্ছে।”
টাটা সন্সে মিস্ত্রী পরিবারের যে শেয়ার রয়েছে সেই মূল্যে তারা বাজার থেকে টাকা তুলতে চাইছিল। তাতে আপত্তি জানিয়ে আদালতে গিয়েছিল টাটা সন্স। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ২৮ অক্টোবর অর্থাৎ পরবর্তী শুনানির দিন পর্যন্ত এ ধরনের কোনও পদক্ষেপ করতে পারবে না শাপুরজি পালনজি।
এদিন শাপুরজির তরফে বলা হয়েছে, করোনা প্যান্ডেমিক পরিস্থিতিতে ৬০ হাজার কর্মী ও ১ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিকের স্বার্থেই তারা টাকা তোলার চেষ্টা করা করেছিল। টাটা সন্স সেক্ষেত্রে যে ভাবে বাধা তৈরি করেছে তাতে টাটা সন্সের প্রতিহিংসামূলক আচরণই ক্রমশ স্পষ্ট হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দুই গোষ্ঠীর একযোগে ব্যবসা করা আর সম্ভব হয়ে উঠবে না।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584