সুদীপ পাল, বর্ধমানঃ
অরণ্য সুন্দরী ভাল্কি মাচান। শালপিয়ালের বনের মাঝে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তার স্বভাবজাত। নানা প্রজাতির গাছ-গাছালি আর সরল সাদাসিধে আদিবাসী নিয়ে ভাল্কির সংসার।
পুরুষদের মাদলের তাল, রমণীদের নৃত্য এ সংসারে নিত্যকর্ম।গোটা এলাকা জুড়ে রয়েছে গহন জঙ্গল। ভাল্কি মাচান পূর্ব বর্ধমানের একটি উল্লেখযোগ্য পর্যটন কেন্দ্র। প্রতি বছর স্থানীয় মানুষ ছাড়াও পিকনিক করতে বা ঘুরতে আসেন দুর্গাপুর, বোলপুর এমনকি বাঁকুড়া, কোলকাতা থেকেও।
কিন্তু সেই অরণ্য সুন্দরীর মন খারাপ কারণ ঐতিহাসিক এই পর্যটন কেন্দ্রে অবহেলিত সুউচ্চ ওয়াচ টাওয়ার ও ভাল্কি পৌঁছানোর রাস্তা। কথিত আছে, ভল্লুপদ রাজার নামানুসারে এই জায়গার নাম ভাল্কি। বর্তমান আউসগ্রাম ২ ব্লকের অমরারগড় ছিল এদের রাজধানী। এই ভাল্কি মাচানে রয়েছে সুউচ্চ টাওয়ার। কেন এই টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছিল তা নিয়ে মতের বিভিন্নতা রয়েছে। শোনা যায়, ঘনঘন বর্গী আক্রমণ হত এই এলাকায়। তাদের গতিবিধির নজর রাখার জন্য এই টাওয়ার তৈরি হয়।
অন্য মতে, সপ্তদশ শতকে বর্ধমানের মহারাজ বিজয়চাঁদের সময় এটি তৈরি হয়, অবসরে শিকার করবেন বলে। মাচা থেকেই নামকরণ হয় মাচান। পর্যটন কেন্দ্রের সুউচ্চ এই টাওয়ার আকর্ষণের অন্যতম প্রধান কারন। ওয়াচ টাওয়ারের নীচে রয়েছে একটি সু়ড়ঙ্গ। জনশ্রুতি, এটিই নাকি বঙ্কিমচন্দ্রের দুর্গেশনন্দিনীর সু়ড়ঙ্গ।
বর্তমানে টাওয়ারের ভাঙা অংশ থেকে জন্ম নিচ্ছে গাছ। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, টাওয়ারটির প্রতি প্রশাসনের নজর দেওয়া উচিৎ, নাহলে কয়েকবছর পর এই ঐতিহাসিক টাওয়ারের আর কোন চিহ্নই থাকবে না।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584